হলিউড ঘিরে স্বপ্ন প্রিয়াঙ্কার

প্রিয়াঙ্কা চোপড়া
কিছুদিন আগেই মেয়ে মালতী ও স্বামী নিক জোনাসকে নিয়ে নিজের দেশে এসেছিলেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া জোনাস। বলা যায়, এই ভ্রমণে এসে তিনি রথ দেখা, কলা বেচা দুই-ই করেছেন। একদিকে মালতীকে নানির বাড়ি ঘুরিয়ে নিয়ে গেলেন, অন্যদিকে ওয়েব সিরিজ সিটাডেল-এর প্রচারকাজও সারলেন। আজ শুক্রবার অ্যামাজন প্রাইমে সিরিজটি মুক্তি পাবে। সে উপলক্ষে মুম্বাইয়ের একটি পাঁচতারা হোটেলে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া জোনাসের মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধি দেবারতি ভট্টাচার্য।

কিছুদিন আগেই মেয়ে মালতী ও স্বামী নিক জোনাসকে নিয়ে নিজের দেশে এসেছিলেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া জোনাস। বলা যায়, এই ভ্রমণে এসে তিনি রথ দেখা, কলা বেচা দুই-ই করেছেন। একদিকে মালতীকে নানির বাড়ি ঘুরিয়ে নিয়ে গেলেন, অন্যদিকে ওয়েব সিরিজ সিটাডেল-এর প্রচারকাজও সারলেন। আজ শুক্রবার অ্যামাজন প্রাইমে সিরিজটি মুক্তি পাবে। সে উপলক্ষে মুম্বাইয়ের একটি পাঁচতারা হোটেলে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া জোনাসের মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধি দেবারতি ভট্টাচার্য। খোলামেলা আড্ডায় উঠে এল তাঁর ‘দেশি গার্ল’ থেকে ‘গ্লোবাল আইকন’ হয়ে ওঠার কিছু কথা।
‘হলিউডে আমার প্রায় দশ বছর হয়ে গেছে। এত দিনে আমার কাঁধে এমন এক শোর দায়িত্ব। আমার মনে হয়, পশ্চিমি দুনিয়ার আমার সম্পর্কে আর ভারতীয় ছবি সম্পর্কে ধারণা অনেকটা বদলে গেছে। এর অনেক বড় কারণ ওটিটি। এটা দুনিয়াটাকে খুব ছোট করে দিয়েছে,’ শুরুতে বলেন প্রিয়াঙ্কা।

‘ওখানে আমি অনেক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি। তাই আজ যে উচ্চতায় পৌঁছেছি, তার দায়িত্ব আমি বুঝি। তাই তরুণ অভিনেতা, লেখক, পরিচালক, বিশেষ করে নারীদের এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আমার প্রযোজনা সংস্থার মাধ্যমে অনেক অনেক শো, ছবি বানাই। দক্ষিণ এশিয়ার কাহিনিকে বিশ্বের ভাষায় বলতে চাই। যখন পশ্চিমে কাজ শুরু করেছিলাম, তখন সেখানে ভারতীয় ও দক্ষিণ এশিয়ানের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা।

প্রিয়াঙ্কা চোপড়া
এএনআই

এই সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। শুধু দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিভাদের জন্য আমি প্রি-অস্কার পার্টিতে সঞ্চালনা করা শুরু করেছি। আমরা প্রায় ৩০০ জন সেই পার্টিতে শামিল হয়েছিলাম। একে অপরের চোখের দিকে তাকিয়ে যেন বলছিলাম, আমরা পেরেছি। সত্যি বলতে, আমি সেদিন আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম।’
ভারতের বাইরে থাকলেও পরিবারের সবার সঙ্গে বসে দেশি ছবি বা সিরিজের মজা নেন প্রিয়াঙ্কা। কথায় কথায় জানান, বলিউড নায়ক রাজকুমার রাওয়ের অনেক বড় ভক্ত তিনি। এই নায়কের কোনো ছবি দেখতে তিনি ভোলেন না।

বরাবরই স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন প্রিয়াঙ্কা। সময়ের সঙ্গে তাঁর স্বপ্নের রং, রূপ বদলেছে। ‘দেশি গার্ল’ এখন কী স্বপ্ন দেখেন, জানতে চাইলে হেসে বলেন, ‘১৭ বছর বয়সে ক্যারিয়ার শুরুর সময় আমার স্বপ্ন বা ইচ্ছা ছিল ছোট। একটা ভালো ছবি বা ভালো অভিনেতার সঙ্গে কাজ পেলেই খুশি থাকতাম। আজ আমার স্বপ্ন বড় আকার নিয়েছে। আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে আমি অনেক বেশি উচ্চাকাঙ্ক্ষী। চাই অনেক বেশি ভারতীয় অভিনেতা, পরিচালকদের হলিউডে দেখতে। হিন্দি ভাষায় এমন কনটেন্ট আসুক, যা সারা দুনিয়া দেখবে।’

প্রিয়াঙ্কা চোপড়া
ইনস্টাগ্রাম

বলিউডে একসময় লম্বা সংগ্রাম করতে হয়েছে। হলিউডেও দশ বছর ধরে সংগ্রাম করতে হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সাবেক এই বিশ্বসুন্দরী বলেন, ‘আমি বলিউডের সেরা পরিচালক, নির্মাতা, অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করেছি। নিজেকে নানা চরিত্রে মেলে ধরার সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু হলিউডে এখন পর্যন্ত এসব করার সুযোগ পাইনি। একজন শিল্পী হিসেবে বলিউডে আমি যা করেছি, ওখানেও তা–ই করতে চাই। আশা করি আগামী দশ বছরে নিজেকে ওখানে প্রমাণ করতে পারব।’
আর পাঁচজনের মতো প্রিয়াঙ্কার জীবনও চড়াই-উতরাইতে ভরা। তিনি বলেন, ‘সংগ্রাম সবার জীবনেই থাকে। এই সংগ্রামই আমাকে শক্তিশালী করে তুলেছে। দেখুন, ব্যর্থ সবাই হয়। কিন্তু তার পরবর্তী পদক্ষেপই বোঝায়, মানুষ হিসেবে আপনি অন্তর থেকে কতটা শক্তিশালী।’

সিটাডেল-এ প্রিয়াঙ্কাকে রিচার্ড ম্যাডেনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অ্যাকশন করতে দেখা যাবে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসি। সবার মতো শুরুর দিকে আমিও ভয় পাই। কিন্তু পরে সেই ভয়কে যখন জয় করি, তখন দারুণ আনন্দ হয়। সিটাডেল-এর পর এমন কিছু করতে চাই, যা আমাকে ভয় পাওয়াবে। টানা দেড় বছর ধরে সিরিজটির শুটিং করেছি। ওই সময় নিজেকে ফিট রাখতে হয়েছিল।’
কন্যা মালতী জীবনে আসার পর তাঁর জীবন অনেকটা বদলে গেছে বলে জানান এই অভিনেত্রী, ‘এখন আমার জীবনের প্রাধান্য বদলে গেছে। একটু বিরতি পেলেই সোজা বাড়িতে যাই। সিটাডেল-এর পর তাই এক বছরের ছুটি নিয়েছিলাম, যাতে ওর সঙ্গে সময় কাটাতে পারি। ওর দেখভাল করা জরুরি ছিল। সপ্তাহান্তে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালোবাসি।’