১ লাখ টাকার স্বপ্ন দেখতেন, তিনিই বন্ধুর জন্য পাঠালেন ২৫ লাখ

বিভিন্ন সিনেমার দৃশ্যে দীপক দোবরিয়াল। কোলাজ

এই সময়ে বলিউডের শক্তিমান অভিনেতাদের কথা উঠলে দীপক দোবরিয়ালের নাম আসে। চরিত্রে ঢুকে যাওয়ার তাঁর অসাধারণ দক্ষতা দর্শকদের বারবার চমকে দিয়েছে। ২০০৬ সালের ‘ওমকারা’য় রাজ্জু চরিত্রে অভিনয়ের পর তিনি প্রথম ব্যাপকভাবে পরিচিতি পান। পরে ‘তনু ওয়েডস মনু’ ছবিতে অভিনয় করে আরও জনপ্রিয় হন। ধীরে ধীরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন শিল্পীর নির্ভরযোগ্য ও শক্তিশালী চরিত্রাভিনেতা হিসেবে।

কিন্তু সাফল্যের এই পথচলার আগের গল্পটা ছিল একেবারেই ভিন্ন। অল্পে বড় হওয়া দীপকের একসময়কার বড় স্বপ্নই ছিল ১ লাখ রুপি আয় করা। সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ার পর তিনি শুধু নিজের জীবনই বদলাননি, বদলে দিয়েছেন সবচেয়ে কাছের মানুষের জীবনও। সম্প্রতি অভিনেতা মানু ঋষি চাড্ডা এক পডকাস্টে সেই গল্পই শোনালেন। বললেন দীপকের উদারতা আর এক মৃত্যুপথযাত্রী বন্ধুকে বাঁচাতে তাঁর জীবনের অন্যতম বড় সিদ্ধান্তের কথা।

দীপক দোবরিয়াল। ইনস্টাগ্রাম থেকে

পডকাস্ট সিন কেয়া হ্যায়-এ মানু ঋষি বলেন, ‘আমরা দুজন সম্পূর্ণ আলাদা পরিবেশে বড় হয়েছি। দীপকের বাবা ছিলেন সরকারি চাকুরে, আর আমি ছিলাম এক দোকানদারের ছেলে। আমার কাছে সব সময় কিছু না কিছু টাকা থাকত, কিন্তু দীপকের কাছে থাকত না। একদিন সে আমাকে বলেছিল—“চাড্ডা, যেদিন আমি ১ লাখ রুপি আয় করব, সেদিন নিজেকে তারকা মনে করব!”’

মানু ঋষি বলেন, ‘অবশেষে সেই দিন এল—দীপক ১ লাখ রুপি পেল, আর তখন থেকেই তার জীবন বদলাতে শুরু করল। অথচ সেই সময় আমার নিজের কাছে এক টাকা ছিল না। আমি তাকে ফোন করে জিজ্ঞেস করলাম, অ্যাডের পেমেন্ট পেয়েছ? চাইলে সে মিথ্যে বলতে পারত, কিন্তু বলেনি। সে সঙ্গে সঙ্গেই বলল—হ্যাঁ, পেয়েছি। আমি তাকে ১০ হাজার টাকা ধার চাইলে সে সঙ্গে সঙ্গে পাঠিয়ে দিল। এরপর সে জিজ্ঞেস করল, “বাড়ির ভাড়া দিতে হবে?” আমি বললাম, না! আসলে আমি দামি জুতা আর জামা কিনতে চেয়েছিলাম!’

আরও পড়ুন

এরপর মানু ঋষি আরও আবেগঘন একটি ঘটনার কথা শোনালেন—যখন দীপক নিজের সামর্থ্যের সবটা দিয়ে একজন বন্ধুর জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন।

দীপক দোবরিয়াল। আইএমডিবি

তিনি বলেন, ‘আমাদের এক বন্ধু তখন লিভারের সমস্যার কারণে মৃত্যুর মুখে। আমরা সবাই মিলে তার চিকিৎসার জন্য অর্থ জোগাড় করার চেষ্টা করছিলাম। আমি দীপককে ফোন করে বিষয়টা বুঝিয়ে বললাম। সে সঙ্গে সঙ্গে স্মরণ করল, কঠিন সময়টায় এই বন্ধুই তাকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছিল। দীপক জিজ্ঞেস করল, “কত টাকা লাগবে?” আমি বললাম, ২৫ লাখ। সে এক মুহূর্ত দেরি না করে বলল, “পুরোটা আমি দিচ্ছি।” আর পাঁচ মিনিটের মধ্যেই সে ২৫ লাখ টাকা ট্রান্সফার করে দিল।’

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অবলম্বনে