অভিনয়ে অনিচ্ছুক সেই মেয়ে এখন ‘লেডি সুপারস্টার’, ২০০ কোটির মালিক

নয়নতারা। অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রাম থেকে

তামিল–তেলেগু সিনেমার সাফল্য অনেকবারই চমকে দিয়েছে। নানা বিচিত্র বিষয় নিয়ে সিনেমা তৈরি হয়েছে এই ইন্ডাস্ট্রিতে। তবে প্রশংসার সঙ্গে তামিল–তেলেগু সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে সমালোচনাও আছে। এই ইন্ডাস্ট্রি মূলত পুরুষপ্রধান, নারী চরিত্রগুলো সেভাবে গুরুত্ব পায় না। তবে এই পুরুষপ্রধান ইন্ডাস্ট্রিতেও দুই দশকের বেশি সময় ধরে দাপট দেখিয়েছে চলেছেন এক অভিনেত্রী। রোমান্টিক, থ্রিলার থেকে হরর—সব ঘরানার সিনেমায় নিজের ছাপ রেখেছেন। তিন আর কেউ নন, দক্ষিণের ‘লেডি সুপারস্টার’ নয়নতারা। আজ ১৮ নভেম্বর, অভিনেত্রীর জন্মদিন।

ডায়ানার বেড়ে ওঠা
১৯৮৪ সালের আজকের দিনে কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে জন্ম। আসল নাম ডায়ানা মরিয়ম কুরিয়ান। বাবা ছিলেন ভারতীয় বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা; বদলির চাকরি। নয়নতারা তাই বেড়ে উঠেছেন ভারতের বিভিন্ন শহরে। পড়েছেন জামনগর, গুজরাট আর দিল্লির স্কুলে, পরে কেরালার তিরুবল্লের একটি কলেজ থেকে ইংরেজিতে স্নাতক করেন।

প্রথম সিনেমা ‘মানাশিনাকারে’র পোস্টারে নয়নতারা। আইএমডিবি

শুরুর দিনগুলো
২০০৩ সালে মালয়ালম সিনেমা ‘মানাশিনাকারে’ দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক। নয়নতারা তখন কলেজছাত্রী, পার্ট টাইম মডেলিংও করেন। সেই সূত্রেই আলাপ হয়েছিল নির্মাতা সাথিয়া আনথিকড়ের সঙ্গে। শুরুতে সিনেমার প্রস্তাব পাওয়ামাত্রই প্রত্যাখ্যান করেন। কারণ, সিনেমা নিয়ে নয়নতারার কোনো আগ্রহই ছিল না। পরে তিনি রাজি হন একটা শর্তেই, স্রেফ এই একটি সিনেমাই করবেন। কিন্তু নিয়তি যাঁর জন্য সিনেমায় তারকাখ্যাতি লিখে রেখেছে, সেটা আর কীভাবে খণ্ডাবেন। প্রথম সিনেমা সুপারহিট, একের পর এক প্রস্তাব আসতে থাকে। কটি আর ফেরাবেন। এভাবেই ২০০৪ সালে মুক্তি পায় তাঁর দুই সিনেমা—‘নাট্টুরাজাভু’ ও ‘বিশমায়াথুমবাথু’। এটা ছিল সবে শুরু, পরের সময়টাতে তামিল আর তেলেগুতে একের পর এক সিনেমা করতে থাকেন নয়নতারা, হয়ে ওঠেন দক্ষিণের ‘লেডি সুপারস্টার’।

