'হয়তো কোনোখানে দুজন একসঙ্গে কাজ করছে'

ক্যাথরিন মাসুদ
ক্যাথরিন মাসুদ

আজ চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ ও সিনেমাটোগ্রাফার মিশুক মুনীরের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১১ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় তাঁরা মারা যান। তাঁদের অসমাপ্ত কাজগুলো নিয়ে কথা বলেছেন নির্মাতা ক্যাথরিন মাসুদ।
তারেক মাসুদ মেমোরিয়াল ট্রাস্টের আগামী পরিকল্পনাগুলো কী?
দুটি বড় কাজ আছে আমাদের সামনে। একটি হলো চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের ওপর নির্মিত চলচ্চিত্র আদম সুরত-এর ডিভিডি প্রকাশ। বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সঙ্গে আমরা যৌথভাবে সেটি করছি। আরেকটি বড় প্রকাশনার কাজ আছে তারেক মাসুদের সাক্ষাৎকার ও বক্তৃতা নিয়ে। এটি সম্ভবত ডিসেম্বরে প্রকাশ করতে পারব। এটি বের হবে প্রথমা প্রকাশন থেকে।
এ ছাড়া আর কী কাজ হাতে আছে?
আরও কিছু কাজ আমরা প্রায় শেষ করে এনেছি। একটি হলো রানওয়ে চলচ্চিত্রটি তৈরির পেছনের গল্প নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র। ফরিদপুরের হাজরাহাতি গ্রামের ইতিহাস, জীবনযাত্রা নিয়ে ৪০ মিনিটের মতো একটি প্রামাণ্যচিত্রের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এর চিত্রধারণ হয়েছে ১৯৯১-৯২-৯৩ সালের দিকে, তারেক-মিশুকের সঙ্গে, যখন মুক্তির গান তৈরি হচ্ছিল। ভাষা আন্দোলন নিয়ে আরেকটি কাজ আমরা করছি, যেটি তারেকই শুরু করেছিল। আরেকটি বড় কাজ হচ্ছে তারেকের গ্রামে। ওর স্মৃতি ধরে রাখার কাজ সেটি। আমাদের সংগ্রহে যে বিভিন্ন দলিল আছে কাগজে, অডিও ও ভিডিও মাধ্যমে সেগুলো গোছানোর কাজটিও চলছে।
সেদিনের কথা কিছু বলবেন?
তারেক-মিশুক খুব আনন্দে ছিল সেদিন। কাগজের ফুল-এর লোকেশনে যেতে যেতে অনেক গল্প করছিলাম—ছোটবেলার গল্প, সুলতানের গল্প, শুটিংয়ের গল্প, পরবর্তী পরিকল্পনা নিয়ে গল্প। আমরা লোকেশন নিয়ে অনেক পরিকল্পনা করেছিলাম। ফেরার পথে এই হাসাহাসির মধ্যেই... হাসতে হাসতে ওরা চলে গেল। ওরা চলচ্চিত্র নিয়ে স্বপ্ন দেখত, চলচ্চিত্রের মধ্যে বসবাস করত। এবং চলচ্চিত্রের জন্যই তারা মারা গেছে। সৈনিকের একটি স্বপ্ন থাকে না যে যুদ্ধক্ষেত্রে মৃত্যুবরণ করার! তারা সিনেমার সৈনিক ছিল। সুতরাং এটি ছিল একটি সম্মানজনক মৃত্যু। হয়তো কোনো এক জায়গায় তারা দুজন একসঙ্গে আছে এবং কাজ করছে...
প্রণব ভৌমিক ও সারা মনামী হোসেন