‘ধুরন্ধর’ অভিনেত্রী সারাকে কতটা চেনেন
সম্প্রতি বড় পর্দায় মুক্তি পেয়েছে আদিত্য ধর পরিচালিত ছবি ‘ধুরন্ধর’। মুক্তির পর থেকেই বক্স অফিসে দারুণ দাপট দেখাচ্ছে ছবিটি। এ ছবির মাধ্যমে রণবীর সিং ও অক্ষয় খান্নার পাশাপাশি আলোচনায় উঠে এসেছে আরেক নাম—অভিনেত্রী সারা অর্জুন। যদিও তিনি মোটেও নবাগত নন। শৈশবেই অভিনয়ের সঙ্গে তাঁর পথচলা শুরু। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলিউড হাঙ্গামার কাছে নিজের অভিনয়যাত্রা, শৈশব আর ধুরন্ধর ঘিরে নানা অনুভূতির কথা ভাগ করে নিয়েছেন তিনি।
‘ধুরন্ধর’-এর সাফল্য নিয়ে সারা বলেন, ‘এটি আমার কাছে শুধু একটি প্রকল্প নয়। আমার মনে হয়েছে, কেউ যেন আমাকে মৃদু স্বরে বলেছিল, “তাড়াহুড়ো করবেন না, আপনার জন্য এখানে একটি গল্প অপেক্ষা করছে।” আমার সব সময়ই একটা সহজাত বিশ্বাস ছিল যে সফল হব। যদিও মনে করি না, এখনো সেই চূড়ায় পৌঁছেছি।’ সারার ভাষ্যে, ‘“ধুরন্ধর” অনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে। এখন আর কোনো প্রশ্ন নেই, আছে শুধু আরও নতুন কিছু করার তীব্র আকাঙ্ক্ষা।’
আদিত্য ধরের ছবিতে রয়েছে তারকার মেলা। রণবীর সিং, অক্ষয় খান্না, সঞ্জয় দত্ত, আর মাধবন, অর্জুন রামপালসহ অনেক তারকার অভিনয়ে সমৃদ্ধ ছবিটি। সহশিল্পীদের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে সারা বলেন, ‘এমন তুখোড় তারকাদের সঙ্গে কাজ করা ছিল আশীর্বাদের মতো। রণবীর সিংয়ের অফুরান প্রাণশক্তি আর উদ্দীপনা পুরো সেটে ছড়িয়ে পড়ত। তিনি প্রতিদিন মনপ্রাণ দিয়ে ছবির জন্য কাজ করতেন।’
তিনি যোগ করেন, ‘রণবীরের ভেতরে একধরনের আগুন আছে, কিন্তু সেই আগুন কখনো কাউকে ম্লান করেনি; বরং সবাইকে উষ্ণতা দিয়েছে। তিনি আমাকে সব সময় মনে করিয়ে দিয়েছেন, আমিও এ ছবিরই একটি অংশ।’ রণবীরের মানবিকতা তাঁকে বিশেষভাবে মুগ্ধ করেছে বলে জানান সারা। তাঁর ভাষায়, ‘তিনি কখনো সিনিয়র হিসেবে নেতৃত্ব দেননি, দিয়েছেন আন্তরিকতার মাধ্যমে। সেটাই তাঁকে আরও শ্রদ্ধার পাত্র করে তুলেছে।’
খুব অল্প বয়সেই ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন সারা। মাত্র দেড় বছর বয়সে অভিনয় শুরু করেছিলেন তিনি। সে সময়ের স্মৃতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেড় বছর বয়সের স্মৃতিগুলো কোনো নির্দিষ্ট ঘটনার মতো নয়; বরং অনুভূতির মতো। সেটের পরিবেশ, উষ্ণতা আজও আমার সঙ্গে রয়ে গেছে।’ তিনি জানান, তখন কাজকে কখনোই ‘কাজ’ মনে হয়নি। ‘আমাকে কখনো দায়িত্বের বোঝা অনুভব করতে দেওয়া হয়নি। মনে হতো, এটাই পৃথিবীর সবচেয়ে মজার জায়গা,’ বলেন সারা।
শৈশব হারিয়ে গেছে—এমন ধারণার সঙ্গে একমত নন সারা। তিনি বলেন, ‘একেবারেই না। আমি খুব স্বাভাবিক শৈশব কাটিয়েছি। মা–বাবা কখনোই আমার কাজকে পড়াশোনা, বন্ধু বা খেলাধুলার পথে বাধা হতে দেননি। আমি সাধারণ স্কুলে পড়েছি, খেলাধুলা করেছি, বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছি।’
ভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা তাঁকে আরও দৃঢ় করেছে বলে মনে করেন সারা। তাঁর কথায়, ‘বিভিন্ন ভাষায় কাজ করা আমার যাত্রার সবচেয়ে সমৃদ্ধ অংশ। ছোট বয়সে অভিনয় শুরু করায় নতুন ভাষা কখনোই বাধা মনে হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘আমি শিখেছি, অনুভূতির কোনো ভাষা হয় না।’
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে সারা বলেন, ‘আমার কোনো নির্দিষ্ট স্বপ্ন নেই। কারণ, অনেক সময় স্বপ্নও সীমাবদ্ধতা হয়ে দাঁড়ায়। এমন কাজ করতে চাই, যা মানুষের কাছে পৌঁছাবে। দিনের শেষে আপনি যা রেখে যাবেন, সেটাই আপনার জীবনের গল্প হয়ে উঠবে।’