৩০ বছর স্বামীর অত্যাচার! পর্দার আড়ালে নায়িকার কষ্টের গল্প

রতি অগ্নিহোত্রী। আইএমডিবি

ভারতের সিনেমার ইতিহাসে রতি অগ্নিহোত্রী এক উজ্জ্বল তারকা। কিন্তু ঝলমলে রুপালি পর্দার আড়ালে লুকিয়ে আছে অসীম ধৈর্য, ত্যাগ ও কষ্টের গল্প। সিনেমার অভিনেত্রীকে চিনলেও ব্যক্তি রতি অগ্নিহোত্রী রয়ে গেছেন আড়ালেই।

অভিনয় ও মডেলিং শুরু
১৯৬০ সালের ১০ ডিসেম্বর উত্তর প্রদেশের বেরেলি শহরে জন্ম রতি অগ্নিহোত্রীর। অল্প বয়স থেকেই অভিনয় ও মডেলিংয়ের প্রতি তাঁর গভীর আগ্রহ ছিল। মাত্র ১০ বছর বয়সে তিনি মডেলিং শুরু করেন এবং ১৯ বছর বয়সে তামিল সিনেমা ‘পুথিয়া ভারপুগাল’ দিয়ে অভিনয়ে আত্মপ্রকাশ করেন। একই বছর তিনি ‘নিরাম মারাথা পুক্কাল’-এও  কাজ করেন, যা তাঁকে দক্ষিণি সিনেমার দুনিয়ায় পরিচিতি এনে দেয়।

দক্ষিণি সিনেমা থেকে হিন্দি সিনেমার জগতে
রতি তামিল ও তেলেগু সিনেমায় কাজ করার পর ১৯৮০ সালে কন্নড় সিনেমা করেন। এরপর ১৯৮১ সালে হিন্দি সিনেমা ‘জি কা আরজু’তে অভিনয় শুরু করেন মিঠুন চক্রবর্তী সঙ্গে। পরবর্তী বছরগুলোতে ‘এক দুজে কে লিয়ে’, ‘তাওয়াইফ’, ‘কুলি’, ‘হাম তুম’, ‘শাদি কা সাইড ইফেক্ট’ ইত্যাদি হিট সিনেমা করেন।

রতি অগ্নিহোত্রী। আইএমডিবি

বিয়ে ও বিরতি
১৯৮৫ সালে রতি মুম্বাইয়ের ব্যবসায়ী অনিল বীরওয়ানিরকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তিনি সিনেমা থেকে বিরতি নেন। তিনি এতটাই অনিলকে ভালোবাসতেন যে নিজের ক্যারিয়ারকে তিনি তুচ্ছ মনে করে সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দেন।

আরও পড়ুন

৩০ বছরের কষ্ট ও সহিংসতা
১৯৮৬ সালে তাঁদের এক ছেলে জন্মগ্রহণ করেন, নাম রাখা হয় ‘তনুজ’। কিন্তু সুখী দাম্পত্যের মধ্যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ফাটল ধরতে শুরু করে। অনিল শারীরিক ও মানসিকভাবে রতিকে অত্যাচার করা শুরু করেন। এই কষ্ট এবং সহিংসতা চলতে থাকে ৩০ বছর ধরে।

ভয় এবং পুলিশের সহায়তা
২০১৫ সালের ৭ মার্চ রতি অবশেষে স্বামী অনিলের বাড়ি ছাড়েন। দীর্ঘ তিন দশক সহিংসতার শিকার হওয়ার পর ২০১৫ সালে তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। রতি স্পষ্ট করেন, তিনি নিজের জীবন রক্ষা করতে বাধ্য হয়েছিলেন, কিন্তু তিন দশক ধরে তিনি সহ্য করেছিলেন শুধু তাঁর সন্তানের জন্য।

রতি অগ্নিহোত্রী। আইএমডিবি

ছেলের জন্য কষ্ট
রতি অগ্নিহোত্রী বলেন, ‘আমার প্রথম অগ্রাধিকার ছিল আমার ছেলে তনুজ। ছেলের জন্যই আমি ৩০ বছর এই যন্ত্রণা সহ্য করেছি। আমি আশাবাদী ছিলাম, প্রার্থনা করেছি যে পরিস্থিতি পরিবর্তিত হবে, অনিল বদলাবে।’

পরিবারের পুনর্মিলন
পুলিশে অভিযোগ দায়েরের কয়েক মাস পর রতি ও অনিল আবার মিলিত হন, শুধু তাঁদের ছেলের তনুজের জন্য। বর্তমানে তাঁরা সুখী দাম্পত্য জীবন কাটাচ্ছেন। তাঁদের ছেলে তনুজ বীরওয়ানি বর্তমানে টেলিভিশনের পরিচিত অভিনেতা।

তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়াডটকম