একের পর এক হিট
২০০৫ সাল থেকে প্রধান নায়িকা হিসেবে তামিল ও তেলেগু সিনেমা করতে থাকেন নয়নতারা। এই সময়ে তাঁর আলোচিত সিনেমাগুলোর মধ্যে আছে ‘আইয়া’, ‘চন্দ্রমুখী’। সবচেয়ে আলোচিত হয় কমেডি–হরর সিনেমা ‘চন্দ্রমুখী’, ৮০০ দিন ধরে প্রেক্ষাগৃহে চলে। এ ছাড়া মোহনলালের সঙ্গে করেন ‘থাসকারা বীরান’ ও ‘রাপ্পাকাল’। এ ছাড়া এ আর মুরুগোদাসের ‘গজনি’ও ব্যাপক আলোচিত হয়। বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিতে একসঙ্গে কাজ করেছেন নয়নতারা, করেছেন নিজের চরিত্র নিয়ে নিরীক্ষাও। যেমন দক্ষিণের অনেক অভিনেত্রী যখন আইটেম নম্বরে অপরাগতা প্রকাশ করেন, তখন তিনি ‘শিবকাশী’ সিনেমায় ড্যান্স নম্বর করে চমকে দেন।

‘বিল্লা’ সিনেমায় নয়নতারা। আইএমডিবি

তবে অভিনেত্রী হিসেবে নয়নতারা স্বীকৃতি ও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেন ২০০৭ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে। এই সময়ে গ্যাংস্টার সিনেমা ‘বিল্লা’ সুপারহিট হয়, সিনেমার জন্য ফিল্মফেয়ার তামিলে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পান। এ ছাড়া ‘তুলাসী’র জন্য ফিল্মফেয়ার তেলেগুতে সেরা অভিনেত্রীর মনোনয়ন এনে দেয়।

২০০৮ সালে মুক্তি পায় পাঁচটি সিনেমা। এর মধ্যে ‘ইয়ারাডি নে মোহিনি’র জন্য সমালোচকদের ব্যাপক প্রশংসা পায়। ২০১০ সালে ‘আধুরাস’, ‘বডিগার্ড’, ‘সিমহা’, ‘বস এনগিরা’ ও ‘সুপার’—নয়নতারা অভিনীত পাঁচটি সিনেমা সুপারহিট হয়। পরের বছরই চমক, মাত্র একটি সিনেমা করেন। সেই সিনেমা ‘শ্রী রামা রাজয়াম’–এ তাঁর অভিনয়ের ব্যাপক তারিফ করেন সমালোচকেরা। রেডিফডটকম লেখে, ‘তাঁর ক্যারিয়ারের সেরা অভিনয়।’ সিনেমার জন্য ফিল্মফেয়ার আর নান্দী পুরস্কার পান।
পরের বছরগুলোতে ‘কৃষস কৃষ্ণাম বন্দে জাগাদগুরুম’, ‘রাজা রানি’, ‘আরাবাম’ সিনেমাগুলো দিয়ে অভিনেত্রী হিসেবে শীর্ষে চলে যান নয়নতারা।

‘মায়া’ সিনেমায় নয়নতারা। আইএমডিবি

বৈচিত্র্যময় চরিত্রে
ব্যাপক বাণিজ্যিক সাফল্যের পর ক্যারিয়ারের পরের ধাপে এসে বৈচিত্র্যময় চরিত্রে মনোযোগী হন। ২০১৪ সাল থেকে দক্ষিণে নারীকেন্দ্রিক সিনেমার প্রধান মুখ হয়ে ওঠেন নয়নতারা। করেন হরর সিনেমা ‘মায়া’, যা ছিল এক সিঙ্গেল মাদারের জার্নির গল্প। এ রকম সিরিয়াস সিনেমার ফাঁকে ‘ভাস্কর দ্য রাসকেল’, ‘থানি ওরুভান’–এর মতো অ্যাকশন সিনেমাও চলতে থাকে।
২০১৬ সালে অভিনেত্রী চমকে দেন ‘পুথিয়া নিয়ামাম’ সিনেমা দিয়ে। ছবিতে ধর্ষণের শিকার এক নারীর ভূমিকায় অভিনয় করেন, যা তাঁকে এনে দেয় আরেকটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার। ২০১৬ সালে ‘থিরুনাল’ সিনেমায় দেখা যায় স্কুলশিক্ষিকার ভূমিকায়, ‘ইরু মুগান’ সিনেমায় করেন এক রাজকুমারীর চরিত্র।

