ছবির খুব ব্যয়বহুল গানের দৃশ্য কোনটি?

গান আর নাচের জন্য বলিউডের ছবি সারা বিশ্বে জনপ্রিয়। ছবির সাফল্যের ক্ষেত্রে গানের ভূমিকা অনেকখানি। তাই বলিউডে গানের দৃশ্য যত্নসহকারে বানানো হয়। অনেক সময় চার মিনিটের একটা গানের জন্য কোটি কোটি টাকার বাজেট রাখা হয়। বিপুল অমৃতলাল শাহর ছবি ‘নমস্তে ইংল্যান্ড’-এ একটি গান আছে, যার বাজেট সত্যি অবাক করার মতো। এই গানের জন্য যা খরচ করা হয়েছে, তা দিয়ে একটি ছোট ছবি অনায়াসে বানানো যাবে। এই ছবির ‘তু মেরি ম্যায় তেরা’ গানটি লিখেছেন জাভেদ আখতার। ‘নমস্তে ইংল্যান্ড’ ছবির এই গানের মধ্য দিয়ে অর্জুন কাপুর ও পরিণীতি চোপড়ার একটি রোমান্টিক সফর তুলে ধরা হবে। তাঁদের সফর শুরু হবে পাঞ্জাবে এবং শেষ হবে লন্ডনে। এই ব্যয়বহুল গানের শুটিং করা হচ্ছে ১৮টি লোকেশনে। গানটির কিছু দৃশ্য সমুদ্রের মাঝেও শুট করা হবে। খবর অনুযায়ী, ‘তু মেরি ম্যায় তেরা’ গানের বাজেট সাড়ে পাঁচ কোটি রুপি। এ ব্যাপারে বিপুল শাহর বক্তব্য, তাঁর ক্যারিয়ারে এটা সবচেয়ে দামি গান হতে চলেছে। তবে গানটির গায়ক-গায়িকা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ‘নমস্তে ইংল্যান্ড’ ছবির এই গান বলিউডের সবচেয়ে দামি গানের তালিকায় চলে এসেছে। এ ছাড়া বলিউডে আরও গান আছে, যার শুটিংয়ের জন্য কোটি কোটি রুপি খরচ করা হয়েছে। এমনকি বিপুল শাহর এই ছবির গানের থেকেও বলিউডে দামি গান বানানো হয়েছে।

‘বস’ ছবির ‘পার্টি অল নাইট’ গানের দৃশ্যে সোনাক্ষী সিনহা ও অক্ষয় কুমার
‘বস’ ছবির ‘পার্টি অল নাইট’ গানের দৃশ্যে সোনাক্ষী সিনহা ও অক্ষয় কুমার

‘পার্টি অল নাইট’ (বস)
‘বস’ ছবির ‘পার্টি অল নাইট’ গানটিকে বলিউডের সবচেয়ে দামি গান বলা হচ্ছে। এই গানের দৃশ্যটি শুট করতে ছয় কোটি রুপি খরচ হয়। অক্ষয় কুমার ও সোনাক্ষী সিনহা অভিনীত এই ছবির গানের দৃশ্য ব্যাংককের এক ক্লাবে শুট করা হয়। ‘পার্টি অল নাইট’ গানে ৬০০ বিদেশি মডেলকে দেখা যায়। গানটিতে কণ্ঠ দেন হানি সিং। ‘বস’ ছবিটি বক্স অফিসে চলেনি। তবে এই ছবির দামি গানটি ‘পার্টি অ্যান্থম’ হয়ে গেছে।

‘ধুম থ্রি’ ছবির ‘মলংগ’ গানে খুব ক্যাটরিনা কাইফ ও আমির খান
‘ধুম থ্রি’ ছবির ‘মলংগ’ গানে খুব ক্যাটরিনা কাইফ ও আমির খান

‘মলংগ’ (ধুম থ্রি)
‘ধুম থ্রি’ ছবির ‘মলংগ’ গানটি খুব জনপ্রিয় হয়। গানটিতে আমির খান আর ক্যাটরিনা কাইফকে উড়ন্ত অ্যারোবিক্স করতে দেখা যায়। ‘মলংগ’ গানটি শুট করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২০০ জিমন্যাস্টকে আনা হয়। ২০ দিনের কঠিন অনুশীলনের পর গানের দৃশ্য শুট করা হয়। এই গানের জন্য প্রযোজককে পাঁচ কোটি রুপি খরচ করতে হয়।

‘গোলমাল টু’ ছবির ‘ঠা কর কে’ গানের দৃশ্য
‘গোলমাল টু’ ছবির ‘ঠা কর কে’ গানের দৃশ্য

‘ঠা কর কে’ (গোলমাল টু)
বলিউডে অনেকেই মজা করে বলেন, রোহিত শেঠির ছবির বড় অংশ খরচ হয় গাড়ির পেছনে। কারণ, রোহিতের ছবিতে দেখা যায় হাওয়াতে গাড়ি উড়তে। কিন্তু রোহিত গানের জন্যও খরচ করেন। ‘গোলমাল টু’ ছবির ‘ঠা কর কে’ গানটি বানাতে তিন কোটি রুপি খরচ হয়েছে। এই গানে ১০টি বিলাসবহুল গাড়ি, ১৮০ জন ফাইটার্স এবং এক হাজার ব্যাকগ্রাউন্ড নাচিয়ে ছিল। গানটির শুটিং হয়েছে ১২ দিন।

