আল্লু অর্জুনের ‘পুষ্পা’র রেকর্ড ভাঙল পবনের ‘ওজি’
দক্ষিণি সিনেমার বাজারে নতুন ঝড় তুলেছে পবন কল্যাণ অভিনীত ছবি ‘দে কল হিম ওজি’। মুক্তির আগেই ছবিটি দর্শকের মধ্যে তুমুল আগ্রহ তৈরি করেছিল। অগ্রিম বুকিংয়ের পরিসংখ্যান প্রমাণ করেছে—পবনের ভক্তরা দীর্ঘদিন ধরেই এ ছবির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অবশেষে সে অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়েছে। মুক্তির দিন থেকেই ছবিটি একের পর এক রেকর্ড গড়ছে। বিশেষ করে প্রিমিয়ার ডের আয় দিয়ে ছবিটি আল্লু অর্জুনের বহুল আলোচিত ছবি ‘পুষ্পা ২: দ্য রুল’-এর রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।
অগ্রিম বুকিং থেকেই রেকর্ড
মুক্তির আগে থেকেই ‘ওজি’ আলোচনায় ছিল। সারা বিশ্বে অগ্রিম বুকিং থেকে ছবিটি আয় করেছে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১১১ কোটি টাকা। শুধু ভারতের বাজারেই মুক্তির আগের দিন রাত পর্যন্ত প্রিমিয়ার শোর অগ্রিম টিকিট বিক্রি থেকে আয় দাঁড়ায় প্রায় ৩০ কোটি টাকা, যা দক্ষিণি সিনেমার ইতিহাসে নতুন মাইলফলক।
‘পুষ্পা ২’ প্রিমিয়ার শো থেকে আয় করেছিল প্রায় ১৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রিমিয়ার আয়ের ক্ষেত্রে ‘ওজি’ প্রায় দ্বিগুণ এগিয়ে গেল আল্লু অর্জুনের রেকর্ড ভাঙতে। শুধু তা–ই নয়, এই প্রিমিয়ার কালেকশনই ‘ওজি’-কে ২০২৫ সালের সবচেয়ে আলোচিত তেলেগু সিনেমায় পরিণত করেছে।
মুক্তির প্রথম দিনেই চমক
অগ্রিম বুকিংয়ের দারুণ সাড়া পাওয়ার পর মুক্তির প্রথম দিনেও ছবিটি দাপট দেখিয়েছে। ভারতে ছবিটির প্রথম দিনের নেট সংগ্রহ হয়েছে প্রায় ১৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এদিকে উত্তর আমেরিকার বাজারে প্রিমিয়ার শোতেই আয় দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩৫ কোটি টাকা। এত বড় অঙ্ক প্রিমিয়ার ডে থেকে আয় করা এটিই প্রথম কোনো তেলেগু ছবি। বাণিজ্য বিশ্লেষকদের মতে, মুক্তির প্রথম সপ্তাহ শেষে ‘ওজি’র আয় ১৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। দীর্ঘ মেয়াদে ছবিটি দক্ষিণি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম বড় বাণিজ্যিক সাফল্যে পরিণত হতে পারে।
ছবির গল্প ও অভিনয়শিল্পীরা
সুজিত পরিচালিত এ ছবিতে গ্যাংস্টার ওজস গম্ভীরার গল্প বলা হয়েছে। পবন কল্যাণ এ চরিত্রে নিজের স্বভাবসিদ্ধ শক্তিশালী উপস্থিতি দিয়ে দর্শকের মন জয় করেছেন। ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন প্রিয়াঙ্কা মোহন ও বলিউড তারকা ইমরান হাশমি। ইমরানের জন্যও এটি প্রথম তেলেগু ছবি। তাঁকে দেখা গেছে ভয়ংকর গ্যাংস্টার ‘ওমি ভাউ’ চরিত্রে। ছবিটি দক্ষিণ ভারতের সব ভাষায় মুক্তি পেয়েছে, পাশাপাশি হিন্দিতেও মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সেন্সর বোর্ড থেকে ছবিটি ‘এ’ শংসাপত্র পেয়েছে, ফলে দর্শক আগেভাগেই বুঝে নিয়েছিলেন, ছবিটি অ্যাকশন-প্যাকড হবে।
‘পুষ্পা ২’-এর সঙ্গে তুলনা
গত বছর মুক্তি পাওয়া ‘পুষ্পা ২: দ্য রুল’ বক্স অফিসে ঝড় তুলেছিল। মুক্তির প্রথম দিনেই ছবিটি বিশ্বব্যাপী আয় করেছিল প্রায় ৩২০ কোটি টাকা। যদিও প্রিমিয়ার শো থেকে আয় ছিল ১৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। সেই জায়গাতেই এগিয়ে গেছে ‘ওজি’।
অর্থাৎ প্রথম দিনের মোট আয় ও জনপ্রিয়তার বিচারে ‘পুষ্পা ২’ এখনো এগিয়ে থাকলেও প্রিমিয়ার ডেতে শীর্ষ স্থান দখল করেছে ‘ওজি’। শিল্প বিশ্লেষকদের মতে, এ প্রতিযোগিতা দক্ষিণি সিনেমাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং বিশ্ববাজারে তেলেগু ইন্ডাস্ট্রির শক্ত অবস্থান নিশ্চিত করছে।
সামনে কী আছে
দর্শকের উচ্ছ্বাস আর হলভর্তি ভিড় দেখে বোঝা যাচ্ছে, ‘ওজি’ দীর্ঘ সময় ধরে হলে টিকবে। বিশেষ করে বিদেশি বাজার থেকে ভালো সাড়া পাওয়ায় ছবির আয় ক্রমেই বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। আর সেই সঙ্গে পবন কল্যাণের জনপ্রিয়তাও নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে। বর্তমান সময়ে দক্ষিণি সিনেমার শক্তি ও প্রভাব বলিউডকেও ছাপিয়ে যাচ্ছে। ‘পুষ্পা ২’ ও ‘ওজি’র সাফল্যই তার বড় প্রমাণ। এখন দেখার বিষয়, সামনের দিনগুলোতে ‘ওজি’ আর কত রেকর্ড ভাঙতে পারে।