রুনাকে নিয়ে

রুনা লায়লা
রুনা লায়লা
গুলাম আলী, রুনা লায়লা ও হরিহরণ
গুলাম আলী, রুনা লায়লা ও হরিহরণ

হরিহরণ
এখন পর্যন্ত আমার দেখা সেরা শিল্পীর নাম রুনা লায়লা। তিনি অসাধারণ, অতুলনীয়—তাঁর তুলনা আসলে তিনি নিজেই। মঞ্চে লাইট, সাউন্ডসহ প্রযুক্তির অনেক খেলা থাকে। থাকে নানা বাদ্যযন্ত্রের ঝংকার। এত সবের মাঝেও রুনা লায়লা যখন মঞ্চে থাকেন, তখন তিনি হয়ে ওঠেন মঞ্চের রানী। তিনি আসলে সত্যিকারের গানের রানী। শিল্পী হিসেবে রুনা যেমন অসাধারণ, মানুষ হিসেবেও অতুলনীয়। তাঁর সঙ্গে গল্প করা বেশ আকর্ষণীয়। অসাধারণ সব কথা বলে পুরো জায়গা মাতিয়ে রাখতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। আমরা একসঙ্গে বেশ কিছু কাজ করেছি। সংগীতজীবনের ৫০ বছর পূর্তির এই সময় তাঁকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। তাঁর সংগীতজীবনের আরও সমৃদ্ধি কামনা করছি।

কুমার শানু
আমি ছোটবেলা থেকেই রুনা লায়লার গান শুনছি। তিনি অসাধারণ একজন গায়িকা। তাঁর কণ্ঠের মাধুর্য ও গায়কির মধ্য দিয়ে বাংলা গানে একটা নতুন অধ্যায় শুরু হয়। বাংলা লোকগানকে তিনি সবার সামনে নিয়ে আসেন। তাঁর ‘সাধের লাউ’, ‘বন্ধু তিন দিন’—এসব গান তো মানুষের মাঝে অন্য রকম এক জোয়ার সৃষ্টি করে। রুনা লায়লা এমন একজন শিল্পী যে লোকগান থেকে শুরু করে পপ, সব ধরনের গান গেয়েছেন। আমি সব সময় তাঁর ভক্ত। আমাকে তিনি ব্যক্তিগতভাবেও চেনেন। ভালোবাসেন। আমরা ভালো বন্ধু। আমাদের যেমন লতা মুঙ্গেশকর ও আশা ভোঁসলে আছেন, তার পরই আছেন রুনা লায়লা। এটা সত্যি সাংঘাতিক ব্যাপার। তাঁর কণ্ঠ সত্যিই মুগ্ধ করার মতো। তাঁর কাছ থেকে আরও ভালো ভালো গান আমরা চাই।

অালম খান ও সাবিনা ইয়াসমীনের সঙ্গে
অালম খান ও সাবিনা ইয়াসমীনের সঙ্গে

সাবিনা ইয়াসমীন
একজন শিল্পীর পক্ষে ৫০ বছর পার করাটা সত্যিই অনেক বেশি আনন্দের। এটা সবাই পারে না। রুনা লায়লার মতো শিল্পীই পারেন শিল্পীজীবনের ৫০ বছর পার করতে। এখনো তিনি গান গেয়েই চলছেন। সহশিল্পী হিসেবে, এটা আমার জন্য অনেক আনন্দের ও গর্বের। রুনা লায়লার মতো শিল্পীরা যুগে যুগে আসেন। তাঁর তুলনা তিনি নিজেই। মানুষ হিসেবে তাঁকে অসাধারণ মনে হয়। তাঁকে আমার কাছে ভালো এবং উঁচু মনের মানুষ বলে মনে হয়েছে। তিনি খুব মজার মানুষও বটে। খুব মাতিয়ে রাখতে পারেন। আমরা দুজন একসঙ্গে কয়েকটি কাজ করেছি। তা হাতেগোনা। চলচ্চিত্রে তুমি বড় ভাগ্যবতী ছবিতে একটি গান করেছি। তাঁকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন।

আলাউদ্দীন আলী
রুনা লায়লা আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একজন শিল্পী। রুনা লায়লার মতো ভালো শিল্পী পেয়েছি বলেই তো আমার সুর করা অনেক ভালো ভালো গান টিকে আছে। গান তো শুধু সুর আর কথার ওপর টেকে না, গানটা ভালো গাইতে হয়। আমি এটা সব সময় মনে করি ভালো কণ্ঠশিল্পী দরকার, ভালো বাণী আর ভালো সুর তিনটাই দরকার। রুনা লায়লার সঙ্গে কাজ করতে পারাটা আমার নিজেরও সৌভাগ্য বলে মনে করি। রুনা লায়লা যখন বাংলাদেশে আসে, তখন ভারত থেকে বলা হয়েছিল, তারা ফারাক্কার সব পানি দিয়ে দেবে, আর আমরা যেন রুনা লায়লাকে তাদের দিয়ে দিই! তারা সংগীতের মর্যাদা বুঝে তাই এমন কথা বলতে পেরেছে। এ কথার মধ্য দিয়ে বোঝা যায়, রুনা লায়লার তুলনা তিনি নিজেই।

আলম খান
সত্যিকারের সংগীতশিল্পী যাঁকে বলে, তাঁর প্রথম ও প্রধান উদাহরণ হলেন রুনা লায়লা। আমার জীবনে আমি যত শিল্পীকে দিয়ে গান করিয়েছি, তাঁদের মধ্যে গানের ব্যাপারে রুনাকে যেভাবে চেয়েছি, সেভাবেই পেয়েছি। গানের ব্যাপারে তাঁর ভালোবাসা তাঁকে আজকের পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। স্টুডিওতে আসতে যদি কোনো দিন দুই মিনিট দেরি হতো, সঙ্গে সঙ্গে দুঃখ প্রকাশ করতেন। এত বড় মাপের শিল্পী হওয়া সত্ত্বেও নিজের অনাকাঙ্ক্ষিত দেরির জন্য তাঁর এই দুঃখ প্রকাশের ব্যাপারটি আমার খুব ভালো লাগত। এত সুন্দর সুরে তিনি গান করেন, যা শুনে মুগ্ধ না হয়ে পারা যায় না। এটা একজন শিল্পীর সবচেয়ে বড় গুণ। তাঁর কণ্ঠের দ্বিতীয় কোনো কপি পৃথিবীতে আর নেই। তাল-লয় সবকিছুতে তাঁর রয়েছে অসাধারণ দখল। তাঁর জন্য আমার অনেক দোয়া। তাঁর সঙ্গে আমার সম্পর্ক আত্মীয়ের চেয়েও বেশি।