শাহরুখ আর আমি চোখে চোখে কথা বলতে পারি: সালমান
চলতি বছর দিওয়ালিতে মুক্তি পেয়েছিল সালমান খান অভিনীত ছবি ‘টাইগার থ্রি। যশ রাজ ফিল্মসের এই ফ্র্যাঞ্চাইজি সব সময় হিট ছবি উপহার দিয়েছে। এবারও সেই ধারা অব্যাহত ছিল। সম্প্রতি যশ রাজ ফিল্মস স্টুডিওতে সালমানের মুখোমুখি হয়েছিলেন কয়েকজন সাংবাদিক। তাঁদের মধ্যে ছিলেন প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধিও
ঘড়িতে তখন রাত সাড়ে ৯টা। আলাপচারিতা শুরু হয় ‘টাইগার’ ফ্র্যাঞ্চাইজির সাফল্যের কথা দিয়ে। ভাইজানের কথায়, ‘আমি আমার সব ছবির সফলতা সবার সঙ্গে ভাগ করে নিই। এ ক্ষেত্রেও তা–ই করতে চাই। এই সাফল্যের দাবিদার প্রত্যেকে।’
এই ফ্র্যাঞ্চাইজি শুরু হয়েছিল ‘এক থা টাইগার’ ছবি দিয়ে। এই ছবির শুটিংয়ের সময় কি ভেবেছিলেন, এটা ফ্র্যাঞ্চাইজি হয়ে উঠবে? ‘সত্যি বলতে, সেই সময় বুঝতে পারিনি যে টাইগারকে মানুষ এতটা ভালোবাসায় ভরিয়ে দেবে। তবে এই চরিত্রটার এতটাই দম আছে যে তা বারবার ফিরিয়ে আনা যায় বলে মনে হয়েছিল। মানুষের ভালোবাসার কারণেই এর সিকুয়েল আনার কথা মনে হয়েছিল,’ উত্তর দেন সালমান।
‘পাঠান’ ও ‘টাইগার থ্রি’—এই দুই ছবিতে সালমান ও শাহরুখ খান একসঙ্গে পর্দায় কিছুক্ষণের জন্য উপস্থিত ছিলেন। পর্দায় তাঁদের রসায়ন জাদু তৈরি করেছিল। শুধু পর্দাতেই নয়, বাস্তবেও এই দুই সুপারস্টার একে অপরের ভালো বন্ধু। শাহরুখের সঙ্গে বন্ধুত্বের প্রসঙ্গে সালমান বলেন, ‘শাহরুখের সঙ্গে পর্দার থেকেও পর্দার বাইরের রসায়ন আরও ভালো। আর তাই পর্দায় আমাদের একসঙ্গে এত ভালো লাগে।
আমরা একে অপরের সঙ্গে চোখে চোখে কথা বলতে পারি। একে অপরের চোখ দেখেই মনের কথা পড়তে পারি আমরা। সঞ্জয় দত্তের সঙ্গেও আমার এমনই সম্পর্ক।’
একসঙ্গে দুই সুপারস্টার পর্দায় এলে ‘ইগো’ সামনে আসে না? উত্তরে আলতো হেসে সালমান বলেন, ‘এখনকার হিরোরা অন্য হিরোর সঙ্গে পর্দায় আসতে ভয় পায়। ডবল হিরোর ছবিতে তারা অভিনয় করতে অনিশ্চয়তায় ভোগে। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে আমি ডবল হিরোর ছবিতে কাজ করে এসেছি। আমি সম্ভবত একমাত্র নায়ক যে শুরু থেকে আজও ডবল বা ট্রিপল হিরোর সঙ্গে কাজ করছি। সত্যি বলতে, আমরা এটা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগি না। দুজন নায়ক একসঙ্গে কাজ করলে, দুজনের অনুরাগীরা মিলে ছবির আয়ের অঙ্ক দ্বিগুণ করে দেয়। এখনকার নায়কেরা এসব বোঝে না, আর তাদের বোঝার প্রয়োজন-ও নেই (সশব্দে হেসে)।’
‘টাইগার’ ফ্যাঞ্চাইজিতে সব সময় সালমান ও ক্যাটরিনা কাইফ জুটি সবার ভালোবাসা পেয়ে এসেছে। এই আড্ডায় ক্যাটরিনার প্রসঙ্গ উঠতে ভাইজান বলেন, ‘ক্যাটরিনা অত্যন্ত পরিশ্রমী। সব সময় সে নিজেকে এক শ শতাংশ নিংড়ে দিয়েছে। ক্যাট ইন্ডাস্ট্রিতে যখন এসেছিল, তখন এক বর্ণ হিন্দি জানত না। আজ সে সাবলীলভাবে হিন্দি বলতে পারে। আগে ক্যাটরিনা নাচ করতে পারত না। আজ সে ইন্ডাস্ট্রির সেরা ড্যান্সারদের মধ্যে একজন। সব দিক থেকে পাট দারুণ উন্নতি করেছে।’
আড্ডার শেষে উঠে আসে সফলতা আর ব্যর্থতার কথা। সালমান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ব্যর্থতার স্বাদ পাওয়া সবার জন্য জরুরি। কোনো ছবি না চললে তখন নিশ্চয় কষ্ট হয়। তবে এই কষ্টটা আমাকে আরও জেদি করে তোলে। এই কষ্ট থেকে শিক্ষা নিই যে পরবর্তী ছবিটা আরও ভালো বানাতে হবে। দর্শক যেন আর হতাশ না হন। কোনো ছবি যখন প্রশংসিত হয়, তখন নিশ্চয় ভালো লাগে। তবে সফলতাকে আমি উদ্যাপন করি না।’
গতকাল ছিল অভিনেতার জন্মদিন। গত মঙ্গলবার রাতে মুম্বাইতে জাঁকজমকভাবে উদ্যাপন করা হয় অভিনেতার ৫৮তম জন্মদিন। যে অনুষ্ঠানে ছিলেন ববি দেওল, নেহা ধুপিয়া, রিতেশ দেশমুখসহ অনেকেই।