সালমানের সঙ্গে অভিনয়ের ১০ বছর পর খোলাচিঠিতে যা লিখল সেই মুন্নি

সালমান খানের সঙ্গে অভিনয় করে জনপ্রিয় হন হারশালি। ছবি: ফেসবুক

ক্যারিয়ারে মাত্র ছয় বছর বয়সেই আলোচনায় আসে এই খুদে অভিনেত্রী। সহশিল্পী হিসেবে পেয়েছিল বলিউডের জনপ্রিয় নায়ক সালমান খানকে। আর সেই সিনেমার নাম ছিল ‘বজরঙ্গি ভাইজান’। সিনেমাটি মুক্তির আজ ১০ বছর। সময়ের সঙ্গে খুদে সেই হারশালি মালহোত্রার বয়স এখন ১৬ বছর। সে ছোট ‘মুন্নি’র চরিত্রে অভিনয়ের নানা অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করেছে। সালমানের সঙ্গে অভিনয়ের ১০ বছর পর খোলাচিঠিতে কী লিখেছে সে?

ছয় বছর বয়সে ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ সিনেমাটির সঙ্গে যুক্ত হওয়া নিয়ে হারশালি লিখেছে, ‘১০ বছর আগের কথা। সেই সময়ে একটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল। যে সিনেমাটি একটি গল্পের চেয়েও অনেক বেশি কিছু। এটা ছিল একটা অনুভূতি। এটায় ছিল ভালোবাসার বার্তা, মানবিকতা ও বিশ্বাস, যা সিনেমাটিকে বিশ্বের লাখ লাখ দর্শকের কাছে নিয়ে গিয়েছিল। তখন আমার বয়স ছিল মাত্র ছয় বছর। আর সেই সময়েই “বজরঙ্গি ভাইজান” আমার জীবনে প্রবেশ করে।’

হারশালি। ছবি: ফেসবুক থেকে

সিনেমার গল্পে দেখা যায়, হঠাৎই ট্রেন থেকে নেমে হারিয়ে যায় শিশুটি, যার নাম ছিল মুন্নি। কিন্তু পুরো সিনেমায় এই শিশু চরিত্রের তেমন সংলাপ ছিল না। সেই স্মৃতি স্মরণ করে হারশালি লিখেছে, ‘আমার চরিত্রটি ছিল এমন, আমি কোনো কথা বলতে পারতাম না। সিনেমাজুড়ে আমার নীরবতা কতটা গভীরভাবে অনুভূত হবে, তা কল্পনাও করিনি। ছয় বছর বয়সে আমি অনেক কিছুই বুঝতাম না। তবে মুন্নি চরিত্রটিকে চিনতে পেরেছিলাম। আমি তাকে বুঝতে পেরেছিলাম। তাকে প্রাণ দিতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলাম। মুন্নি ছিল সাধারণ এক বালিকা, ছিল শান্ত কিন্তু চলচ্চিত্রের পুরো আবহটা নিজের সঙ্গে বহন করতে পেরেছিল।’

ছোট বয়সেই অভিনয়ের নানা রকম অভিজ্ঞতা হয়েছিল। সেগুলো তখন না বুঝলেও এখন বুঝতে পারে। সিনেমার শুটিংয়ের সেই দিনগুলো নিয়ে সে লিখেছে, ‘আমি সিনেমার শুটিংয়ের বাইরে ছিলাম শিশু, যে সারাক্ষণ খেলে আনন্দে সময় কাটাত। কিন্তু সিনেমার চরিত্রে আমাকে সংবেদনশীল থাকতে হতো। মারামারির দৃশ্যগুলো আমাকে উদ্বিগ্ন করত, আমি কান ধরে রাখতাম, যেন শুনতে না পাই। কখনো চেয়ারের পেছনে লুকাতাম, কখনো কান্না করতাম। কারণ, আমি কিছুই বুঝতে পারতাম না, কী হচ্ছে। তবে পুরো শুটিংয়ে আমি নিরাপদ ছিলাম। সবার ভালোবাসা পেয়েছি।’

হারশালি। ছবি: ফেসবুক থেকে

সিনেমার গল্পে বেশির ভাগ সময়েই তাকে দেখা গেছে সালমান খানের সঙ্গে। তাদের মধ্যে একসময় ভালো বন্ধুত্বও হয়ে যায়। সালমান খানকে নিয়ে হারশালি লিখেছে, ‘সালমান স্যার আমাকে সবচেয়ে বেশি আদর করেছেন। তাঁর কাছেই আমি বেশি উষ্ণ আদর পেয়েছি। পরিচালক কবির স্যার সিনেমার প্রতিটা দৃশ্যকে গল্পের মতো করে বলতেন, যে কারণে এটাকে শুধুই অভিনয় মনে হয়নি। সিনেমার ইউনিটের সবাই আমাকে অনেক আদর করতেন। সবাই এমন আচরণ করতেন, দেখে মনে হতো আমি তাঁদের অনেক চেনা ও অনেক কাছের।’

হারশালি। ছবি: ফেসবুক থেকে

এক দশক আগে কোথায় কোথায় সিনেমার শুটিং হয়েছিল সেই স্মৃতিও এখনো ভোলেননি হারশালি। ‘কখনো তুষারময় পাহাড়, কখনো ধুলাবালুর রাস্তায় আমাদের শুটিং ছিল। আমার এখনো মনে আছে, আমি শুটিংয়ের মাঝে হাসতাম। কখনো লাড্ডু ভাগ করে খেতাম। কখনো একসঙ্গে কাঁদতাম। এই সিনেমা মুক্তির পরে ভক্তদের কাছে আমি হয়ে গেলাম মুন্নি। এখনো আমি প্রচুর বার্তা পাই। এটাই বলে, গভীরভাবে তাঁদের হৃদয়কে নাড়া দিতে পেরেছিল মুন্নি। ১০ বছর পরও সেই ভালোবাসা বিলীন হয়ে যায়নি। ভক্তদের ভালোবাসা আমার জন্য সবচেয়ে বড় উপহার ছিল। টিম, দর্শক সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। এসবই প্রিয় মুন্নির প্রতি, যে আমার মধ্যে সব সময় জীবন্ত থাকবে।’ কবির খান পরিচালিত ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ মুক্তি পায় ২০১৫ সালের ১৭ জুলাই। সিনেমাটি সেই বছর ভারতে তুমুল আলোচিত হয়।

সিনেমার একটি দৃশ্যে সহশিল্পীদের সঙ্গে হারশালি। ছবি: ফেসবুক
আরও পড়ুন