দেহরক্ষীর ছেলেকে ছবির নায়ক

শেরা ও সালমান খান
শেরা ও সালমান খান

সালমান খান তাঁর ব্যক্তিগত দেহরক্ষী গুরমিত সিং জলির ছেলে টাইগারকে নতুন ছবির নায়ক করতে যাচ্ছেন। গুরমিত সিং জলি ‘শেরা’ নামেই বেশি পরিচিত। দীর্ঘ ৩০ বছর তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে এই দায়িত্ব পালন করছেন। এবার দেহরক্ষীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর পালা। বোম্বে টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সালমান খান বলেন, ‘শেরার ছেলে টাইগার এখন প্রস্তুত। ছেলেটি এরই মধ্যে প্রযোজক আর পরিচালকের নজর কেড়েছে। শেরার বলেছে, তার ছেলের জন্য কোন চিত্রনাট্য সবচেয়ে ভালো হবে, তা নাকি আমিই ভালো বুঝব। তাই আমি এখন টাইগারের জন্য চিত্রনাট্য বাছাই করছি। এখনো ওর জন্য আরও ভালো কিছু খুঁজছি।’

টাইগারের জন্মের পর তাঁকে কোলে নিয়ে সালমান খান বলেছিলেন, ‘ও একদিন হিরো হবে। আমি ওকে হিরো বানাব।’ শেরা তখন ভেবেছিলেন, সালমান হয়তো তাঁর ছেলেকে কোলে নিয়ে শুধু কথার কথা বলেছেন। কিন্তু সালমান খান তাঁর সেই প্রতিশ্রুতির কথা ভোলেননি। এদিকে টাইগার বড় হচ্ছে। এবার সালমান নিজেই তাঁকে নিয়ে শেরার সঙ্গে আলোচনা করেছেন। সালমানের ব্যস্ততা দেখে মনে হচ্ছে, শেরার ছেলে টাইগারের বলিউডে পা রাখা এখন শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র।

শেরা ও তাঁর ছেলে টাইগার
শেরা ও তাঁর ছেলে টাইগার

বলিউডের ভাইজানের ভক্তরা তাঁর দেহরক্ষী শেরাকে ভালোভাবেই চেনেন। শেরা সব সময় ছায়ার মতো অনুসরণ করেন সালমান খানকে। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে শেরা সেনাপতির মতো আগলে রেখেছেন বলিউডের এই ‘সুলতান’কে। বলা যায়, সালমানের সুরক্ষার পুরো দায়িত্ব শেরার ওপর। ভাইজানকে এই দেহরক্ষী কতটা ভালোবাসেন, তা স্পষ্ট তাঁর কথায়। সালমান খানের প্রসঙ্গে শেরা বলেন, ‘সালমান খানের সঙ্গে আমি আমার জীবনের শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত থাকব। যত দিন বেঁচে আছি, ওনার পাশে পাশে থাকব। সালমানের সম্পূর্ণ সুরক্ষার দায়িত্ব আমার। আমি কখনো ভাইজানের পেছনে থাকি না। সব সময় সামনে থাকি। আর ভাইজানকে কোনো সমস্যা যাতে ছুঁতে না পারে, তাই তাঁর সামনে পাহাড়ের মতো দাঁড়িয়ে থাকি। যেকোনো বিপদ ভাইজানের ওপর আছড়ে পড়ার আগে তা রুখে দিই।’

শেরা আরও বলেন, ‘এই পৃথিবীতে আমার কাছে সবচেয়ে মূল্যবান হলো ভাইজানের নিরাপত্তা। আর তাঁর জন্য আমি এতটুকু ঝুঁকি নিই না। তবে শুধু ভাইজানের সঙ্গে নয়, তাঁর পরিবারের সঙ্গে আমার পারিবারিক সম্পর্ক। আর সারা জীবন একই রকম থাকবে।’

শেরা বিদেশে গিয়ে সুরক্ষাসংক্রান্ত নানা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। সালমান যখন সেই অর্থে তারকা হননি, তখন থেকে শেরা তাঁর পাশে আছেন। সালমানও তাঁর এই প্রিয় দেহরক্ষীকে নিজের পরিবারের একজন মনে করেন।

টাইগার
টাইগার

সালমানের একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘বোনের স্বামী আয়ুশের মতো শেরার ছেলে টাইগারকেও সালমান বলিউডে আনছেন, এটা নিশ্চিত। শেরা সালমানের জন্য নিজের জীবন দিতে প্রস্তুত। কিন্তু এর বিনিময়ে সালমান তাঁর জন্য যা করছেন, তা খুবই সামান্য।’ পর্দায় দেখা না গেলেও চলচ্চিত্রের সঙ্গে এরই মধ্যে টাইগারের যোগাযোগ হয়েছে। ২০১৬ সালের ব্লকবাস্টার চলচ্চিত্র ‘সুলতান’-এ তিনি সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন।

সালমান খান বলিউডে একের পর এক নতুন মুখ উপহার দিচ্ছেন। অনেক তারকার সন্তান তাঁর হাত ধরে বলিউডে এসেছেন। এর জন্য তাঁকে বলিউডের ‘গডফাদার’ বলা হয়। সালমান খান প্রযোজিত ‘নোটবুক’ ছবির অভিনয়শিল্পী প্রনূতন বহেল ও জহির ইকবাল জুটি এই তালিকার সর্বশেষ সংযোজন। প্রনূতন সালমানের বন্ধু ও অভিনেতা মনীশ বহেলের মেয়ে ও একসময়ের বরেণ্য অভিনেত্রী নূতনের নাতনি।

সালমান খান নতুনদের বলিউডে আনতে পেরে নিজেও খুবই গর্বিত। তাঁর মতে, তিনি যোগ্যদেরই বলিউডে আনেন। এক সাক্ষাৎকারে বলিউডের ভাইজান বলেন, ‘বলিউডে আমি আরও নতুন ছেলেমেয়ে আনব। কারণ, ওদের মতো একদিন আমাকেও কেউ একজন এনেছিল। আমার মনে হয়, ইন্ডাস্ট্রিতে এই নবীন মেধাবীদের প্রয়োজন আছে।’