সমালোচনা প্রভাবিত করে না
এক দশক পর রুপালি পর্দায় ফিরেছেন অভিনেত্রী গীতা বসরা। ভারতীয় ক্রিকেটার হরভজন সিংকে বিয়ে করে গ্ল্যামার–দুনিয়া থেকে নিজেকে এত দিন দূরে রেখেছিলেন তিনি। শুধু অভিনয় নয়, এখন সঞ্চালকের ভূমিকাতেও জনপ্রিয়তা পাচ্ছেন গীতা। দৈনিক পত্রিকা অমর উজালায় এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানিয়েছেন দীর্ঘ সময় ধরে বলিউডের ঝলমলে দুনিয়া থেকে তাঁর অন্তরালে থাকার কারণ।
২০০৬ সালে ‘দিল দিয়া হ্যায়’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক। আদিত্য দত্ত পরিচালিত ছবিটিতে গীতার বিপরীতে ছিলেন ইমরান হাশমি। এরপর দ্য ট্রেন ছবিতে আবার ইমরানের সঙ্গে জুটি বাঁধেন। দুই ছবিতেই নজর কেড়েছিলেন গীতা। অভিনয়ের চেয়ে অবশ্য তাঁর সৌন্দর্য নিয়েই আলোচনা হয় বেশি। ২০১৫ সালে ‘সেকেন্ড হাজব্যান্ড’ সিনেমায় তাঁকে শেষ রুপালি পর্দায় দেখা গিয়েছিল। রোমান্টিক কমেডি ছবিতে গীতার স্বামী তথা ক্রিকেটার হরভজন সিংকে ক্যামিও হিসেবে দেখা গিয়েছিল। ২০২৫ সালে পাঞ্জাবি ছবি মেহর দিয়ে আবার বড় পর্দায় ফিরলেন গীতা। পাশাপাশি হরভজনের সঙ্গে টক শো ‘হুজ দ্য বস’-এও সঞ্চালনা করছেন অভিনেত্রী।
দর্শকের ভালোবাসা, বক্স অফিসে ব্যর্থতা
কামব্যাক ছবি মেহর-এর মাধ্যমে দর্শকের প্রচুর ভালোবাসা পেয়েছেন গীতা। কিন্তু পাঞ্জাবি ছবিটি বক্স অফিসে সেভাবে সাড়া পায়নি। ছবির প্রসঙ্গে অভিনেত্রীর ভাষ্য, ‘এটা এক পারিবারিক সিনেমা। এতে আবেগ, রোমান্স, ড্রামা—সবকিছু ভরপুর আছে। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, দর্শকের ভালোবাসা আর বক্স অফিসের অঙ্ক সমান নয়। আসলে ছবিটি যখন মুক্তি পেয়েছে, তখন পাঞ্জাবের অবস্থা ভালো ছিল না। জানতাম যে মেহর মুক্তির জন্য এটা সঠিক সময় নয়। কিন্তু সিনেমাটা দুর্দান্ত। আমার প্রত্যাবর্তনের জন্য এর চেয়ে ভালো সুযোগ আর হতে পারত না।’
২০১৫ সালে ক্রিকেটার হরভজন সিংকে বিয়ে করেছিলেন গীতা। ২০১৬ সালে তাঁর কোল আলো করে আসে মেয়ে হিনায়া। আর ২০২১ সালে পুত্রসন্তান জোভানের জন্ম দিয়েছেন অভিনেত্রী। প্রায় এক দশক ধরে নিজেকে ছায়াছবির জগৎ থেকে দূরে রেখেছিলেন গীতা। জেনেবুঝেই কি এত দিন দূরে থাকার সিদ্ধান্ত? গীতার জবাব, ‘আসলে জীবনে আলাদা আলাদা অধ্যায় হয়। কখনো কোনো অধ্যায় জীবনের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়। আমার কাছে আমার পরিবার সবার আগে ছিল। আমার ছেলেমেয়েরা ছোট ছিল। বিয়ের পর পরিবারকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। বাচ্চারা এখন বড় হয়েছে, তাই এখন নিজের জন্য সময় পাচ্ছি। আমি এখন পুরোদমে কাজ করতে শুরু করেছি। আর এই প্রক্রিয়াকে উপভোগ করছি।’
নতুন পথচলা
‘হুজ দ্য বস’ টক শোতে সঞ্চালকের ভূমিকায় দারুণ সফলতা পাচ্ছেন গীতা। স্বামীর সঙ্গে নতুন এ ভূমিকাকে কেমন উপভোগ করছেন, জানালেন সেটাও, ‘শো সঞ্চালনা আমার জন্য একদম নতুন অভিজ্ঞতা। নতুন এ ভূমিকায় আমি খুবই খুশি। সঞ্চালনার কাজ আমি দারুণ পছন্দ করছি। কৃত্রিমতার কোনো স্থান এখানে নেই। আমাদের শোতে সম্পর্ক নিয়ে কথাবার্তা হয়। হাসি-মজা, ভালোবাসা আর মাসালায় ভরা আমাদের এই শো। অভিনয় আমার প্রথম ভালোবাসা নিশ্চয়। তবে এই শো সঞ্চালনার মাধ্যমে নানা ধরনের দর্শকের সংস্পর্শে আসতে পারছি।’
অভিনেত্রী হিসেবে মোটামুটি জনপ্রিয় ছিলেন গীতা। তবে দেশের খ্যাতনামা ক্রিকেটারের স্ত্রী হওয়ার সুবাদে এ জনপ্রিয়তা আরও বেড়ে গেছে। অভিনেত্রীর ভাষ্যে, ‘জনপ্রিয়তা তো আছেই। তবে মন্দ দিকও আছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মানুষ আগেভাগে না ভেবে মতামত দিয়ে দেয়। কখনো কখনো অকারণে কারও বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে। তবে কোনো রকম সমালোচনা আমাদের প্রভাবিত করে না। আমরা এসব গায়ে মাখি না। নিজের জীবন, পরিবার আর কাজের প্রতি মন দেওয়া জরুরি।’
অভিনেতা বনাম অভিনেত্রী
পুরুষ অভিনয়শিল্পীদের তুলনায় নারী অভিনয়শিল্পীদের বেশি সমালোচনার মুখে পড়তে হয়, এ কথা মানতে নারাজ গীতা। তাঁর মতে, ‘মানুষ পছন্দ করলে প্রশংসা করবে, না হলে সমালোচনা করবে। এখানে আপনি অভিনেতা না অভিনেত্রী, তা গুরুত্ব পায় না। ওটিটি আসার পর অনেক বদল এসেছে। তারকা–শক্তি এখন আগের মতো নেই। অভিনেত্রীদের গুরুত্ব এখন অনেক বেড়ে গেছে।’