বাজার ভালো না, তাই পারিশ্রমিক কমাচ্ছেন অক্ষয়, আমিরেরা

‘গুড নিউজ’, ‘মিশন মঙ্গল’—২০১৯ সালে সুপারহিট দুটি ছবি উপহার দেন অক্ষয় কুমার। পরপর হিট ছবি দিয়েছেন তার আগের দুই বছরও। একের পর এক ছবি হিট দিয়ে যেন আকাশে উড়ছিলেন অক্ষয় কুমার। পারিশ্রমিক বাড়তে বাড়তে গিয়ে ঠেকেছিল ১৪৪ কোটি রুপিতে।

শহীদ কাপুরের কথাই বা বাদ যাবে কেন, প্রায় ডুবতে বসা ক্যারিয়ার ‘কবির সিং’ দিয়ে ভাসিয়ে তোলেন। ব্লকবাস্টার হিট ছবিটিও মুক্তি পায় ২০১৯ সালে। এক ছবির সাফল্যের জেরেই পাঁচ-ছয়টি ছবির প্রস্তাব পান অভিনেতা। নিজের পারিশ্রমিকও প্রায় বাড়িয়ে দ্বিগুণ ৩০ কোটি রুপি করেন।

শহীদ কাপুর

একই কথা আয়ুষ্মান খুরানার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। গত কয়েক বছরে সোশ্যাল-কমেডি মানেই যেন আয়ুষ্মান খুরানা, আর অবধারিতভাবেই যে ছবি হিট। এই নিয়ম মেনে তাঁর ‘বেরেলি কি বরফি’, ‘শুভ মঙ্গল সাবধান’, ‘বাধাই হো’, ‘ড্রিম গার্ল’, ‘বালা’ হিট হয়েছে। আয়ুষ্মানও নিজের পারিশ্রমিক  ২৫ কোটির আশপাশে নির্ধারণ করেন।

কিন্তু বলিউড ছবির সাফল্যে ছন্দপতন ঘটায় কোভিড। মহামারির পর পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে কোনো বড় তারকার ছবিই আর সেভাবে ব্যবসা করতে পারছে না। ২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে মুক্তি পাওয়া যে অক্ষয় কুমারের প্রায় সব ছবিই ১০০ কোটি রুপির বেশি ব্যবসা করেছে, তিনিও ব্যর্থ। ছবির ব্যর্থতায় বাধ্য হয়ে পারিশ্রমিক কমিয়েছেন বলিউড তারকারা। কেবল অক্ষয়ই নন, শহীদ কাপুর, আয়ুষ্মান খুরানা, জন আব্রাহাম, টাইগার শ্রফসহ বেশির ভাগ অভিনেতাকেই পারিশ্রমিক নিয়ে আপস করতে হয়েছে।

‘পৃথ্বীরাজ’ ছবিটি ব্যর্থ হয়েছে

বলিউডের বক্স অফিস বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, কোভিড, দক্ষিণ ভারতের ছবির জনপ্রিয়তা, ওটিটির উত্থানসহ নানা কারণে কমেছে হিন্দি ছবির ব্যবসা। তারকাদের ভুল ছবি নির্বাচনও আরেকটা কারণ। কিছুদিন আগে ‘রক্ষা বন্ধন’ বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ার পর ব্যর্থতার দায় মাথা পেতে নিয়েছেন অক্ষয়। ‘আমরাই পারছি না, ব্যর্থতার দায় আমাদেরই নিতে হবে। ব্যর্থতা নিয়ে কথা বলে ঘুরে দাঁড়ানোর পথ বের করতে হবে,’ তাঁর আরেক ছবি ‘কাঠপুতলির’ প্রচারে গিয়ে কথাগুলো বলেন অভিনেতা। ওটিটিতে মুক্তি পাওয়া ছবিটি দর্শক-সমালোচক কেউই পছন্দ করেনি।

নিয়ম করে প্রতিবছর চারটি ছবি করেন অক্ষয়। চলতি বছর তাঁর তিন ছবি ‘সম্রাট পৃথ্বীরাজ’, ‘রক্ষাবন্ধন’ ও ‘কাঠপুতলি’ ব্যর্থ। বাকি আছে কেবল ‘রাম সেতু’। ২৫ অক্টোবর মুক্তির অপেক্ষায় থাকা ছবিটি নিয়েও সমালোচকদের খুব বেশি প্রত্যাশা নেই। জানা গেছে, টানা ব্যর্থতায় নিজের পারিশ্রমিক ১৪৪ কোটি থেকে অর্ধেকে নামিয়ে এনেছেন।
একই অবস্থা আমির খানেরও। গত আগস্টে তাঁর বহুপ্রতীক্ষিত ‘লাল সিং চাড্ডা’ ব্যর্থ হওয়ার পর পারিশ্রমিকে ছাড় দিয়েছেন এই অভিনেতা। আমির সাধারণত ছবির পারিশ্রমিক নেন না, নেন লভ্যাংশের ভাগ। ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ‘লাল সিং চাড্ডা’ ব্যর্থতার পর নিজের পারিশ্রমিক ১০০ কোটির নিচে আনতে রাজি হয়েছেন তিনি।

‘গুলাবো-সিতাবো’ ছবিতে অমিতাভ বচ্চন ও আয়ুষ্মান

আয়ুষ্মান খুরানারও একই অবস্থা। অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, সামাজিক-কমেডিধর্মী সিনেমা থেকে বেরিয়ে নিরীক্ষাধর্মী ছবিতে আয়ুষ্মানকে মেনে নিতে পারেনি তাঁর ভক্তরা। এ কারণেই তাঁর আগের ছবিগুলোর মতো ‘গুলাবো সিতাবো’ ততটা গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। পরপর ছবি ব্যর্থ হওয়ায় আয়ুষ্মানও ২৫ কোটি থেকে কমিয়ে নিজের পারিশ্রমিক ১৫ কোটি রুপি করেছেন। তবে অভিনেতার নতুন ছবি ‘ডক্টর জি’র ট্রেলার মুক্তির পরই ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এই ছবি দিয়ে আবারও নিজের চেনা ঘরানায় ফিরেছেন অভিনেতা।
আমির, অক্ষয় ও আয়ুষ্মানের মতো পারিশ্রমিকে ছাড় দিয়েছেন জন আব্রাহাম, টাইগার শ্রফ, শহীদ কাপুরও। তবে তাঁরা কত পারিশ্রমিক কমিয়েছেন জানা যায়নি।