‘না’ বলার সাহস দেখিয়েছি
‘আগলি, ‘হেট স্টোরি ২’, ‘পার্চড’ দিয়ে আলোচনায় আসেন সুরভিন চাওলা। এরপর ‘রানা নাইডু ২’, ‘মান্ডালা মার্ডারস’, ‘আন্ধেরা’য় দুর্দান্ত অভিনয়ে আবারও প্রমাণ করেছেন নিজের প্রতিভা। আবেদনময়ী চরিত্র হোক কি ‘সিরিয়াস’ কিংবা খল—সবখানেই তিনি সাবলীল। ছোট পর্দা থেকে ওটিটি—সর্বত্রই সমানভাবে পরিচিত এক নাম।
ক্যারিয়ারের শুরুতে মূলত আবেদনময়ী চরিত্রে দেখা গেলেও সময়ের সঙ্গে বদলেছে তাঁর অভিনয়ের জগৎ। এখন তিনি সাহসী, জটিল, ব্যতিক্রমী কিংবা শক্তিশালী চরিত্রে দর্শকের সামনে হাজির হন।
প্রতিটি চরিত্রেই যেন নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করেন। তাই আজ আর শুধু নায়িকা হিসেবেই নন, অভিনয়দক্ষতায় বলিউড ও ওটিটি–দুনিয়ার অন্যতম শক্তিশালী ‘উপস্থিতি’ হয়ে উঠেছেন সুরভিন। নবভারত টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি চরিত্র বাছাই, টাইপকাস্টের প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসা এবং ব্যক্তিগত জীবনের অগ্রাধিকার বিষয়ে খোলামেলা অনেক কথা বলেছেন সুরভিন।
চরিত্র নির্বাচন প্রসঙ্গে সুরভিন বলেন, ‘আমার কাছে সব সময় অদ্ভুত অদ্ভুত চরিত্রের প্রস্তাবই আসে বেশি। অথচ আমার মন চায় নাচগানের হালকা ধাঁচের ছবিতে অভিনয় করতে। পাঞ্জাবি ও অন্যান্য ভাষার অনেক ছবিতে আমি এমন কাজ করেছি। কিন্তু এখন গল্পের ধারা বদলে গেছে, ডার্ক কনটেন্ট বেশি তৈরি হচ্ছে। তবে দর্শক হিসেবে আমি হালকা-সরল কাহিনি দেখতে বেশি পছন্দ করি আর এ রকম ছবিতেই অভিনয় করতে চাই।’
শুরুর দিন থেকেই নিরাপদ পথ বেছে নেননি সুরভিন। তাঁর ভাষ্যে, ‘যে চরিত্রে কাজ করবেন, পরবর্তী সময়ে আপনাকে সে রকম কাজই বেশি দেওয়া হবে। আমি কখনোই নিরাপদ চরিত্রে নিজেকে আটকে রাখিনি। আমার ডিএনএতেই সেটা নেই। ঝুঁকি আছে বলেই কাজটা করতে হবে—এমন ভাবনা সব সময়ই ছিল। এখন কাজের পাশাপাশি সন্তান ও পরিবার সমানভাবে গুরুত্ব পায়। এখন এমন কাজ করতে চাই, যা আমাকে আনন্দ দেবে। অনেক দিন পর সন্তানের সঙ্গে দেখা হওয়ার যে অনুভূতি, কাজ নিয়েও আমি যেন সে রকম উত্তেজনা ও চমক ধরে রাখতে পারি।’
বলিউডে টাইপকাস্ট থেকে দূরে থাকতে পারায় গর্বিত সুরভিন। বলেন, ‘এখানে শিল্পীদের স্টেরিওটাইপ করার প্রবণতা প্রবল। এর বাইরে থাকতে হলে “না” বলতে জানতে হয়। শুরুতে আমাকেও একই রকম চরিত্রে বেঁধে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি শুরু থেকেই “না” বলার সাহস দেখিয়েছি। একজন নির্মাতার দায়িত্ব হলো অভিনেতাকে ভিন্ন চরিত্রে কল্পনা করা, এক খাঁচায় আটকে রাখা নয়।’
অভিনয় সুরভিনের কাছে শুধু পেশা নয়; বরং আত্মতৃপ্তির জায়গা। তাই একদিকে যেমন অভিনয়ে নতুন চরিত্রে নিজেকে চ্যালেঞ্জ করেন, অন্যদিকে পরিবার ও ব্যক্তিজীবনকেও সমান গুরুত্ব দেন। হয়তো এ কারণেই আজ সুরভিন চাওলা শুধু নায়িকা নন; বরং আলাদা অবস্থান তৈরি করা এক শক্তিশালী শিল্পী।