সিডনিতে সুরের মায়াজালে আটকে যাওয়া এক সন্ধ্যা
সিডনিতে হিউবার্ট খোকনের সুরের মায়াজালে যেন আটকে গেল এক সন্ধ্যা। তাঁর গানের প্রতি শ্রোতাদের কৌতূহল ছিল; তিনি কেমন করেন, তা নিয়ে দ্বিধাও হয়তো ছিল। তবে গত শনিবার সন্ধ্যায় সেই কৌতূহল আর দ্বিধা মুছে দিয়ে খোকনের কণ্ঠে মঞ্চে হাজির হলো একের পর এক শ্রোতাপ্রিয় গান; আর সিডনির এটাক সন্ধ্যা যেন হারিয়ে গেল সুরের মায়াজালে।
সিডনির রিয়েলহোম প্রপার্টিজের উদ্যোগে আয়োজিত হয় সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ‘আমি বাংলায় গান গাই’। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে প্রেক্ষাগৃহপূর্ণ দর্শকের সামনে হিউবার্ট খোকনের দরাজ ও সুললিত কণ্ঠে প্রাণ পেয়েছে ‘আমি এক যাযাবর’, ‘চোখের নজর’, ‘আমি বাংলায় গান গাই’ কিংবা ‘এই পথ যদি না শেষ হয়’-এর মতো চিরন্তন বাংলা গান।
আর পুরো অনুষ্ঠানে সংগীতের আবহ তৈরি করেছেন সোহেল খান, শাহরিয়ার জামাল, খালিদ, নীলাদ্রি চক্রবর্তী, রোমেল হাসান, অভিজিৎ, ফাবিহা সিদ্দিকী। আর নৃত্যে অনবদ্য ছিলেন অর্পিতা সোমচৌধুরী। ফাবিহার গাওয়া ‘কী মায়ায় বেঁধেছ আমায়’ কিংবা নীলাদ্রির ‘তোমার ভুবনে ফুলের মেলা’ গানগুলো যেন নতুন প্রাণ পেয়েছে সিডনির মঞ্চে।
অনুষ্ঠানের সবচেয়ে আবেগঘন মুহূর্ত ছিল খোকনের কন্যা মৌকে স্মরণ করে তাঁর দ্বৈত পরিবেশনা ‘আয় খুকু আয়’। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক সিডনিপ্রবাসী বাংলাদেশের নাট্যজন জন মার্টিনের হাস্যরসাত্মক অথচ তীক্ষ্ণ উপস্থাপনা, শব্দের ফাঁকে ফাঁকে খুনসুটি আর স্মৃতিচারণা—সব মিলিয়ে পরিবেশটি ছিল যেন ঘরোয়া অথচ পরিপূর্ণ।
সিডনির পেশাদার চিত্রগ্রাহক এডওয়ার্ড অধিকারী বললেন, ‘এই শহরে বহু অনুষ্ঠান দেখেছি, কিন্তু এমনভাবে মোহে বাঁধা পড়া অনুষ্ঠান খুব কম দেখেছি।’
রিয়েল এস্টেট পেশায় কাজ করা ডেরিক গমেজ বলেন, ‘এই আয়োজন শুধু গান নয়, আমাদের শিকড়ে ফেরার ডাক। বাংলা ভাষা, গান, কবিতা—এসবের মধ্যেই আছে আমাদের অস্তিত্ব।’