‘আমাকে ছবি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল’

বক্স অফিসে সেভাবে সাড়া ফেলতে পারেনি বিক্রম বেধা। তবে হৃতিক রোশনের পাশাপাশি সাইফ আলী খানের অভিনয় প্রশংসিত হচ্ছে সর্বত্র। মুম্বাইয়ের একটি পাঁচতারা হোটেলে বলিউড নায়ক সাইফ আলী খানের মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধি

সাইফ আলী খানছবি: সংগৃহীত

শুরুতে জানতে চাই, দর্শকের প্রশংসা সাইফকে কি আরও আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে?  জবাবে সাইফ আলী খান বলেন, ‘এমন  ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ায় আমি নিশ্চয় গর্বিত। তবে আত্মবিশ্বাসী মোটেও করে তোলেনি। কারণ, ছবির সফলতা ঘিরে আমি আত্মবিশ্বাসী নই। অনেক সময় কর্মক্ষেত্রে সফলতা না পেলেও আপনাকে কাজে যেতে হয়। আসলে বিক্রম বেধার বিষয়বস্তু আমার অত্যন্ত ইন্টারেস্টিং লেগেছিল। তাই ছবিটি করতে আগ্রহী হয়েছিলাম। এর গল্প দুর্দান্ত। আর এই ছবির মাধ্যমে একজন পুলিশের দর্শনকে আমি অনুভব করেছিলাম।’

নানান ব্যতিক্রমী চরিত্রে ক্রমাগত নিজেকে অন্বেষণ করতে থাকেন সাইফ। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়েছিল যে আমি অন্য কিছু করতে পারি। একজন অভিনেতার ভিন্ন কিছু করার সুযোগ থাকে। পেশাগত দিক থেকে আমি এক দারুণ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। তানাজি ছবিতে উদয়ভানের চরিত্রে সবার প্রশংসা পেয়েছি। স্যাক্রেড গেমস আর বিক্রম বেধা, দুটিতেই আমি পুলিশের চরিত্রে অভিনয় করেছি। কিন্তু দুটি চরিত্র সম্পূর্ণ আলাদা। আর এ সবকিছুই আমায় আনন্দ দেয়। এভাবে দর্শকের ভালোবাসা যদি আমার পাশে থাকে, তাহলে আগামী দিনে আমি নিজেকে আরও বৈচিত্র্যময় চরিত্রে মেলে ধরতে উৎসাহিত হব।’

বিক্রম বেদা’য় অভিনয় করেছেন সাইফ আলী খান ও হৃতিক রোশান
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

বিক্রম বেধাতে সাইফের সঙ্গে জোর পাল্লা দিয়েছেন হৃতিক। দুই হিরোর ছবিতে কাজ করতে সাইফ কতটা স্বাচ্ছন্দ্য, জানতে চাইলে বলেন, ‘আমার মনে হয় মানুষের খুশি থাকা উচিত যে তার হাতে কাজ আছে। আমি একসময় তিন হিরোর ছবিতে কাজ করেছি। ধীরে ধীরে নিজেকে উন্নত করেছি। তবে আমি ভাগ্যবান যে দারুণ দারুণ চিত্রনাট্যে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। এসব চিত্রনাট্য একজন অভিনেতা হিসেবে আমাকে নিরাপদ বোধ করিয়েছে। ইন্ডাস্ট্রির অধিকাংশ অভিনেতা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। আর আমরা সব সময় দেখাতে ব্যস্ত থাকি যে আমরা নিরাপদ। আমি মনে করি, সেটে অন্য তারকার সঙ্গে কাজ করার সুবাদে অনেক কিছু আদান-প্রদান হয়। এই যেমন ধরুন, শাহরুখ খানের সঙ্গে কাজ করে আমার চিন্তাভাবনায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। হৃতিকের সঙ্গে কাজ করে ব্যবসার দিকটা একটু-আধটু বুঝেছি। আমি বরং উপকৃত হয়েছি।’

সাইফ আলী খান

প্রায় তিন দশক ধরে বলিউডে কাজ করা প্রসঙ্গে সাইফ বলেন, ‘১৯৯২ সালে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলাম। যখন প্রথম শট দিয়েছিলাম, তখন জানতাম না যে সারা জীবন অভিনয় করে যাব। তখন আমার এক বিশেষ মানসিক অবস্থান ছিল। শাহরুখের একটা কথা আমার খুব ভালো লেগেছিল। শাহরুখ বলেছিল যে মানুষ বুড়ো হয় না, মানুষের চিন্তাভাবনা বুড়ো হয়। আমি যখন স্যাক্রেড গেমস করার কথা জানিয়েছিলাম, তখন অনেকের অনেক নেতিবাচক মন্তব্য সহ্য করতে হয়েছিল। কিন্তু তারাই পরে আমার প্রশংসা করেছিল। শেষ পর্যন্ত দর্শকের ভালোবাসার জোরেই এত বছর ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে আছি। এত বছর কাজ করার ফলে অনেক কিছু শিখেছি। আসলে প্রতি শুক্রবার আমরা দর্শকদের থেকে কিছু না কিছু শিখি।’

সাইফ আলী খান, কারিনা কাপুর ও তৈমুর আলী খান
ইনস্টাগ্রাম

আলাপের শেষ পর্যায়ে জানতে চাই, জীবনের প্রথমবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর অভিজ্ঞতার কথা। হাসতে হাসতে বলেন, ‘জানেন, প্রথম শট দেওয়ার পর আমাকে ছবি থেকে রীতিমতো ছুড়ে ফেলা হয়েছিল। আসলে সেই দৃশ্যে একটা হিন্দি গান গাইতে হবে। আমার বয়স তখন কম ছিল। আর আমি কিছুই জানতাম না তখন। আমি হিন্দি গান ইংরেজি উচ্চারণে গাইছিলাম। তাই আমাকে ছবি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল!’