জানা গেল রাজামৌলির ছবির নাম, থাকছেন মহেশ বাবু-প্রিয়াঙ্কা
অবশেষে প্রকাশ্যে এল এস এস রাজামৌলির বহুল প্রতীক্ষিত ছবির প্রথম ঝলক। গত শনিবার হায়দরাবাদের রামোজি ফিল্ম সিটিতে ‘বাহুবলী’ নির্মাতা উন্মোচন করলেন তাঁর নতুন ছবির নাম, টিজার ও পোস্টার। বহুল প্রতীক্ষিত এ ছবির নাম ‘বারাণসী’। ছবিতে জুটি বাঁধছেন দক্ষিণি সুপারস্টার মহেশ বাবু ও প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। খল চরিত্রে থাকছেন দক্ষিণের আরেক জনপ্রিয় অভিনেতা পৃথ্বীরাজ সুকুমারন। পাশাপাশি দর্শকদের সামনে তুলে ধরা হয় মহেশ বাবুর প্রথম লুক। পর্দায় বারাণসীর জমকালো পোস্টার ভেসে উঠতেই মুহূর্তে পুরো প্রেক্ষাগৃহে ছড়িয়ে পড়ে উচ্ছ্বাস। জনসমুদ্র, আতশবাজির ঝলকানি, অগণিত মানুষের আবেগ-ভালোবাসা আর দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমের উপস্থিতি—সব মিলিয়ে এটি হয়ে ওঠে উৎসবের রাত। এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ৫০ হাজারের বেশি মানুষ।
প্রিয়াঙ্কার অভিষেক
‘বারাণসী’র মাধ্যমে তেলেগু ছবির জগতে পা রাখছেন প্রিয়াঙ্কা। এদিনের জমকালো আয়োজনে একরাশ উচ্ছ্বাস নিয়ে তিনি বলেন, ‘আজকের দিনটি একদম অন্য রকম। ভক্তদের ভালোবাসাই আমাদের এখানে নিয়ে এসেছে। ভারত থেকে শুরু করে সারা বিশ্বের মিডিয়া—সবাইকে জানাই ধন্যবাদ। এই দেশে সিনেমা সত্যিই উৎসবের মতো উদ্যাপিত হয়।’
তেলেগু ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে পেরে নিজের আনন্দের কথাও জানান প্রিয়াঙ্কা, ‘আমি বলেছি, আবারও বলব, তেলেগু সিনেমায় যুক্ত হওয়ার সর্বোত্তম উপায় হলো কিংবদন্তিদের সঙ্গে কাজ করা।’ মহেশ বাবুর হাজার হাজার দর্শকের উদ্দেশে প্রিয়াঙ্কা কৌতুক করে বলেন, ‘আপনারা ওনাকে কী বলেন, বব, না লায়ন? আমার কাছে উনি এমবি। অবিশ্বাস্য, কিংবদন্তি মহেশ বাবু।’ এদিনের আসরে মহেশ বাবুর স্ত্রী নম্রতা আর মেয়ে সিতারা উপস্থিত ছিলেন। মহেশ বাবুর পরিবারকে ধন্যবাদ জানিয়ে সাবেক বিশ্বসুন্দরী আরও বলেন, ‘নম্রতা ও সিতারা আমাকে এমনভাবে আপন করে নিয়েছেন যে মনে হয়েছে হায়দরাবাদই আমার বাড়ি।’
‘রুদ্র’ লুকে মহেশ বাবু
হাতে ত্রিশূল, পেছনে বাণারসীর মণিকর্ণিকা ঘাট—টিজারে ‘রুদ্র’রূপে ধরা দিয়েছেন মহেশ বাবু। দৃশ্যটি প্রকাশ্যে আসতেই ভক্তদের উত্তেজনা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। সিনেমাটিকে নিজের ‘ড্রিম প্রজেক্ট’ বলে উল্লেখ করেন মহেশ। তাঁর ভাষায়, ‘আমি রাজামৌলিকে গর্বিত করব, সবাইকে গর্বিত করব। “বারাণসী” মুক্তির পর পুরো দেশ গর্ব করবে।’
৬০ দিনের চ্যালেঞ্জ
পরিচালক এস এস রাজামৌলি জানান, মহেশ বাবুর টিজার সিকোয়েন্সটি শুট করতে তাঁদের লেগেছে পুরো ৬০ দিন। ‘প্রতিটি দিনই ছিল নতুন চ্যালেঞ্জ। প্রতিটি অংশ যেন আলাদা একটি ছবি। সবকিছু নতুন করে ভাবতে হয়েছে। আমার বিশ্বাস, এটি ছবির সবচেয়ে স্মরণীয় অংশ হয়ে থাকবে।’
শিশুর মতো
অনুষ্ঠানে রাজামৌলির প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন দক্ষিণি তারকা পৃথ্বীরাজ সুকুমারন। তিনি জানান কীভাবে তাঁকে ছবিতে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়, ‘রাজামৌলির বার্তা পেয়েই লিখেছিলাম, অবশ্যই, স্যার। কিন্তু আমি উত্তেজনায় ভেতরে–ভেতরে কাঁপছিলাম। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই বুঝে গেলাম, অন্য কিছু ঘটতে চলেছে। আমি যেন অভিনেতা থেকে হঠাৎ কমিক বই-পাগল এক শিশুতে পরিণত হয়েছিলাম।’
মহেশ বাবুর রুদ্র রূপ, প্রিয়াঙ্কার প্রত্যাবর্তন আর রাজামৌলির মহাকাব্যিক পরিকল্পনা—সব মিলিয়ে ইতিমধ্যেই বছরের সবচেয়ে আলোচিত প্রকল্পের তালিকায় ঢুকে পড়েছে ‘বারাণসী’। পরবর্তী ঝলক বা ট্রেলার কবে আসছে, সে অপেক্ষায় এখন গোটা ভারতের সিনেমাপ্রেমী মহল। তবে ‘বারাণসী’ ছবির জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হবে। ছবিটি ২০২৭ সালে মকরসংক্রান্তিতে মুক্তি পাবে।