ঐশ্বরিয়ার পর একই কারণে এবার আদালতে সালমান

ঐশ্বরিয়া ও সালমানকোলাজ

বলিউডে সালমান খান যেমন একদিকে পর্দার সুপারস্টার, অন্যদিকে আদালতকেন্দ্রিক নানা আলোচনার নাম। তবে এবার ‘ভাইজান’ কোনো ফৌজদারি মামলায় নয়, বরং নিজের অধিকার রক্ষার দাবিতে হাজির হয়েছেন আদালতে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তির অপব্যবহার ঠেকাতে একগুচ্ছ অভিযোগ নিয়ে তিনি গিয়েছেন দিল্লি হাইকোর্টে।
এআই যুগে তারকাদের ছবি, কণ্ঠস্বর ও সংলাপ নকল করে ভুয়া কনটেন্ট তৈরির প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। সালমান খানের অভিযোগও ঠিক সেখানেই। আদালতে তিনি জানান, তাঁর অনুমতি ছাড়াই ছবি, ভিডিও, কণ্ঠস্বর, সংলাপ এমনকি নাচের স্টেপ ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের বাণিজ্যিক কনটেন্ট তৈরি ও প্রচার করা হচ্ছে। এতে তাঁর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে এবং ভক্তদের বিভ্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।

আরও পড়ুন

অভিনেতার আরও অভিযোগ, কিছু ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ও গোষ্ঠী তাঁর পরিচয় ও জনপ্রিয়তা ব্যবহার করছে অনুমতি ছাড়াই। এটি তাঁর ব্যক্তিগত অধিকার ও প্রচারের অধিকারের ওপর গুরুতর হস্তক্ষেপ বলেও আদালতে উল্লেখ করেন সালমান খান।

সালমান খান
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

সালমান খানের আবেদনের পর দ্রুত পদক্ষেপ নেয় দিল্লি হাইকোর্ট। আদালত নির্দেশ দেন, তাঁর ছবি, কণ্ঠস্বর, ভিডিও, বিখ্যাত সংলাপ কিংবা নাচের ভঙ্গি ব্যবহার করে কোনো ধরনের কনটেন্ট তৈরি বা বাণিজ্যিক ব্যবহার করা যাবে না। সংশ্লিষ্ট ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ও পক্ষগুলোকে অভিনেতার আবেদনের সঙ্গে সংগতি রেখে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এই রায়ের ফলে সালমান খানের নাম ও পরিচয় ব্যবহার করে এআই-নির্ভর ভুয়া কনটেন্ট তৈরি কার্যত নিষিদ্ধ হলো—যা এত দিন অনলাইনে প্রায় সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছিল।

সালমান খান ও ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন
ফেসবুক থেকে

এর আগে একই ধরনের অভিযোগ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সালমান খানের সাবেক প্রেমিকা ও অভিনেত্রী ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন। তাঁর ক্ষেত্রেও অনুমতি ছাড়াই ছবি বিকৃত করে অনলাইনে ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। সে মামলার রায় ঐশ্বরিয়ার পক্ষেই গিয়েছিল।
শুধু ঐশ্বরিয়া বা সালমান নন—এআই ও ডিপফেক প্রযুক্তির অপব্যবহার ঠেকাতে সাম্প্রতিক সময়ে আদালতে গেছেন কণ্ঠশিল্পী কুমার শানু, আশা ভোসলে, অভিনেত্রী শিল্পা শেঠি এবং অনিল কাপুরের মতো জনপ্রিয় তারকারাও। তাঁদের অভিযোগেও আদালত ব্যক্তিগত মর্যাদা ও গোপনীয়তার প্রশ্নকে গুরুত্ব দিয়েছেন।

এর আগে বিভিন্ন মামলার রায়ে আদালত স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ডিপফেক ভিডিও, এআই দিয়ে তৈরি ছবি বা ভুয়া বিজ্ঞাপন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এগুলো ব্যক্তির মর্যাদা, গোপনীয়তা এবং প্রচারের অধিকার লঙ্ঘন করে।

সালমান খান
এএনআই

চলচ্চিত্র সমালোচকদের মতে, সালমান খানের এই আইনি পদক্ষেপ শুধু তাঁর ব্যক্তিগত সুরক্ষার জন্য নয়, বরং ভবিষ্যতে এআই অপব্যবহারের বিরুদ্ধে তারকাদের আইনি লড়াইয়ের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির হয়ে থাকবে।