ফাওয়াদ-মাহিরার সিনেমা দেখা যাবে না ভারতে, কঠোর পদক্ষেপ দিল্লির

এবার পাকিস্তানি শিল্প ও সংস্কৃতিকে লক্ষ্য করে বড় পদক্ষেপ নিল দিল্লিপ্রযোজনা সংস্থার ফেসবুক থেকে

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার কূটনৈতিক টানাপোড়েন আরও তীব্র রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক হামলার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এবার পাকিস্তানি শিল্প ও সংস্কৃতিকে লক্ষ্য করে বড় পদক্ষেপ নিল দিল্লি। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছে, ভারতে পাকিস্তানি সিনেমা, ওয়েব সিরিজ, গান, পডকাস্টসহ সব ধরনের ডিজিটাল কনটেন্ট প্রচার অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা ও সামাজিক সংহতির স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নির্দেশনাটি দেশের সব ওটিটি এবং ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এমনকি যেসব গ্রাহক আগে সাবস্ক্রিপশন নিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে।

আরও পড়ুন

এর আগে ভারত সরকার সীমান্ত উত্তেজনার সময় একাধিকবার পাকিস্তানি শিল্পীদের কাজ থেকে বিরত রাখতে বলেছিল। এবার তা আরও বড় পরিসরে কার্যকর হলো। জানা গেছে, চলমান নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছেন জনপ্রিয় পাকিস্তানি শিল্পী ফাওয়াদ খান, মাহিরা খান, আতিফ আসলাম, হানিফ আমিরসহ আরও অনেকে। ফাওয়াদ খান অভিনীত ও বলিউড অভিনেত্রী বাণী কাপুরের সঙ্গে অভিনীত আসন্ন ছবি ‘আবির গুলাল’-এর মুক্তি এই নিষেধাজ্ঞার জেরে স্থগিত হয়ে গেছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার  বলেন, ‘কাশ্মীরের পেহেলগামে যে ধরনের জঘন্য হামলা হয়েছে, তাতে সরকারের মনোভাব পরিষ্কার—যেসব ক্ষেত্র দিয়ে ভারতের জনজীবনে প্রভাব ফেলতে পারে পাকিস্তানি প্রচারযন্ত্র, সেসব পথ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে। বিনোদন সেই মাধ্যমগুলোর একটি।’
গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে এক সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারান ২৭ জন সাধারণ মানুষ। হামলার পর থেকেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেয় ভারত। তারই ধারাবাহিকতায় ৬ মে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে একটি সামরিক অভিযান চালিয়ে পাকিস্তানের ভেতরে হামলা চালায় ভারতের সেনাবাহিনী।

এরই মধ্যে ভারতীয় প্রশাসনের নজরে আসে পাকিস্তানি কনটেন্ট ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন ওটিটি ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে। দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। এমনকি কিছু পাকিস্তানি শিল্পীর ইউটিউব চ্যানেল ও ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টও ভারতে নিষিদ্ধের প্রক্রিয়ায় রয়েছে বলে জানা গেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই নিষেধাজ্ঞা দুই দেশের সাংস্কৃতিক বিনিময়ে বড় প্রভাব ফেলবে। বলিউড ও লাহোরের চলচ্চিত্র জগতের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই অদৃশ্য একটি সেতুবন্ধ কাজ করত, বিশেষ করে সংগীত ও অভিনয়ের ক্ষেত্রে। কিন্তু বর্তমানে তা সম্পূর্ণ ছিন্ন করার পথে এগোচ্ছে ভারত।

এদিকে ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলোর একটি অংশ জানিয়েছে, সরকার থেকে পাওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে।
সরকারি সূত্র বলছে, ভবিষ্যতে যদি পরিস্থিতির উন্নতি ঘটে, তবে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে। তবে আপাতত পাকিস্তানি সিনেমা, ওয়েব সিরিজ, গান এবং পডকাস্ট—কোনো কিছুই ভারতে দেখা যাবে না।