তিন দিন পর মরদেহ উদ্ধার, আলোচিত এই নায়িকার নিঃসঙ্গ মৃত্যু হয়েছিল
হিন্দি সিনেমার আলোচিত অভিনেত্রী ছিলেন তিনি। ১৯৫০-এর দশকে এক জরিপে ফিল্মফেয়ার সাময়িকী তাঁকে সবচেয়ে সুন্দরী বলিউড অভিনেত্রীর তকমা দিয়েছিল। হচ্ছিল নলিনী জয়বন্তের কথা। তবে ৭০টির বেশি সিনেমার আলোচিত এই অভিনেত্রীর করুণ মৃত্যু হয়।
১৯৫০-এর দশকে সৌন্দর্য ও অভিনয় দিয়ে দর্শককে মুগ্ধ করেছিলেন। খ্যাতি, নাম, যশ সবই পেয়েছিলেন। তবে জীবনের শেষ দিনগুলো কাটিয়েছিলেন সম্পূর্ণ নিঃসঙ্গভাবে। মাত্র ১৪ বছর বয়সে নলিনী জয়বন্ত অভিনয়জগতে প্রবেশ করেন, নাচ ও অভিনয়ের প্রতি তাঁর অগাধ ভালোবাসার থেকেই।
নলিনী জয়বন্তের প্রতিভা নজর কেড়েছিল প্রযোজক চিমনলাল দেশাইয়ের। তিনি তখন তাঁকে প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ দেন ‘রাধিকা’ (১৯৪১) ছবিতে। অনেকে মনে করেন সৌন্দর্য ও প্রতিভার দিক থেকে তিনি মধুবালার চেয়েও এগিয়ে ছিলেন। নলিনী পরবর্তী সময়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন ‘সমাধি’, ‘নাস্তিক’, ‘মুনিমজি’, ‘হাম সব চোর হ্যাঁ’, ‘কালা পানি’ ছবিতে তাঁর অসাধারণ অভিনয়ের মাধ্যমে।
দিলীপ কুমারও তাঁর ভক্ত ছিলেন। একবার অভিনেত্রী সম্পর্কে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি যতজন অভিনেত্রীর সঙ্গে কাজ করেছি, তার মধ্যে তিনি সেরাদের মধ্যে সেরা।’
যেখানে নলিনী জয়বন্তের পেশাগত জীবন উজ্জ্বল, সেখানে ব্যক্তিগত জীবন ছিল নানা চ্যালেঞ্জ। তিনি দুবার বিয়ে করেছিলেন। প্রথমে তিনি বিয়ে করেছিলেন পরিচালক বিরেন্দ্র দেশাইকে যিনি প্রযোজক চিমনলাল দেশাইয়ের সন্তান। পরবর্তী সময়ে বিচ্ছেদের পর তিনি দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন অভিনেতা প্রভু দয়ালকে। সংসার ভালোই চলছিল, কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যেই প্রভু মারা যান, নলিনী হয়ে পড়েন একদম একা, বিধ্বস্ত।
প্রভুর মৃত্যুর পর নলিনী নিঃসঙ্গ হয়ে সমাজ থেকে সম্পূর্ণভাবে নিজেকে আলাদা করে ফেলেন। প্রতিবেশীরা দেখেছেন, তিনি খুব কমই বাড়ি থেকে বের হতেন।
এই নিঃসঙ্গ জীবন শেষ দিন পর্যন্ত চলতে থাকে। ২০১০ সালের ২২ ডিসেম্বর নলিনীর মৃত্যু হয়, তাঁর মৃতদেহ তিন দিন পরে আবিষ্কৃত হয়। পুলিশ তাঁর বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করে, সেই সময় পরিবারের কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়াডটকম