'বসন্ত এসে গেছে...'

ফেব্রুয়ারির বুকে ফাগুনের ডাক শুনতে পাচ্ছেন? না পেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আসুন। রাস্তার দুধারের আমগাছে মুকুল ধরেছে। কুহু ডাক না শুনতে পেলেও ফার্মেসি অনুষদের বাগানে মিলবে কোকিলের দেখা। পুরোনো পাতার ফাঁকে ফাঁকে নতুন পাতা, আর তার মধ্যে মৃদু হিমেল হাওয়া। রবীন্দ্রনাথ কত আগে লিখে গেছেন, ‘নব বসন্তে নব আনন্দ, উৎসব নব...’।

ফেব্রুয়ারি মানেই আমাদের কাছে একুশের বইমেলা। শুধু কি বই মেলা? টিএসসি থেকে এগোতে থাকলে কত কিছুর দেখাই তো মেলে। এক বিশাল কর্মযজ্ঞ যেন!
ধরুন গতকালের কথাই। পড়ন্ত বিকেল। সূর্যটা টুপ করে ডুব দেওয়ার অপেক্ষায়। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে একটু পর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের একুশের অনুষ্ঠান শুরু হবে। মূল বেিদতে আয়োজন। ছিল একক ও দলীয় পরিবেশনায় নাচ ও গান। ছিল মঞ্চনাটক, পথনাটকও।
এরপরের গন্তব্য বইমেলা। বাংলা একাডেমি আয়োজিত বইমেলার মূল পরিসর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢুকে তেমন িভড় দেখা গেল না। বইমেলা তখন জমছে কেবল। যাঁরা ছিলেন, তাঁদের মধ্যে তরুণদের উপস্থিতিই বেশি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তাসনিম জাবেদ বললেন, ‘বইমেলায় বই কিনি না কিনি, প্রতিদিনই ঘুরতে আসি। আর এখন তালিকা করছি। বাসা থেকে বই কেনার জন্য দুই হাজার টাকা এলেই আর দেরি করব না!’
আর প্রেমিকাকে বই উপহার দিতে তাঁর রুচিমতো বই খুঁজছিলেন বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত নজরুল ইসলাম। সদ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়েছেন। পয়লা ফাল্গুন আর ভালোবাসা দিবসে একটা বড় সময় কাটাবেন বইমেলায়, বললেন তিনি।
বইমেলা থেকে বেরিয়ে আসা হলো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্ত মঞ্চে। এখানে চলছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আয়োজনের নবম দিন ছিল কাল। এখানেও নিয়মিত পরিবেশিত হচ্ছে নাচ, গান, অভিনয়। দর্শকসারিতে অনেক মানুষ। তাঁদের মাঝে এসে ফেরি করে বিক্রি হচ্ছে পিঠা, বাদাম, চানাচুর, লাল গোলাপ।
পয়লা ফাল্গুন আসার আগেই প্রকৃতি জানান দিচ্ছে, ‘বসন্ত এসে গেছে...’। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটিও ছিল ফাগুনের একটি দিন, আটই ফাল্গুন। মনের আর মুখের ভালোবাসার সন্ধিক্ষণে এ সময়টায় একটু ঘুরেই আসুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।