‘হাম্পটি শর্মা কি দুলহানিয়া’ ছবির ‘স্যাটারডে স্যাটারডে’ গানের দৃশ্যে আলিয়া ভাট
‘হাম্পটি শর্মা কি দুলহানিয়া’ ছবির ‘স্যাটারডে স্যাটারডে’ গানের দৃশ্যে আলিয়া ভাট

‘স্যাটারডে স্যাটারডে’ (হাম্পটি শর্মা কি দুলহানিয়া)
‘হাম্পটি শর্মা কি দুলহানিয়া’ ছবির ‘স্যাটারডে স্যাটারডে’ গানটি বলিউডের ব্যয়বহুল গানের তালিকায় আছে। আলিয়া ভাট এবং বরণ ধাওয়ানের ওপর দৃশ্যায়িত এই গানের জন্য তিন কোটি রুপি খরচ হয়। বাদশাহ, আকৃতি কাক্কর ও ইনদীপ বকশি গানটি গেয়েছেন।

‘তেবর’ ছবির ‘রাধা নাচেগি’ গানের দৃশ্যে সোনাক্ষী সিনহা
‘তেবর’ ছবির ‘রাধা নাচেগি’ গানের দৃশ্যে সোনাক্ষী সিনহা

‘রাধা নাচেগি’ (তেবর)
বনি কাপুর ও সঞ্জয় কাপুরের প্রযোজনায় ‘তেবর’ ছবিতে আছেন অর্জুন কাপুর ও সোনাক্ষী সিনহা। এই ছবির ‘রাধা নাচেগি’ গানটি বানাতে আড়াই কোটি রুপি খরচ হয়েছে। শোনা গেছে, গানেতে সোনাক্ষী যে লেহেঙ্গা পরেছিলেন, তার দাম ৭৫ লাখ রুপি।

‘হমশকলস’ ছবির ‘পিয়া কে বাজার মে’ গানের দৃশ্য
‘হমশকলস’ ছবির ‘পিয়া কে বাজার মে’ গানের দৃশ্য

‘পিয়া কে বাজার মে’ (হমশকলস)
‘হমশকলস’ ছবির ‘পিয়া কে বাজার মে’ গানের জন্য দুই কোটি রুপি খরচ হয়েছে। এই গানে আছেন বিপাশা বসু, তামান্না ভাটিয়া, এশা গুপ্তা, সাইফ আলী খান, রীতেশ দেশমুখ ও রাম কাপুর।

‘মুঘল ই আজম’ ছবির ‘প্যায়ার কিয়া তো ডরনা ক্যায়া’ গানের দৃশ্য
‘মুঘল ই আজম’ ছবির ‘প্যায়ার কিয়া তো ডরনা ক্যায়া’ গানের দৃশ্য

‘প্যায়ার কিয়া তো ডরনা ক্যায়া’ (মুঘল ই আজম)
ব্যয়বহুল গানের প্রসঙ্গে ‘মুঘল ই আজম’ ছবির ‘প্যায়ার কিয়া তো ডরনা ক্যায়া’র সঙ্গে মোকাবিলা হিন্দি ছবির আর কোনো গান করতে পারবে না। ১৯৬০ সালে মুক্তি পাওয়া জনপ্রিয় এই ছবি বানাতে ওই সময় প্রায় দেড় কোটি রুপি খরচ হয়। আর শুধু ‘প্যায়ার কিয়া তো ডরনা ক্যায়া’ গানটি বানাতে তখন ১৫ লাখ রুপি খরচ হয়। তার মানে ছবিটির মোট বাজেটের ১০ শতাংশ গানটির শুটিংয়ে খরচ হয়েছে। আজকের হিসাবে দেখলে ‘প্যায়ার কিয়া তো ডরনা ক্যায়া’ বানাতে ছয় কোটিরও বেশি খরচ হয়েছে।

‘পদ্মাবত’ ছবির ‘ঘুমর’ গানের দৃশ্যে দীপিকা পাড়ুকোন
‘পদ্মাবত’ ছবির ‘ঘুমর’ গানের দৃশ্যে দীপিকা পাড়ুকোন

সঞ্জয় লীলা বানসালির ছবির গান
সঞ্জয় লীলা বানসালির ‘দেবদাস’ থেকে ‘পদ্মাবত’ পর্যন্ত সব ছবিতেই গান গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ। ‘দেবদাস’ ছবির ‘ডোলা রে ডোলা’ গানটি দৃশ্যায়িত করতে আড়াই কোটি রুপি খরচ করা হয়। শোনা গেছে, প্রায় একই পরিমাণ অর্থ বানসালির ‘বাজিরাও মাস্তানি’ ছবির ‘দিওয়ানি মাস্তানি’ গান এবং ‘পদ্মাবত’ ছবির ‘ঘুমর’ গানের জন্য ব্যয় করা হয়েছে।