আন্দোলনের চলচ্চিত্র নিয়ে ম্যুভিয়ানা

ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি আয়োজিত ‘আন্দোলনের চলচ্চিত্র উৎসব-২০১৪’ এর পোস্টার।
ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি আয়োজিত ‘আন্দোলনের চলচ্চিত্র উৎসব-২০১৪’ এর পোস্টার।

বাংলাদেশে গত এক যুগে ঘটে যাওয়া ছাত্র-শ্রমিক-কৃষক এবং শিল্পী-সংস্কৃতিকর্মীসহ জনতার নানা আন্দোলন-সংগ্রামের ওপর নির্মিত ১২টি প্রামাণ্য-চলচ্চিত্র নিয়ে শুরু হচ্ছে আন্দোলনের চলচ্চিত্র উৎসব-২০১৪। নিজেদের অষ্টম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ আয়োজন করছে ম্যুভিয়ানা। আগামীকাল শুক্রবার বিকাল পাঁচটায় শাহবাগের ছবির হাটে উদ্বোধন হবে দুই দিনব্যাপী এ চলচ্চিত্র আয়োজনের।

এ চলচ্চিত্র আয়োজনের উদ্বোধন করবেন প্রামাণ্য চলচ্চিত্রকার ও সমালোচক মানজারে হাসিন মুরাদ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন চলচ্চিত্র গবেষক অধ্যাপক ফাহমিদুল হক, চলচ্চিত্রকার ও সংস্কৃতিকর্মী জাঈদ আজিজ এবং সংস্কৃতিকর্মী ও সাংবাদিক আহমেদ মুনীরুদ্দিন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি বেলায়াত হোসেন মামুন। সংক্ষিপ্ত আলোচনার পর সন্ধ্যা ছয়টায় গত বছরের শাহবাগ আন্দোলন নিয়ে সাইফুল ওয়াদুদ হেলাল নির্মিত বাংলাদেশের হৃদয় প্রামাণ্য-চলচ্চিত্রটি দিয়ে শুরু হবে প্রদর্শনী।

‘আন্দোলনের চলচ্চিত্র’ শিরোনামের এ উৎসবের ছবিগুলোতে যেন মানুষের চিরন্তন ও বহুমুখী সংগ্রামের ছবিই মূর্ত হয়ে আছে। রাজধানী ঢাকা থেকে ফুলবাড়ি কিংবা কানসাট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাভারের পোশাক কারখানা কিংবা খালিশপুরের পাটকল, জীবন সবখানেই আশা-নিরাশা আর স্বপ্ন-সংগ্রামে বাঁধা। কিন্তু জীবন সব বাধা পেরিয়ে এগিয়ে যেতে চায়, মুখ থুবড়ে পড়লে আবারও উঠে দাঁড়ায়। ব্যক্তিরই হোক কিংবা সমষ্টির, মানুষের এই সংগ্রামী ছবিটা ধরে রাখতে চান শিল্পীরা। আর এ বিষয়ে শিল্পকলার নানা মাধ্যমের মধ্যে ডকুমেন্টারি ফিল্ম বা প্রামাণ্য-চলচ্চিত্রের আবেদন ও অবদান দুটোই বিশেষ। প্রামাণ্য চলচ্চিত্রের এই ধারা যে এখনো ফুরিয়ে যায়নি, তা-ই যেন আবারও আমাদের মনে করিয়ে দিতে চায় ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি।

এই আয়োজন সম্পর্কে বেলায়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা যে মানুষ এবং দেশের জন্য স্বপ্ন নিয়ে চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলন করি, সাম্প্রতিক এসব আন্দোলনে সেই দেশ সেই মানুষের মুখই স্পষ্ট হয়ে আছে। এ জন্যই অষ্টম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উৎসব করতে গিয়ে আন্দোলনের চলচ্চিত্রকে মূল ভাবনায় রেখেছি। আর মুক্ত পরিসরে চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর দীর্ঘদিনের ধারা ধরে রাখতেই ছবির হাটের মুক্ত পরিসরকে প্রদর্শনীর স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে।’

২১ নভেম্বর, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টায় প্রদর্শিত হবে

১. বাংলাদেশের হৃদয়, পরিচালনা: সাইফুল ওয়াদুদ হেলাল। (২০১৩ সালের শাহবাগ আন্দোলন নিয়ে নির্মিত)
২. শিরোনামহীন ২৩ জুলাই, পরিচালনা: মোল্লা সাগর। (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলে পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে গড়ে ওঠা আন্দোলন নিয়ে নির্মিত)
৩. মন্দ্রিত কানসাট, পরিচালনা: সাইফুল হক অমি। (কানসাটে বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলনের ওপর নির্মিত)
৪. সাভারের কান্না, পরিচালনা: তানভীর আলম সজিব। (সাভারের রানা প্লাজা ভবন ধসে পোশাকশ্রমিকদের প্রাণহানি এবং সংশ্লিষ্ট ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে নির্মিত)
৫. নো মার্সি, পরিচালনা: সাইফুল ইসলাম জার্নাল। (২০১৩ সালের শাহবাগ আন্দোলন নিয়ে নির্মিত)
৬. জয়েন দ্য ফাইট, পরিচালন: নুসরাত খান। (২০১৩ সালের শাহবাগ আন্দোলন নিয়ে নির্মিত)
৭. হেফাজতনামা, পরিচালনা: পলাশ রসুল। (২০১৩ সালের শাহবাগ আন্দোলন নিয়ে নির্মিত)

২২ নভেম্বর, শনিবার, সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টায় প্রদর্শিত হবে
১. সাইরেন, পরিচালনা: মোল্লা সাগর। (খালিশপুরের পাটকলশ্রমিকদের আন্দোলন নিয়ে নির্মিত)
২. ফুলবাড়ির সাত দিন, পরিচালনা: ফারজানা ববি ও জাঈদ আজিজ (ফুলবাড়িতে কয়লা খনির বিরুদ্ধে স্থানীয় কৃষক-জনতার আন্দোলন নিয়ে নির্মিত)
৩. অনিবার্য, পরিচালনা: বেলায়াত হোসেন মামুন। (ন্যায্য বেতনের দাবিতে পোশাকশ্রমিকদের আন্দোলন নিয়ে নির্মিত)
৪. অপরাজেয় বাংলা, পরিচালনা: সাইফুল ওয়াদুদ হেলাল। (অপরাজেয় বাংলা ভাস্কর্য নির্মাণের ইতিহাস এবং বিমানবন্দরের সামনে বাউল ভাস্কর্য ভঙোর প্রতিবাদে সংস্কৃতিকর্মীদের আন্দোলন নিয়ে নির্মিত)
৫. আমার প্রতিবাদ, পরিচালনা: রেশমী আহমেদ। (২০১৩ সালের শাহবাগ আন্দোলন নিয়ে নির্মিত)