সমরেশ বসু সাহিত্য স্মৃতি পদক পেলেন সাত গুণী

জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে সমরেশ বসু সাহিত্য স্মৃতি পদক পাওয়া গুণীদের সঙ্গে অতিথিরা। ছবি: প্রথম আলো
জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে সমরেশ বসু সাহিত্য স্মৃতি পদক পাওয়া গুণীদের সঙ্গে অতিথিরা। ছবি: প্রথম আলো

সমরেশ বসু ছিলেন বহুমাত্রিক লেখক। উপন্যাস, গল্প, ভ্রমণ নিয়ে তাঁর রচনার পরিমাণ বিপুল। বিচিত্র স্বাদের গল্প-উপন্যাসের জন্য তাঁর তুলনা মেলা ভার। পশ্চিমবঙ্গের সাহিত্য যে দশটা উপন্যাসের ওপর দাঁড়িয়ে আছে, তার মধ্যে সমরেশ বসুর ‘গঙ্গা’ একটি। তাঁর অসংখ্য ছোটগল্প বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে। তিনি তাঁর রচনায় বাঙালি মধ্যবিত্তের জীবনাচার সুচারুভাবে তুলে ধরেছেন। সমরেশ বসুকে ভুলে যাওয়া বাংলা সাহিত্যের পক্ষে সম্ভব নয়।
নাট্যসভার ৪০ বছর পূর্তিতে উপলক্ষে শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সমরেশ বসুকে স্মরণ করে এসব মন্তব্য করেন বক্তারা। এই অনুষ্ঠানে দেওয়া হয় সমরেশ বসু সাহিত্য স্মৃতি পদক।
এবার এই পদক পেয়েছেন: সাংবাদিকতায় গোলাম সারওয়ার, উপন্যাসে রাহাত খান ও ইমদাদুল হক মিলন, ছোটগল্পে আমজাদ হোসেন, অভিনয়ে মামুনুর রশীদ, সাংবাদিকতায় রেজানুর রহমান এবং ভ্রমণ-সাহিত্যে শাকুর মজিদ।
অনুষ্ঠানে এই গুণীদের হাতে পদক তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন কবি ও সংসদ সদস্য কাজী রোজী, অনুপম প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মিলন কান্তি নাথ ও প্রকাশক শেখ মো. আজহার হোসেন। সাবেক তথ্যসচিব সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন নাট্যসভার চেয়ারম্যান শহীদুল হক খান। পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি মামুনুর রশীদ। 

আনিসুজ্জামান বলেন, ‘আজ যাঁরা সম্মানিত হলেন, তাঁরা সবাই সম্মানের যোগ্য। বাংলা সাহিত্যকে তাঁরা সমৃদ্ধ করেছেন। যাঁর নামে এ পুরস্কার, তিনি তাঁর ‘আদাব’ গল্পের জন্য বিখ্যাত। এক সময় তাঁর গল্প পড়ে আমরা মুগ্ধ হয়েছি। তাঁর নামে যাঁদের সম্মানিত করা হলো, আমার বিশ্বাস তাঁরা সম্মানিত বোধ করবেন।’
সদ্য প্রয়াত কথাসাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আনিসুজ্জামান বলেন, বাংলা সাহিত্যে তাঁর দৃষ্টান্ত এত গভীর যে, তাঁকে শ্রদ্ধা করতে হবে, স্মরণ করতে হবে।
কথাসাহিত্যিক সমরেশ বসু ১৯২৪ সালের ১১ ডিসেম্বর তৎ​কালীন ঢাকা জেলার মুন্সিগঞ্জ মহকুমার অন্তর্গত রাজনগর গ্রামে পৈতৃক বাস্তু ভিটায় জন্মগ্রহণ করেন। কালকূট ও ভ্রমর তাঁর ছদ্মনাম। তাঁর রচনায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, শ্রমজীবী মানুষের জীবনসহ বিভিন্ন অভিজ্ঞতার সুনিপুণ বর্ণনা ফুটে ওঠে। বিচিত্র বিষয় এবং আঙ্গিকে নিত্য ও আমৃত্যু ক্রিয়াশীল ক্ষণজন্মা লেখক সমরেশ বসু ১৯৮৮ সালের ১২ মার্চ মারা যান।