গানে-পাঠে রবীন্দ্র স্মরণানুষ্ঠান

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে গতকাল সংগীত পরিবেশন করেন ছায়ানটের শিল্পীরা ষ ছবি: প্রথম আলো
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে গতকাল সংগীত পরিবেশন করেন ছায়ানটের শিল্পীরা ষ ছবি: প্রথম আলো

গান আর রচনা থেকে পাঠের মনোজ্ঞ আয়োজনে কবিগুরুর স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল ছায়ানট। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিন সন্ধ্যায় ধানমন্ডির ছায়ানট মিলনায়তনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণবার্ষিকী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল সম্মেলক কণ্ঠে ‘আঁধার অম্বরে প্রচণ্ড ডম্বরু’ গানটির পরিবেশনা দিয়ে। এরপর ছিল একক ও সম্মেলক গান, ফাঁকে ফাঁকে কবিগুরুর রচনা থেকে পাঠ।
পার্থ প্রতীম রায় গেয়ে শোনান ‘আমার দিন ফুরালো’, শুক্লা পাল পরিবেশন করেন ‘কিছু বলব ব’লে এসেছিলেম’, সেমন্তী মঞ্জরী গেয়েছেন ‘কখন বাদল-ছোঁওয়া লেগে’। পাঠ পর্বে অংশ নেন ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় ও মাহ্মুদা আখতার। ‘বাদল-দিনের প্রথম কদম ফুল’ পরিবেশন করেন দীপ্তি দাস, সুতপা সাহা গেয়েছেন ‘অনেক কথা বলেছিলেম’, নাঈমা ইসলাম গেয়েছেন ‘আজি তোমায় আবার চাই শুনাবারে’।
একক কণ্ঠের শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন বিক্রম দাস, মমি মঞ্জরী চৌধুরী, মহুয়া মঞ্জরী, দীপাঞ্জন মুখার্জি, বৈশাখী বড়ুয়া, উম্মুল ওয়ারা বিনেত নাইম, মাকছুরা আখতার, সুকান্ত চক্রবর্তী, অভয়া দত্ত প্রমুখ।
সম্মেলক গানগুলোর মধ্যে ছিল ‘ধরণীর গগনের মিলনের ছন্দে’, ‘মোর ভাবনারে কি হাওয়ায়’ ও ‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’। জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।
সূফী মোতাহার হোসেন পুরস্কার বিতরণ
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেছেন, কবি সূফী মোতাহার হোসেনকে এ প্রজন্মের কাছে পরিচিত করে তোলা প্রয়োজন। সনেট রচনায় তিনি এ দেশে বিশেষ সিদ্ধি লাভ করেছিলেন। কিন্তু তাঁর স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্যোগ যথাযথ হচ্ছে না।
গতকাল শুক্রবার কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের সেমিনার কক্ষে সূফী মোতাহার হোসেন সাহিত্য পুরস্কার ২০১১-১৩ বিতরণী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আনিসুজ্জামান এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে সূফী মোতাহার হোসেন সাহিত্য পরিষদ।
অনুষ্ঠানে কবি সূফী মোতাহার হোসেন রচিত নির্বাচিত সনেট গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এই গ্রন্থে কিছু তথ্যগত ভুল থাকায় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান সেটি আয়োজকদের দৃষ্টিগোচর করে বলেন, বইয়ে তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও সতর্ক থাকা উচিত।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসনবিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। সাহিত্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য অনুষ্ঠানে ৩৩ জনকে পুরস্কার দেওয়া হয়।
পাঁচ কবির গ্রন্থ আলোচনা ও কবিতা পাঠ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার মিলনায়তনে গতকাল শুক্রবার বিকেলে ছিল পাঁচ কবির গ্রন্থ আলোচনা ও কবিতা পাঠের অনুষ্ঠান। সাহিত্যের ছোট পত্রিকা খড়িমাটি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে সোহেল হাসান গালিবের রক্তমেমোরেন্ডাম, কাজী নাসির মামুনের অশ্রুপার্বণ, তুষার কবিরের কুহক বেহালা, চন্দন চৌধুরীর হাসির দেবতা ও ফেরদৌস মাহমুদের ছাতিম গাছের গান কবিতার বইয়ের ওপর আলোচন হয়। অনুষ্ঠানে কবিরা নিজ নিজ কবিতা পাঠ করেন।
আলোচকেরা বলেন, কবিতার শক্তি মনে মনে ছড়িয়ে পড়ে। এ শক্তি জগতের সুর ও সব চিন্তাকে সমৃদ্ধ করে। অনুষ্ঠানের আলোচক ছিলেন চঞ্চল আশরাফ, সরকার মাসুদ, শোয়াইব জিবরান, জেনিস মাহমুন ও কুমার চক্রবর্তী।
রঙের মূর্ছনা
ঢাকা আর্ট সেন্টারে গতকাল শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে শিল্পী রহিমা আফরোজের ‘রঙের মূর্ছনা’ শীর্ষক প্রথম একক শিল্পকর্ম প্রদর্শনী। বিকেলে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন শিল্পীর মা আনোয়ারা বেগম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট শিল্পী মনিরুল ইসলাম ও অধ্যাপক সামসুল ওয়ারেস। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ইব্রাহীম খালেদ।
প্রদর্শনীতে শিল্পকর্ম রয়েছে ৩৩টি। এর মধ্যে সাতটি ছাপচিত্র, বাকিগুলো অ্যাক্রেলিকে করা। প্রধানত বিমূর্ত ধারায় কাজ করেছেন তিনি। রহিমা আফরোজ ইউডার চারুকলা বিভাগ থেকে এমএফএ সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে স্বাধীনভাবে শিল্পচর্চা করছেন। প্রদর্শনীটি চলবে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত। খোলা থাকবে প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত।