নিজেই নিজের লুক দেখে অবাক হয়েছিলাম
‘চণ্ডীগড় করে আশিকি’ ছবিতে ট্রান্সজেন্ডার নারীর চরিত্রে অভিনয় করে বাণী কাপুর প্রশংসিত হন। নতুন ছবি ‘শমশেরা’তেও নতুন রূপে আসতে চলেছেন তিনি। আগের ছবিতে তাঁর পারফরম্যান্স সিনেমাপ্রেমীদের মনেও তাঁকে ঘিরে প্রত্যাশা তৈরি করেছে। তিনি নিজেও আত্মবিশ্বাসী। তাঁর মনে হয়েছে, যশরাজ ফিল্মসের এই ছবিতে ‘সোনা’ চরিত্রের সঙ্গে তিনি সুবিচার করতে পেরেছেন। যশরাজ ফিল্মসের স্টুডিওতে এক বৃষ্টিভেজা বিকেলে বাণী কাপুরের সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধির। সাক্ষাৎকারের শুরুতেই উঠে আসে ‘শমশেরা’ প্রসঙ্গ। ‘শমশেরা’র মতো পুরুষকেন্দ্রিক ছবিতে বাণীর কতটা দাপট থাকবে, এ প্রশ্ন করতেই বাণী বলেন, ‘হতে পারে ‘শমশেরা’ পুরুষকেন্দ্রিক ছবি। তবে এই ছবিতে সোনার দারুণ এক জার্নি আছে। সে কীভাবে রণবীর অভিনীত চরিত্র ‘শমশেরা’র শক্তি হয়ে উঠবে, সেটাও দেখা যাবে। এ ছাড়া চরিত্রটির একটা আবেগঘন দিকও আছে। পর্দায় সোনার সৌন্দর্যকেও খুব সুন্দরভাবে মেলে ধরা হয়েছে। সব মিলিয়ে চরিত্রটি খুব সুন্দরভাবে লেখা হয়েছে। আগে কখনো এই ধরনের চরিত্রে কাজ করিনি। দর্শক আমাকে সোনার চরিত্রের সঙ্গে মেলাতে পারবেন।’
নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে খুশি বাণী। একসময় তাঁকে একই ধরনের চরিত্রের প্রস্তাব দেওয়া হতো। বাণী বলেন, ‘আগে আমাকে “দেশি” চরিত্রেই বেশি ভাবা হতো। বিশেষ করে ‘শুদ্ধ দেশি রোমান্স’–এর পর। কিন্তু ‘বেফিকরে’র পর আমার কাছে আধুনিক মেয়ের চরিত্রের প্রস্তাব বেশি আসতে শুরু করেছিল। এখন আমাকে নতুন নতুন চরিত্রের জন্য ভাবছেন নির্মাতারা। পরিচালক করণ মালহোত্রা আমাকে ‘শমশেরা’র সোনার মতো চরিত্রের জন্য ভেবেছেন, আমি সত্যি তাতে খুশি।’
‘শমশেরা’র মতো অ্যাকশনধর্মী পিরিয়ড ছবিতে কাজ করা কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ঐতিহাসিক চরিত্রে পর্দায় আসা আমার জন্য বেশ কঠিন ছিল। শুরুতে নিজেই নিজের লুক দেখে অবাক হয়েছিলাম। তবে যেকোনো চ্যালেঞ্জ নেওয়ার মানসিক শক্তি ও একাগ্রতা আমার আছে। ছবির শুটিং শুরুর আগে বেশ প্রস্তুতি নিতে হয়েছিল। বেশ কিছু পুরোনো সিনেমা দেখেছিলাম। চরিত্রগুলো অনুভব করার চেষ্টা করেছিলাম। বাকিটা আমি করণের ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। আশা করি, সোনার চরিত্র দিয়ে দর্শকদের হৃদয় ছুঁতে পারব।’
তবে বাণী মনে করেন, কোনো চরিত্রকে সম্পূর্ণভাবে বুঝে ওঠার জন্য তার আবেগকে অনুভব করা জরুরি। এই বলিউড নায়িকা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘একজন শিল্পী হিসেবে সবার আগে চরিত্রটির আবেগের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন অত্যন্ত জরুরি। চরিত্রটি যেকোনো সময়ের হতে পারে। কিন্তু চরিত্রের মধ্যে রাগ, দুঃখ, কষ্ট, আনন্দসহ নানা অনুভূতি থাকবে। কিন্তু প্রত্যেকের বহিঃপ্রকাশ আলাদা। একটা চরিত্রের ক্ষেত্রেও তা–ই। শিল্পী হওয়ার মজা হলো বিভিন্ন চরিত্রের মাধ্যমে ভিন্ন অনুভূতিকে আবিষ্কার করতে পারি। চরিত্রের মাধ্যমে আলাদা আলাদা জীবনের স্বাদ পাই।’
বাণীকে যশরাজ ফিল্মসের ছবিতেই বেশি দেখা যায়। ‘শমশেরা’র আগে এই প্রযোজনা সংস্থার আরও তিন ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। এর কারণ জানতে চাইলে এই বলিউড তারকা বলেন, ‘প্রযোজনা সংস্থা দেখে ছবি নির্বাচন করি না। অভিনেত্রী হিসেবে যে চরিত্রটা বেশি আকৃষ্ট করে, সেই ছবি সাধারণত করি। যেমন ধরুন, চণ্ডীগড় করে আশিকি। আমার কাছে প্রচুর প্রস্তাব আসে। চিত্রনাট্য বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দেখি—চরিত্রের সঙ্গে আমি ইমোশনালি কানেক্ট হচ্ছি কি না। কোয়ান্টিটির চেয়ে কোয়ালিটিতে বিশ্বাসী। সব সময় চেষ্টা করি সঠিক ছবি নির্বাচন করতে। যাতে আগামী দিনে আরও ভালো ভালো কাজের সুযোগ পাই।’
‘শমশেরা’য় রণবীর কাপুর ও সঞ্জয় দত্তের মতো তারকারা মূল চরিত্রে আছেন। এই দুই তারকার সঙ্গে শুটিংয়ের অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গে বাণী বলেন, ‘শুটিংয়ের সময় খুব মজা করেছিলাম। রণবীর কাপুর ও সঞ্জয় দত্তের মতো দুরন্ত অভিনেতার সঙ্গে কাজ করা আমার জন্য অনেক গর্বের। তাঁদের মতো অভিজ্ঞদের সঙ্গে কাজ করা মানে প্রতিমুহূর্তে কিছু না কিছু শেখা। নিজেকে আরও সমৃদ্ধ করা।’ যশরাজ ফিল্মস প্রযোজিত ‘শমশেরা’ মুক্তি পাবে ২২ জুলাই।