প্রথমবার নার্ভাস ছিলেন কৃতি
আলোচিত সিনেমা ‘মিমি’র পর কৃতি শ্যাননের ভাগ্যের চাকা অনেকটাই ঘুরে গেছে। এই ছবিতে তাঁর অভিনয় দর্শকের মন ছুঁয়েছে। ‘মিমি’র হাত ধরেই জাতীয় পুরস্কার জয় করেছেন এই অভিনেত্রী। এ ধরনের পুরস্কার জয়ের পর একজন শিল্পীর চাপ অনেকটাই বেড়ে যায়। তবে কৃতি মোটেও কোনো চাপ নিতে রাজি নন। তেরে বাতোঁ মে অ্যায়সা উলঝা জিয়া ছবির ট্রেলার মুক্তির অনুষ্ঠানে এই ছবি ছাড়া আরও অনেক কথা বলেছেন এই বলিউড তারকা।
মুম্বাইয়ের এক মাল্টিপ্লেক্সে মুক্তি পেয়েছে শহীদ কাপুর আর কৃতি শ্যানন অভিনীত ‘তেরে বাতোঁ মে অ্যায়সা উলঝা জিয়া’ ছবির ট্রেলার। পরিচালক অমিত যোশি আর আরাধনা শাহর এই ছবিতে কৃতিকে রোবটের চরিত্রে দেখা যাবে। আর শহীদ কাপুর সাধারণ মানুষ। মানুষ আর রোবটের প্রেমকাহিনি নিয়ে ছবি আনছেন প্রযোজক দিনেশ ভিজান। ট্রেলারে শহীদ আর কৃতির রোমান্স দর্শকের মধ্যে সাড়া ফেলেছে।
শহীদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গে কৃতি বলেন, ‘সত্যি বলতে, এই প্রথম আমি কোনো অভিনেতার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে নার্ভাস ছিলাম, আর সে হলো শহীদ। বিশেষ করে তার সঙ্গে নাচ করার সময় আমি নার্ভাস হয়ে পড়েছিলাম। অবশ্য সবাই আমাদের রসায়নের প্রশংসা করছেন। আসলে অনেক সময় কারও সঙ্গে আগে দেখা না হলেও চটজলদি এক রসায়ন তৈরি হয়ে যায়। আমি শহীদের সঙ্গে আগে কখনো কথা বলিনি। আমাদের শুধু দেখাসাক্ষাৎ হয়েছিল। কিন্তু শহীদের সঙ্গে রসায়ন তৈরি হতে সময় লাগেনি। পর্দায় আমাদের একসঙ্গে দেখে দারুণ লাগছে। আগামী দিনে আবার তার সঙ্গে ছবি করতে চাই। আর শহীদ অত্যন্ত বুদ্ধিমান ছেলে। আমরা দুজন দারুণ মজা করে কাজ করেছি। শুটিংয়ের সময়টা আমাদের বেশ আনন্দে কেটেছে।’
এক দিনের জন্য আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ পেলে তিনি কী করবেন, এমন প্রশ্ন করা হয় কৃতিকে। হাসতে হাসতে শহীদের দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘আমি তার মাথার ভেতরে ঢুকতে চাই। আমি জানতে চাই যে তার মাথার ভেতরে কী চলছে। এত দিন একসঙ্গে কাজ করেও কিছু বুঝতে পারিনি।’ এদিকে পাশে বসা শহীদ একই প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমি যে ৩৫-৩৬টি ছবিতে কাজ করেছি, সেসব ছবি ব্লকবাস্টার বানাতে চাই। দেখুন, অতীতকে ঘিরে কিছু করতে পারি না আমরা। ভবিষ্যৎকে হয়তো একটু হলেও নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি। তাই অতীতকে ঝকঝকে করে তুলতে চাই।’
ম্যাডডক ফিল্ম প্রযোজিত ‘মিমি’ ছবিতে অভিনয় করে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন কৃতি, এবারও আবার ম্যাডডক ফিল্মের এই ছবিতে তিনি। তাই কোথাও কি কৃতি চাপ অনুভব করছেন? অভিনেত্রী মাথা নেড়ে জবাব দেন, ‘না না, একদমই নয়। অনুগ্রহ করে আমাকে এসব চাপ দেবেনই না। আমি মনে করি যে একটি ছবি অপর ছবি থেকে আলাদা হয়। তবে নিশ্চয় আমি নিজেকে আশীর্বাদধন্য মনে করি যে আমার এই ছোট ক্যারিয়ারের মধ্যে এত বড় পুরস্কার জয় করেছি। তবে আমি মনে করি, আমাকে অনেক লম্বা পথ চলতে হবে।’
এই প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক অনেক পুরোনো আর গভীর। ম্যাডডক ফিল্মের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার দারুণ লাগে যে ওরা আমাকে সব সময় চ্যালেঞ্জিং কিছু দিয়েছে। আর তারা আমাকে এমন সব ছবির প্রস্তাব দিয়েছে, যার কোনো রেফারেন্স পয়েন্ট নেই। আমি সব সময় তাদের সঙ্গে কাজ করতে উপভোগ করেছি।’ এই ছবিতে নিজের অভিনীত চরিত্রের প্রসঙ্গে কৃতি বলেন, ‘ছবিতে আমি রোবটের চরিত্রে অভিনয় করলেও আমার চরিত্রটা মজার। আর এটা খুব সুন্দর এক প্রেমকাহিনি। আমি শহীদের সঙ্গে আট বছর আগেই কাজ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তখন তা সম্ভব হয়নি। এই ছবিতে সেই সুযোগ এল।’
‘তেরে বাতোঁ মে অ্যায়সা উলঝা জিয়া’ ছবিতে শহীদ এক রোবটের প্রেমে পাগল, বাস্তবে তিনি কি কোনো রোবটকে প্রেমের প্রস্তাব দিতে পারবেন? কৌতুকের ছলে করা এমন প্রশ্নের জবাবে মুচকি হেসে অভিনেতা বলেন, ‘কেন নয়? রোবট যদি কৃতি শ্যাননের মতো হয়, তাহলে নিশ্চয়।’
এদিকে কৃতির প্রসঙ্গে শহীদ হাসতে হাসতে বলেন, ‘শুটিংয়ের সময় কৃতি আমার কথা মেনে চলত কিন্তু শট শেষ হলেই সে আমাকে বকাঝকা করত। কৃতি বলত যে আমি রক্তমাংসের মানুষ, তাই আমি অভিব্যক্তি দিতে পারি। কিন্তু সে রোবট বলে কোনো অভিব্যক্তি দিতে পারে না। তাই কৃতি আমার সঙ্গে আরেকটা ছবি করতে চায়, যেখানে সে সব ধরনের অভিব্যক্তি দিতে পারবে।’
তেরে বাতোঁ মে অ্যায়সা উলঝা জিয়া ছবিটি আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাবে।