সামাজিক ট্যাবু নিয়ে আলিয়ার সফল ছবি
বলিউডের প্রথম সারির জনপ্রিয় এবং সফল অভিনেত্রী আলিয়া ভাট। গতকাল ১৫ মার্চ ৩১তম বছরে পা দেন অভিনেত্রী। এরই মধ্যে অভিনয়ে নিজের বহুমুখী প্রতিভা দেখিয়ে ফেলেছেন অভিনেত্রী। হিন্দি সিনেমার পাশাপাশি আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক সিনেমাতেও সমান দক্ষ তিনি। করণ জোহর পরিচালিত ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে প্রথমবারের মতো অভিষেক ঘটে মহেশ ভাট–কন্যার। অন্য নবাগতদের মতো নন, বৃত্তের বাইরে গিয়ে নানা রকম চরিত্রে নিজেকে ভেঙেছেন, সেটা করে সফলও হয়েছেন আলিয়া। একঝলকে দেখে নিন আলিয়ার সেরা কাজগুলো।
হাইওয়ে
ইমতিয়াজ আলীর সবচেয়ে অনন্য এবং আবেগঘন গল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘হাইওয়ে’ সিনেমা। জীবনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনুভূতি দেখানোয় সিদ্ধহস্ত এই পরিচালক। ছবিতে আলিয়া ভাট এবং রণদীপ হুদা জুটির রসায়ন নজর কেড়েছে দর্শকদের। সিনেমাটি মূলত একজন অপহরণকারী এবং উচ্চাভিলাসী জীবনে অভ্যস্ত একটি মেয়ের গল্প। যাকে দিল্লি থেকে অপহরণ করে আনা হয়। সিনেমাতে শিশুদের ছোটবেলার ট্রমা এবং আঘাতকে সুনিপুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন পরিচালক। যা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পর্দায় উপস্থাপন করেছেন নায়িকা। চলচ্চিত্রবিষয়ক শিক্ষার্থীদের জন্য ‘হাইওয়ে’ অবশ্যই দেখার মতো একটি ছবি।
উড়তা পাঞ্জাব
এরপর চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে আরও একটি বড় ঝুঁকি নিলেন আলিয়া ভাট। মুক্তির আগেই বড় বাধার মুখে পড়েছিল অভিষেক চৌবের পরিচালিত সিনেমাটি। আটকে দেয় সেন্সর বোর্ডও। মুক্তি নিয়েই ছিল সংশয়। যদিও আইনি লড়াইয়ের পর শেষ পর্যন্ত মুক্তি পায় ‘উড়তা পাঞ্জাব’। মুক্তির পরই আকাশে উড়তে শুরু করে ছবিটি। মাদকাসক্তির ভয়াবহতা নিয়ে নির্মিত হয় আলিয়ার ‘উড়তা পাঞ্জাব’।
ডিয়ার জিন্দেগি
এরপর বলিউড বাদশা শাহরুখ খানের সঙ্গে ‘ডিয়ার জিন্দেগি’তে অভিনয় করে দর্শকদের মনে পাকা আসন গড়ে নেন আলিয়া ভাট। সেই সঙ্গে ছবিটি অনিদ্রা, মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক সচেতনতা বাড়াতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। অর্থাৎ ‘ডিয়ার জিন্দেগি’র বিষয় ছিল মানসিক স্বাস্থ্য। নিজেদের দৈনন্দিন জীবন নিয়ে হাঁপিয়ে ওঠা মানুষদের জন্য এ সিনেমাটি ছিল প্রশান্তির জায়গা। অনেক কিছু শেখাতেও চেয়েছিল ‘ডিয়ার জিন্দেগি’।
যেমন মন খারাপ হওয়াটা একদমই স্বাভাবিক। সব রকম অনুভূতিকে অনুভব করার স্বাধীনতা যে কারও রয়েছে। দুঃখ পেলে অবশ্যই কাঁদা উচিত। নিজের পছন্দমতো কাজও করা উচিত। এমনকি জীবনে আত্মসম্মানও খুব গুরুত্বপূর্ণ। ছবিতে দেখানো হয়, আবেগ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকা কাইরা শেষ পর্যন্ত নিজের জীবনের কাছে পৌঁছাতে পেরেছিল। আর তা খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন আলিয়া ভাট। মনোরোগ চিকিৎসক হিসেবে নিজেকে দারুণভাবে উপস্থাপন করেছেন শাহরুখ খানও।
রাজি
১৯৭১ সালের ভারত-পাক সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে তৈরি হয়েছিল ‘রাজি’। পাকিস্তানের গোপন তথ্য নিতে সে দেশের একজন সেনা অফিসারকে বিয়ে করেন ভারতীয় নারী গুপ্তচর। সীমান্ত পেরিয়ে বর ইকবালের পরিবারের সঙ্গে বসবাসের সময় ধীরে ধীরে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের হদিস করতে থাকেন সেহমত। ইকবালের চরিত্রে অভিনয় করেন ভিকি কৌশল।
স্ত্রী সেহমতের প্রতি তার গভীর প্রেম এবং দেশের জন্য ভালোবাসার জটিল টানাপোড়েন ফুটে উঠেছিল পর্দায়। আর সেহমত চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করেছেন আলিয়া। সিনেমাটিতে মাতৃভূমির প্রতি মানুষের ভালোবাসা এবং সম্পর্কের জটিল রসায়ন সুনিপুণভাবে উপস্থাপন করেছেন আলিয়া।
গাঙ্গুবাই কাঠিয়াবাড়ি
আলিয়ার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে আলোচিত ছবি ‘গাঙ্গুবাই কাঠিয়াবাড়ি’। এই সিনেমার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন অভিনেত্রী। তাঁর অনবদ্য অভিনয় আর সঞ্জয় লীলা বানসালির গল্প বলার ধরন মিশে গেছে। একদম নিজেকে চরিত্রের ভেতরে প্রবেশ করিয়েছেন আলিয়া। কোনো দৃশ্যেই তাঁকে খাপছাড়া মনে হয়নি।