এসব বলিউডের সঙ্গে যায় না

অমৃতা রাও। অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রাম থেকে

সিধেসাদা মিষ্টি মেয়ে ‘পুনম’। ২০০৬ সালে ‘বিবাহ’ ছবির মাধ্যমে চরিত্রটি ঘরে ঘরে ঢুকে গিয়েছিল। সেই সঙ্গে দর্শকের হৃদয়ে পাকাপাকিভাবে জায়গা করে নিয়েছিলেন অমৃতা রাও। এত বছরে অনেক ছবিতে অভিনয় করেছেন। ‘ইশ্‌ক–বিশ্‌ক’, ‘ম্যায় হু না’, ‘মাস্তি’ বা ‘জলি এলএলবি’—একের পর এক সাফল্যের পালক। তবু এখনো দর্শক তাঁকে বেশি মনে করেন ‘বিবাহ’ ছবির পুনম হিসেবেই।
নতুন করে আবার আলোচনায় অমৃতা। ‘জলি এলএলবি ৩’–এ তাঁর চরিত্রটি সাড়া ফেলেছে। ছবির প্রচারণায় গিয়ে এক পডকাস্টে খোলাসা করেছেন নিজের অভিনয়জীবনের নানা কথা। শুনিয়েছেন কিছু জানা, কিছু অজানা অভিজ্ঞতা।

আলোচনায় ঘুরে ফিরে এসেছে পুরোনো ছবির প্রসঙ্গ। অমৃতা বলেন, ‘বিবাহ’ তাঁর জীবনের বিশেষ ছবি। এ ছবির হাত ধরেই ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। বলিউডের চাকচিক্য থেকে দূরে থেকেও আজও দর্শকের স্মৃতিতে টিকে আছেন কেবল এ ছবির জন্য। তাঁর ভাষ্যে, ‘আমি মনে করি, বিবাহ আমার কাছে একেবারেই আধ্যাত্মিক ছবি। ওপরওয়ালার কাছ থেকে পাওয়া এক উপহার।’

অমৃতা রাও। অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রাম থেকে

ক্যারিয়ারের শুরুর দিকের অভিজ্ঞতাও শেয়ার করেছেন অভিনেত্রী। বলেন, বলিউডে ভয়ংকর রাজনীতি কাজ করে সব সময়। তিনি নিজেই সেই রাজনীতির শিকার। ‘বিশ্বাস করেন, আপনি যদি আলোয় আসেন, অন্যের কুনজর আপনার লাগবেই। আমি নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি।’

অভিনয়জীবনের শুরুর সাফল্যের কথা মনে করেও দুঃখ প্রকাশ করেছেন অমৃতা। ‘ইশ্‌ক–বিশ্‌ক’ মুক্তির পর শহীদ কাপুরের সঙ্গে রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন তিনি। বলেন, ‘গডফাদার ছাড়াই টানা তিনটি সুপারহিট ছবি দিয়েছিলাম। ভীষণ খুশি ছিলাম। কিন্তু তখনই এমন কিছু ঘটল, যা আমাকে ভাবিয়ে তুলেছিল। কেন আমার সঙ্গে এমন হচ্ছে?’

‘বিহাহ’ সিনেমার পোস্টারে অমৃতা ও শহীদ। আইএমডিবি

উদাহরণও দিয়েছেন তিনি। এক অ্যাওয়ার্ড শোর ফটোশুটে তাঁর তোলা ছবি বাদ দিয়ে কভারে (প্রচ্ছদে) জায়গা পান অন্য তারকা। তাঁকে রাখা হয়েছিল পেছনের সারিতে। ‘আগে এসব ঘটনায় খুব কষ্ট পেতাম। এখন আর পাই না,’ বলেন অমৃতা।

আরও পড়ুন

বলিউডে টিকে থাকার লড়াই নিয়েও বলেছেন খোলাখুলি। ইন্ডাস্ট্রিতে আসার পর শারীরিক গড়ন নিয়ে তাঁকে নানা কটাক্ষ করা হয়েছে। ‘অনেকে বলত, কী রোগা! অথচ আমি না খুব রোগা ছিলাম, না খুব মোটা। মাঝারি গড়নেরই ছিলাম। তবু কেউ কখনো বলেনি, আমি পারফেক্ট। তাই নিজের কাছেই নিজেকে সেরা ভাবতে শিখেছি।’

অভিনেত্রীর ঝুলিতে অনেক হিট ছবি। কিন্তু মনের মতো চরিত্র পাননি বলে আফসোস আছে, ‘বড় ছবির প্রস্তাব পেয়েছিলাম। কিন্তু শর্ত রাখা হতো। চুম্বনদৃশ্যে অভিনয়ের প্রস্তাব আসত বারবার। বুঝতে পারছিলাম না কেন এমন হচ্ছে।’ সেই সঙ্গে বলেন, তিনি কখনো পার্টিপ্রিয় ছিলেন না। ‘অ্যাওয়ার্ড শোতে যাওয়া বা পার্টিতে যাওয়া আমার ভালো লাগত না। কাজ শেষ হলে শুধু নিজের বাড়ি ফিরতে চাইতাম। আমি একা থাকতে বেশি পছন্দ করি। এসব ঠিক বলিউডের সঙ্গে যায় না।’

‘বিহাহ’ সিনেমার পোস্টারে অমৃতা ও শহীদ। আইএমডিবি

আলাপের শেষেও ‘বিবাহ’ প্রসঙ্গে ফিরলেন অমৃতা। ছবিটি তাঁর কাছে সময়ের অমূল্য দলিল। ‘দেশের নানা প্রান্তে ঘুরলে আমি আজও বিবাহকে ঘিরে প্রতিক্রিয়া পাই। মানুষ বলে, ছবিটিতে যে জীবন দেখানো হয়েছে, সেটাই আসল জীবন। পরিবারের সবাই একসঙ্গে থাকে, মিলেমিশে থাকে। আজকের দিনে কেউ চাইলে বিবাহর মতো ছবি বানাতে পারবেন না,’ বললেন অমৃতা।