ইদানীং ভারতে হরর আর হরর–কমেডির ব্যাপক চল হলেও নয়নতারা ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই হরর সিনেমায় অভিনয় করে আসছেন। ‘মায়া’র ব্যাপক সাফল্যের পর ২০১৭ সালে করেন ‘ডোরা’। এরপর তাঁকে দেখা যায় সমালোচকদের কাছে ব্যাপক প্রশংসিত ‘আরাম’, ‘জয় সিমহা’, ‘কোলামাভু কোকিলা’, ‘ইমিক্কা নোডিগাল’, ‘বিশ্বাম’, ‘বিগিল’, ‘ও টু’, ‘গোল্ড’, ‘গদফাদার’ ইত্যাদি সিনেমায়।

‘জওয়ান’–এ নয়নতারা। আইএমডিবি

অবশেষে বলিউডে
কোনো দক্ষিণ ভারতীয় অভিনয়শিল্পী ভালো করলেই শুনতে হয় বহুল চর্চিত সেই প্রশ্ন, ‘হিন্দি সিনেমা কবে করবেন?’ নয়নতারাকেও শুনতে হয়েছে। তিনি প্রথম হিন্দি সিনেমা করেছেন ক্যারিয়ার শুরুর প্রায় দুই দশক পর, আর শুরুটা করেছেন রাজকীয়ভাবেই ‘জওয়ান’–এ শাহরুখ খানের বিপরীতে। ২০২৩ সালে অ্যাটলির সিনেমাটি ছিল ওই বছরের সবচেয়ে ব্যবসাসফল সিনেমাগুলোর একটি।
বিয়ে ও মা হওয়ার পর থেকে অভিনয় একটু কমিয়ে দিয়েছেন বটে; কিন্তু যখন যা করেছেন; সেখানে ঠিকই নিজের ছাপ রেখেছেন। চলতি বছর আর মাধবন ও সিদ্ধার্থের সঙ্গে তাঁর সিনেমা ‘টেস্ট’ নেটফ্লিক্সে মুক্তির পর সাড়া ফেলে। সিনেমাটিতে এক স্কুলশিক্ষিকার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।

যত বিতর্ক
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে নানা সময়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন অভিনেত্রী। কখনো সম্পর্ক নিয়ে, কখনো আবার সিনেমা নিয়ে। ২০০৬ সাল থেকে অভিনেতা সিলাম্বরাসানের প্রেমের সম্পর্ক ছিল নয়নতারার। তবে বছর কয়েক পরই সে প্রেম ভেঙে যায়। এরপর অভিনেতা ও পরিচালক প্রভু দেবার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান নয়নতারা। ২০০৯ সালে প্রভু দেবার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল ‘টক অব দ্য টাউন’। তাঁদের প্রেম একসময় ছিল দক্ষিণি সিনেমার সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা।

নয়নতারা। অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রাম থেকে

‘ভিল্লু’র শুটিংয়ে প্রভু দেবা ও নয়নতারার সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়। রূপকথার মতো শুরু হলেও শেষটা সুখের হয়নি। তাঁদের বিচ্ছেদের কারণ কী, তা নিয়ে তখন শুরু হয় নানা আলোচনা। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিয়ের আগে নয়নতারার জন্য প্রভু দেবার বেশ কয়েকটি শর্ত ছিল। নয়নতারা নাকি হিন্দুধর্ম গ্রহণ করতে রাজি ছিলেন, এমনকি প্রভুর আগের বিয়ের সন্তানদের মেনে নেওয়ার কথাও মানতে প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু প্রভুর আরেকটি দাবি ছিল, বিয়ের পর অভিনয় ছেড়ে দিতে হবে। সে সময় ক্যারিয়ারের শীর্ষে থাকা নয়নতারা এ শর্ত মানেননি। বারবার আলোচনা করেও সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি, আর এতে সম্পর্কে টানাপোড়েন বাড়ে।
শর্ত না মানায় দুজনের মধ্যে নাকি প্রায়ই তর্ক-বিতর্ক হতো। শেষ পর্যন্ত তাঁরা আলাদা পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নেন।

