দুই বিয়ে, রাগ আর বিতর্ক—টাবুর সেই বোনকে মনে আছে

ফারাহ নাজ। আইএমডিবি

আশি ও নব্বইয়ের দশকে বলিউডের জনপ্রিয় নায়িকা ছিলেন ফারাহ নাজ। অসাধারণ সৌন্দর্য, স্বতঃস্ফূর্ত অভিনয় আর বড় তারকাদের সঙ্গে কাজ—সব মিলিয়ে ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি নিয়ে। কিন্তু বিতর্ক আর মানসিক অস্থিরতায় সেই আলো ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে যায়।

কীভাবে এমন দ্রুত উত্থান হয়েছিল ফারাহর
১৯৮৫ সালে যশ চোপড়ার ‘ফাসলে’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন ফারাহ। প্রথম ছবিতেই নজর কাড়েন। চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্ট পরিবারে জন্ম; তিনি টাবুর বড় বোন। যিনি পরে বলিউডের সবচেয়ে প্রশংসিত অভিনেত্রীদের একজন হন।

আশির দশকের শেষ ভাগ থেকে নব্বইয়ের দশকের শুরু পর্যন্ত আমির খান, সঞ্জয় দত্ত, রেখা, জ্যাকি শ্রফসহ বড় তারকাদের বিপরীতে কাজ করেছেন তিনি। রোমান্স, পারিবারিক ড্রামা, বাণিজ্যিক ছবি—সব ঘরানাতেই নিজের অবস্থান তৈরি করেছিলেন।
ফারাহর শেষ উল্লেখযোগ্য কাজ ‘হালচাল’—অক্ষয় খান্না, কারিনা কাপুর, অমরেশ পুরী, আরবাজ খান ও পরেশ রাওয়ালের সঙ্গে। দর্শক প্রশংসা করলেও এরপর তিনি পর্দা থেকে প্রায় গায়েব হয়ে যান।

ফারাহ নাজ। আইএমডিবি

রাগ কি তাঁর ক্যারিয়ার নষ্ট করেছিল
ইন্ডাস্ট্রি মহলে বহুদিন ধরে গুঞ্জন ছিল—ফারাহর মেজাজই তাঁর পতনের মূল কারণ। শুটিং সেটে সহ–অভিনেতা কিংবা পরিচালকের সঙ্গে বিতণ্ডা ছিল নাকি নিয়মিত ঘটনা।

ফারাহ নাজ। আইএমডিবি

ফারাহকে নিয়ে একটি বহুল প্রচলতি গল্প হলো—এক ছবির শুটিংয়ে রসিকতায় বিরক্ত হয়ে তিনি চাঙ্কি পাণ্ডেকে চড় মেরেছিলেন। আরেকটি গুঞ্জন—একটি ছবি ফ্লপ করার পর নাকি অনিল কাপুরকে হুমকি দিয়েছিলেন। এ ধরনের গল্প সত্য বা অতিরঞ্জিত হোক; বলিউডে তাঁর সুনাম নষ্ট করেছে।

কী বলেছিলেন ফারাহ
১৯৮৮ সালে ফিল্মফেয়ার সাময়িকীতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অত্যন্ত ব্যক্তিগত এক স্বীকারোক্তি করেন তিনি। ফারাহ জানান, মানসিক চাপে কখনো কখনো তিনি নিজেকে আঘাত করেছিলেন—মৃত্যুর উদ্দেশ্যে নয়, বরং কষ্ট ভুলে থাকার জন্য।
ফারাহ বলেছিলেন, ‘আমি মরতে চাইনি…এটা ছিল আমার যন্ত্রণা থেকে পালানোর উপায়…ওদের কষ্ট দেওয়ার আমার নিজের পদ্ধতি।’
মা, টাবু কিংবা প্রেমিক রাজেশকে কেন্দ্র করে এসব আবেগময় মুহূর্ত সৃষ্টি হতো বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন

ব্যক্তিজীবনে কী ঘটেছিল
ফারাহর প্রথম বিয়ে হয় অভিনেতা বিন্দু দারা সিংয়ের সঙ্গে, নব্বইয়ের দশকে। প্রেমের সূত্রেই বিয়ে। তাঁদের ছেলে ফতেহর জন্ম ১৯৯৭ সালে। ২০০২ সালে বিচ্ছেদ হলেও সন্তানকে দুজনই লালন–পালন করেন।
এক বছর পর, ২০০৩ সালে অভিনেতা–প্রযোজক সুমিত সেহগলকে বিয়ে করেন ফারাহ। এরপর ধীরে ধীরে চলচ্চিত্রজগৎ থেকে দূরে সরে যান এবং এখন খুব কমই জনসমক্ষে দেখা মেলে তাঁর।

ইন্ডিয়াডটকম অবলম্বনে