সালমান-ঐশ্বরিয়ার অতীতের কথাগুলো...

সালমান খান ও ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনফেসবুক থেকে

‘হাম দিল দে চুকে সানাম...’, ‘আলবেলা সাজান...’, ‘চান্দ ছুপা বাদাল মে...’, ‘আখোঁ কি গোস্তাকিয়ান মাফ হো...’, ‘তাড়াপ তাড়াপ…’, এই গানগুলো শুধু যে পর্দার হিরো-হিরোইনের মিষ্টি প্রেমের গল্প তা কিন্তু নয়, জনপ্রিয় এই গানগুলো রিল থেকে রিয়েলও। এটি ধ্রুব সত্যই বটে। ছবিটি যুগ যুগ ধরে সালমান-ঐশ্বরিয়ার ‘এ এক প্রেমকাহিনি’ হয়ে থেকে যাবে ইতিহাসের পাতায়…।

সময়টা ১৯৯৯, সাবেক বিশ্বসুন্দরী ঐশ্বরিয়া রাই আর বলিউডের হিট নায়ক ভাইজান সালমান খান জুটি বাঁধেন নামজাদা পরিচালক সঞ্জয় লীলা বানসালির ‘হাম দিল দে চুকে সানাম’ সিনেমায়। কে জানত, ধীরে ধীরে বানসালির গল্পের মধ্যে জীবনের সত্যিটাই লিখে ফেলবেন এই জুটি। সিনেমার সেটেই শুরু হয়েছিল নায়ক-নায়িকার মিষ্টি প্রেমের রসায়ন, যা তাঁদের অভিনয়েও একেবারে জীবন্ত। ছবি মুক্তির পর চারদিকে শোরগোল। চোখের পলকেই জনপ্রিয়তার শীর্ষস্থানে প্রবেশ করে ‘হাম দিল দে চুকে সানাম’। এরই মধ্যে সালমান-ঐশ্বরিয়াকে নিয়ে শুরু হয়ে যায় চর্চ। রটে যায় চুটিয়ে প্রেম করছেন হিরো-হিরোইন। কিন্তু সে প্রেমই যেন নায়িকার জীবনে ‘শাপে বর’ হয়েছে।

২০০২ আসতে না আসতেই তাঁদের মধ্যে বাড়তে থাকে তিক্ততা। একসময় এমন পরিস্থিতি হয়েছিল যে সালমানকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। ভালোবাসা-ঘৃণার জটিল সমীকরণের মধ্যে পড়ে যান সাবেক বিশ্বসুন্দরী। এই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে বহু চেষ্টাও করেছিলেন সালমান। সম্পর্কের তিক্ততা ধামাচাপা দিতে সে সময় সালমান বলেছিলেন, সব জুটির মধ্যেই ঝামেলা হয়। তবে বেঁকে বসেন ঐশ্বরিয়া। সালমানের বিরুদ্ধে শারীরিক, মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন এই সুন্দরী। পাশাপাশি অকথ্য গালাগাল তো আছেই। ঐশ্বরিয়া যে সত্যি, তার প্রমাণও ছিল হাতেই, শাহরুখ খানের সঙ্গে নায়িকার ‘চলতে চলতে’ সিনেমার সেটেও ঝামেলা বাঁধান সালমান। সে কারণে ছবি থেকেই বাদ পড়েন ঐশ্বরিয়া। তাঁর বদলে রানী মুখার্জিকে নেন পরিচালক।
তখন গুঞ্জন রটেছিল, বিবেক ওবেরয়ের সঙ্গেও প্রেম করছেন ঐশ্বরিয়া। তাঁকেও ফোন করে অকথ্য গালাগাল দেন সালমান। পরে সংবাদ সম্মেলন করে সালমানের দুর্ব্যবহারের কথা জানান বিবেক…।

‘হাম দিল দে চুকে সানাম’ ছবিতে সালমান খান ও ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন
ফেসবুক থেকে

যদিও সেসব এখন পুরোনো। কিন্তু ভালোবাসা দিবস এলেই মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে ঐশ্বরিয়া-সালমানের পরিণতি না পাওয়া প্রেমের গল্প। সিমি গারেওয়ালের সঙ্গে ঐশ্বরিয়ার পুরোনো একটি চ্যাট শো আবার প্রকাশ্যে এনেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমস।

চ্যাট শোতে সালমানের সঙ্গে তিক্ততা, সম্পর্কচ্ছেদ নিয়ে ঐশ্বরিয়াকে প্রশ্ন করেন সিমি। বিশেষ করে ‘চলতে চলতে’ সিনেমার সেটে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা নিয়েও জানতে চান উপস্থাপক। কিন্তু এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকার করেন ঐশ্বরিয়া। বলেছেন, ‘আমার মনে হয়, আমি সেই পাট বহু আগেই বন্ধ করেছি। বিষয়টিকে যেভাবেই হোক না কেন, বিশেষ করে একটি পাবলিক প্ল্যাটফর্মে দেখতে চাই না। সত্যিই চাই না।’

কিন্তু উপস্থাপক সিমিও নাছোড়বান্দা, আবারও প্রশ্ন জুড়ে বলেন, ‘তুমি কি এটা নিয়ে অস্বস্তি বোধ করছ?’ জবাবে বচ্চনবধূ বলেন, ‘এটি অতীতের বিষয়, ওটা ওখানেই রেখে দিতে হবে। কিছু পরিস্থিতি এবং জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে জনসমক্ষে কথা বলা এড়িয়ে চলতেই পছন্দ করি। কারণ, আমি একা থাকি না, আমার সঙ্গে পরিবার, প্রিয়জন আছেন, যাঁদের খুব ভালোবাসি এবং তাঁদের প্রতি আমি খুবই যত্নবান। সুতরাং একটি সুস্পষ্ট সীমানা আছে। সেটি অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই।’

২০০৭ সালে অভিনেতা অভিষেক বচ্চনের সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন ঐশ্বরিয়া। হয়ে যান বচ্চন পরিবারের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন ও সালমান খান
ফেসবুক

একমাত্র কন্যা আরাধ্যাকে নিয়ে সংসার তাঁদের। তবে বিয়ের বহু বছর পরও বর্তমানে বচ্চন পরিবারের সঙ্গে ঐশ্বরিয়ার সম্পর্ক খুব একটা ভালো নেই বলে প্রায়ই গুঞ্জন ওঠে। আর বহু প্রেমের সম্পর্ক জড়ালেও এখনো বিয়ের পিঁড়িতে বসার মতো পাত্রীর সন্ধান পাননি বলিউডের ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ সালমান খান।