এরপর অভিনেত্রী বিতর্কে জড়ান অভিনেতা ধানুশের সঙ্গে। শুরুটা করেন নয়নতারাই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাতে ধানুশের উদ্দেশে তিন পৃষ্ঠার খোলাচিঠি লিখেছিলেন অভিনেত্রী। অভিযোগ, তথ্যচিত্র ‘নয়নতারা: বিয়ন্ড দ্য ফেয়ারিটেল’-এ একটি নির্দিষ্ট ছবির ফুটেজ, গান ইত্যাদি ব্যবহারের জন্য ধনুশের কাছে অনুমতি চান অভিনেত্রী। দুই বছর ধরে চেষ্টা করলেও বারবার তা খারিজ করে দিয়েছেন ধানুশ।

‘নয়নতারা: বিয়ন্ড দ্য ফেয়ারিটেল’–এ নয়নতারা। আইএমডিবি

উল্টো তাঁর বিরুদ্ধে পাঠিয়েছেন আইনি নোটিশ। ধানুশের এমন ব্যবহারে কষ্ট পেয়েছেন অভিনেত্রী। নয়নতারা বলেন, ‘প্রতিহিংসাপরায়ণ’ হয়ে উঠেছেন ধানুশ। যেই সিনেমা নিয়ে এত কাণ্ড, সেটি মুক্তি পেয়েছিল ২০১৫ সালে। নাম ‘নানুম রাউডি ধান’। সেখানে অভিনয় করেন নয়নতারা ও বিজয় সেতুপতি। ছবির প্রযোজক ধানুশ। পরিচালক নয়নতারার স্বামী ভিগ্নেশ শিবান। সেই সিনেমা থেকেই ৩ সেকেন্ডের ফুটেজ নিয়ে তথ্যচিত্রের ট্রেলারে ব্যবহার করেছেন নয়নতারা। তাতেই রেগে আগুন ধানুশ। নয়নতারাকে আইনি নোটিশ পাঠিয়ে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণও দাবি করেছেন বলে অভিযোগ অভিনেত্রীর। ধানুশ নয়নতারাকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছিলেন। নয়নতারাও এর উত্তরে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। পরে অবশ্য এই বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে নেটফ্লিক্সে মুক্তি পায় তথ্যচিত্রটি।

পরিচালকের সঙ্গে নতুন জীবন
২০২২ সালের ৯ জুন মহাবলিপুরমের এক অভিজাত রিসোর্টে সাত পাকে বাঁধা পড়েছিলেন দক্ষিণের লেডি সুপারস্টার নয়নতারা আর পরিচালক ভিগনেশ শিবান। ২০১৫ সালে ‘নানুম রাউডি ধান’ সিনেমার শুটিং সেটে দুজনের প্রেমের যাত্রা শুরু। তাঁদের বিয়ের আসরে রজনীকান্ত, শাহরুখ খান, বিজয়সহ দক্ষিণ ভারত ও বলিউড তারকাদের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

স্বামী ভিগনেশ শিবান ও দুই সন্তানের সঙ্গে নয়নতারা। ইনস্টাগ্রাম থেকে

বিয়ের চার মাস পর ২০২২ সালের ৯ অক্টোবর যমজ সন্তানের মা-বাবা হওয়ার খবর দেন নয়নতারা ও ভিগনেশ শিবান। জানা যায়, সারোগেসি পদ্ধতিতে মা–বাবা হয়েছেন তাঁরা। এটা নিয়েও শুরু হয় বিতর্ক। বিষয়টি নিয়ে তদন্তেরও নির্দেশ দেয় তামিলনাড়ু রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কারণ, কয়েক বছর ধরেই  ভারত সরকার সারোগেসি নিয়ে নানা কড়াকড়ি আরোপ করে। পরে তামিলনাড়ুর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তদন্ত দলকে নয়নতারা ও ভিগনেশ জানিয়েছেন, সব নিয়ম মেনেই সারোগেসি পদ্ধতিতে মা-বাবা হয়েছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন

মানবিক অভিনেত্রী
ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই নানা দাতব্য কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত নয়নতারা। তামিলনাড়ুর প্রাকৃতিক দুর্যোগ, কোভিড মহামারি থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে মোটা অঙ্কের আর্থিক অনুদান দিয়েছেন তিনি। এমনকি নয়নতারা সাক্ষাৎকার দেন না, প্রকাশ্যে খুব একটা দেখাও যায় না। তবে নারী সুরক্ষাসহ নানা সচেতনতামূলক কার্যক্রমে নিয়মিতই অংশ নেন নয়নতারা।

প্রযোজনা সংস্থা
অভিনয়ের পাশাপাশি স্বামী ভিগনেশ শিবারের সঙ্গে রাওডি পিকচার্স নামে প্রযোজনা সংস্থাও চালু করেছেন নয়নতারা। এ পর্যন্ত তাঁদের প্রযোজনা সংস্থা থেকে এসেছে ‘কোঝানগা’, ‘নেত্রিকান’, ‘কাথুভাকুলা রেনডি কাধাই’ ইত্যাদি সিনেমা।

নয়নতারা। ইনস্টাগ্রাম থেকে

কত সম্পদের মালিক
জিকিউ সাময়িকীর তথ্যমতে, নয়নতারা এখন ২০০ কোটি রুপির সম্পত্তির মালিক। সিনেমাপ্রতি তিনি পারিশ্রমিক নেন ৪–৫ কোটি রুপি, আয় আসে বিভিন্ন বাণিজ্যিক চুক্তি থেকেও। এ ছাড়া নিজেদের প্রযোজনা সংস্থা থেকেও আয় করেন নয়নতারা।

‘আমার নাম নিলে ভিউ আসে’
নয়নতারা খুব একটা সাক্ষাৎকার দেন না। তবে গত বছর দ্য হলিউড রিপোর্টারের অনুপম চোপড়াকে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি কথা বলেছেন সিনেমা ও ব্যক্তিগত জীবনের নানা প্রসঙ্গ নিয়ে। তামিল চলচ্চিত্রজগতের পরিবেশ কতটা কঠিন—এমন প্রশ্নে নয়নতারা বলেন, ‘খুব কঠিন। কিন্তু মাঝেমধ্যে এতটাই হাস্যকর লাগে যে হেসে ফেলতে হয়। সমালোচনা ও ট্রলিং তো আছেই, তবে আরও আছে কিছু ইউটিউবার, যাদের আসলে কোনো কাজ নেই। শুধু গসিপ বানানোই তাদের পেশা আর যাঁদের নিয়ে গসিপ করে, তাঁরা কিন্তু সত্যিকারের কাজ করেন।’ সাক্ষাৎকারে তাঁকে নিয়ে ভুয়া খবর প্রসঙ্গে ক্ষোভ উগড়ে দেন অভিনেত্রী।

নয়নতারা। ইনস্টাগ্রাম থেকে

তিনি বলেন, ‘ওরা (ইউটিউবার) সব সময়ই আমার বিষয়ে কথা বলে। ৫০টা পর্ব করলে ৪৫টাই আমাকে নিয়ে। একসময় আমিই খোঁজ নিয়েছিলাম, কেন আমাকে এত টার্গেট করে? তারা সরাসরি বলেছে, আমার নাম নিলে নাকি ভিউ আসে আর সেই ভিউ থেকেই তারা টাকা কামায়!’
সাক্ষাৎকারে নয়নতারা আরও বলেছিলেন, ‘ওদের কথা সিরিয়াসলি নেওয়ার দরকার নেই। তারা এমনভাবে কথা বলে, যেন আমার জীবনে যা যা হয়েছে, পাশে থেকে দেখেছে। সব বানানো গল্প। অন্তত হোমওয়ার্ক তো করবে! ভিউয়াররাও ওদের মতোই—মজার মানুষ। যে সিরিয়াস বা বুদ্ধিমান দর্শক, সে এসব দেখে না।’

আইএমডিবি, দ্য হিন্দু, ডেকান ক্রনিকল, ইন্ডিয়া টুডে অবলম্বনে