'চন্দ্রাবতী কথা'র মহড়াকক্ষ থেকে

চন্দ্রাবতী কথা চলচ্চিত্রের মহড়ার দৃশ্যে (বাঁ থেকে) নওশাবা, গাজী রাকায়েত, দোয়েল ও বর্ষণ  l ছবি: মনিরুল আলম
চন্দ্রাবতী কথা চলচ্চিত্রের মহড়ার দৃশ্যে (বাঁ থেকে) নওশাবা, গাজী রাকায়েত, দোয়েল ও বর্ষণ l ছবি: মনিরুল আলম

দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকতেই কানে এল গাজী রাকায়েতের ভরাট কণ্ঠ, ‘আমরার মাথার কিরা কইন্যা, খাওন ফালাইতাছো কেন! আরাম খানা খাইয়া পালঙ্ক উপরে উইডা বহ! হুন কইন্যা, আমরার কতা যদি হুন; তয় পিত্থিমির সুখ আইন্যা দিবাম তোমারে...।’
গাজী রাকায়েতের কথা শুনে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায় সোনাই। রাকায়েতের মাথায় রাজার মতো পাগড়ি। পরনে সাদা পাঞ্জাবি ও পায়জামা। চরিত্রের নাম দেওয়ান। তাঁর পাশে লাল পাড় সাদা শাড়ি পরে বসা সোনাই। সোনাই মানে সেই ‘কইন্যা’ আসলে নওশাবা। তাঁর উদ্দেশেই গাজী রাকায়েতের সংলাপ। ঠিক তাঁর পাশেই খোলা চুলে দাঁড়িয়ে আছেন দোয়েল। পরনের শাড়ি এবং হাতের ঝুড়িই প্রমাণ করে দেয় চরিত্রটি এ সময়ের নয়, ষোড়শ শতকের। দোয়েলের চরিত্রের নাম চন্দ্রাবতী। তিনি আসলে কবি। এমন সব চরিত্র আর চরিত্রের রসায়ন নিয়েই নির্মিত হবে চন্দ্রাবতী কথা। সরকারি অনুদান ও বেঙ্গল ক্রিয়েশনসের সহযোগিতায় চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করছেন এন রাশেদ চৌধুরী। আগামী ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে কিশোরগঞ্জে শুরু হবে শুটিং।
এর আগে রাজধানীর সোনারগাঁও রোডের একটি বাড়িতে চলছে চলচ্চিত্রটির মহড়া। তিনতলার এক পাশের পুরোটাই আসলে মহড়াকক্ষ। মহড়াকক্ষজুড়ে অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলীদের নানা ধরনের কর্মকাণ্ড। প্রতিটি দৃশ্যের মহড়া হচ্ছে নির্দিষ্ট পোশাক, প্রপসসহ। প্রতিদিন নিয়ম করে। পুরোদস্তুর সিনেমার আয়োজন বলতে যা বোঝায় আরকি।
পরিচালক এন রাশেদ চৌধুরী বললেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরেই মহড়া হচ্ছে। আমরা লোকেশনে গিয়ে আবারও মহড়া করব। যেহেতু গল্পটা ষোড়শ শতাব্দীর, আমরা চেষ্টা করছি নিখুঁতভাবে তৈরি করতে। আমি পাঁচ বছর ধরে ছবিটি নিয়ে কাজ করছি।’
চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য এমন গল্প বাছাই প্রসঙ্গেও কথা বলেন পরিচালক। ‘চন্দ্রাবতী কথা গল্পটি “মৈমনসিংহ গীতিকা” থেকে নেওয়া। এমন গল্প মানুষের খুব চেনা। লোকজ সাহিত্য নিয়ে আমাদের কাজ করা দরকার বলেই গল্পটি বাছাই করেছি।’