ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে বিচ্ছেদের গুঞ্জন, প্রথমবার মুখ খুললেন অভিষেক
দু–এক মাস নয়, প্রায় এক বছর ধরে চলছে ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন আর অভিষেক বচ্চনের বিচ্ছেদের গুঞ্জন। দীর্ঘদিন ধরে এ গুঞ্জন চলার বড় কারণ—দুই তারকার কেউই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেননি। অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন অভিষেক। এক পডকাস্টে হাজির হয়ে প্রথমবারের মতো বিচ্ছেদের গুঞ্জন নিয়ে সরাসরি কথা বললেন অভিষেক।
বিচ্ছেদের গুঞ্জনকে ‘মিথ্যা’ ও ‘বানানো’ বলে অবিহিত করেন অভিষেক বচ্চন। তাঁর ভাষায়, ‘আপনি যদি সেলিব্রিটি হন, মানুষ আপনাকে নিয়ে গল্প তৈরি করবেই। ওরা যা খুশি লিখেছে—সবটাই সম্পূর্ণ মিথ্যা, কোনো তথ্যের ভিত্তি নেই। বিদ্বেষপূর্ণ এবং ভুল। বিয়ের আগেও এরা সিদ্ধান্ত নিচ্ছিল কবে আমাদের বিয়ে হবে, আর বিয়ের পর ঠিক করছিল কবে আমাদের ডিভোর্স হবে! সব বাজে কথা। সে আমার সত্য জানে, আমি তার সত্য জানি। আমরা সুখী, সুস্থ পরিবারে ফিরি—ওটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যদি এসবের মধ্যে কোনো সত্যতা থাকত, তাহলে আমার খারাপ লাগত। কিন্তু লাগে না। সম্মান রেখে বলছি, মিডিয়া অনেক সময়ই ভুল করে।’
‘মিডিয়া দেশের বিবেক’
অভিষেক বচ্চন এই পডকাস্টে আরও বলেন, ‘আমাকে এমনভাবে বড় করা হয়েছে যে মিডিয়াকে দেশের বিবেক মনে করি। তবে দিনের শেষে ভুলে গেলে চলবে না—আপনি কারও সন্তান, কারও বাবা, কারও স্বামী, কারও স্ত্রী সম্পর্কে লিখছেন। দায়িত্ববোধ থাকা জরুরি। আমাকে নিয়ে যা খুশি বলতে পারেন। কিন্তু আমার পরিবারকে নিয়ে বললে তার জবাব পেতে হবে। কোনো মিথ্যা, বানানো বাজে কথা আমি বরদাশত করব না। এখানেই ফুলস্টপ।’
অভিষেক জানান, সবকিছু তিনি ব্যাখ্যা করবেন, এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। ‘আমি যা চাই, যখন চাই, তখন বলব। আমি কখনো ভুল কিছু করিনি। তাই কেন আমাকে দৌড়ে বেড়িয়ে সব পরিষ্কার করতে হবে? যদি দেখি কেউ আমার পরিবার নিয়ে ভুল কথা বলছে, তখনই সংশোধন করব,’ বলেন তিনি।
মেয়ে আরাধ্যর কথা
১৪ বছরের মেয়ে আরাধ্যকে নিয়ে অভিষেক বলেন, ঐশ্বরিয়া তাকে দারুণভাবে বড় করেছেন। ‘আরাধ্য যথেষ্ট পরিণত। সে এসব জানে, তবে সেগুলো তার জীবনে কোনো গুরুত্ব পায় না। তার নিজের ফোন নেই—১৪ বছর বয়স। ওর বন্ধুরা কথা বলতে চাইলে ঐশ্বরিয়ার ফোনে কল করে। এ সিদ্ধান্ত আমরা অনেক আগেই নিয়েছিলাম। ও স্কুল ভালোবাসে এবং বাইরে যা লেখা হয়, সেগুলো বিশ্বাস করে না। তার মা তাকে ঠিকই শিখিয়েছে—সবকিছু পড়লেও সত্যি মনে করা যাবে না। আমাদের পরিবারে সবাই সৎ। আমাদের কাউকে কখনো কারও ওপর প্রশ্ন তুলতে হয়নি,’ ব্যাখ্যা করে বলেন অভিষেক।
প্রথম কোথায় দেখা
এত দিন মনে করা হতো অভিষেক আর ঐশ্বরিয়ার প্রথম দেখা হয় ‘ঢাই অক্ষর প্রেম কি’র সেটে। তবে এদিন ভিন্ন কথা জানান অভিষেক। তিনি জানান, ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে তাঁর প্রথম দেখা হয়েছিল ববি দেওলের সঙ্গে এক ডিনারে। ববি তাঁর ভালো বন্ধু।
অভিষেক আরও জানান, বিয়ের কারণে অভিনেতার ভক্ত-অনুসারী সংখ্যা কমে যায়—এ ধারণা ভিত্তিহীন। অভিষেক বলেন, ‘আমার স্ত্রীই তার প্রমাণ। আমাদের বিয়ের ১৮ বছর হয়ে গেল। আমি কোনো ফ্যান–ফলোয়ার কমতে দেখিনি। এটা মিডিয়ার তৈরি সুবিধাজনক যুক্তিমাত্র।’
বিয়ে মানুষকে বদলায়: অভিষেকের দৃষ্টিভঙ্গি
‘বিয়ে বদলে দেয়। আপনার লক্ষ্য বদলায়, গল্প বদলায়, কারণ বদলায়—তাই সিদ্ধান্তও বদলায়। আমি এখন বাবা। পুরো পরিবারের প্রতি দায়িত্ববোধ কাজ করে—তাই পছন্দ-অপছন্দও সেভাবেই সাজাই। সময়, বয়স, পরিস্থিতি—সব আপনাকে বদলাবে। একজন অভিনেতা কখনো বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো থাকতে পারে না। নিজেকে সবচেয়ে সেরা ভাবলে উন্নতির পথ বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকেই পতন শুরু,’ বলেন অভিষেক।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অবলম্বনে