জন্মদিনে মাধুরীর অজানা প্রেমকাহিনি

আজ বলিউডের বড় পর্দার ‘মোহিনী’ মাধুরী দীক্ষিতের জন্মদিন। বয়সের মুকুটে আরও একটা পালক যুক্ত হলেও মাধুরী প্রমাণ করেছেন, বয়সকে তিনি নিজের মুনশিয়ানায় কেবলই সংখ্যা বানিয়ে রাখতে জানেন। ৫৩তম জন্মদিনে জেনে নেওয়া যাক পদ্মশ্রী মাধুরী ও তাঁর জীবনসঙ্গী শ্রীরাম মাধব নেনের প্রেককাহিনি।

প্রথম দেখা

আজ মাধুরী দীক্ষিতের জন্মদিন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
আজ মাধুরী দীক্ষিতের জন্মদিন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

সিমি গারেওয়ালের শোতে মাধুরী প্রথম দেখার কথা জানিয়েছিলেন এভাবে, ‘আমি এমন একজন মানুষের সঙ্গে দেখা করলাম, যে আমাকে চিনতই না। কোনো পূর্বধারণা ছাড়াই সে আমার সঙ্গে দেখা করল। আর জিজ্ঞেস করল, তার সঙ্গে আমি বাইকে চড়ে পাহাড়ে ঘুরতে যাব কি না। আর আমি জানি না কেন, যেই আমি এর আগে গত ২০ বছরে কারও মোটরসাইকেলে উঠিনি, সেই আমি হাসিমুখে রাজি হয়ে বললাম, হ্যাঁ, আমি যাব।’

বিয়ের দিন শ্রীরাম মাধুরীকে যা বলেছিলেন

শ্রীরাম বিয়ের আগ পর্যন্ত ধারণাই করতে পারেননি যে মাধুরী ভারতে কত বড় তারকা। বিয়ের দিন মিডিয়া আর মানুষ দেখে হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন এই ডাক্তার। স্ত্রীকে ফিসফিস করে বলেছিলেন, ‘ও মাই গড, এত মানুষ কেন!’ মাধুরী হেসে বলেছিলেন, ‘এ তো কঠোর গোপনীয়তা আর নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে। না হলে তো ভেঙে পড়ত।’ নেনে জানিয়েছিলেন, এসব দেখে শুনে তাঁর বিয়ের দিন নাকি কেটেছিল ঘোরের ভেতর। মাধুরী জানান, নেনে নাকি বিয়ের আগে মাধুরীর কোনো ছবিই দেখেনি। এমনকি অমিতাভ বচ্চন ছাড়া ভারতের আর কোনো তারকার নামও জানত না নেনে। স্কুলে পড়ার সময় নাকি একবার ‘অমর আকবর অ্যান্টনি’ দেখেছিলেন। বলিউডের ছবি নিয়ে নেনের স্মৃতি বলতে এটুকুই।

বিয়ের পর বড় পর্দা থেকে দীর্ঘদিনের বিরতি নেন মাধুরী। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
বিয়ের পর বড় পর্দা থেকে দীর্ঘদিনের বিরতি নেন মাধুরী। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

যুক্তরাষ্ট্রের দিনগুলোতে মাধুরী

বিয়ের পর বড় পর্দা থেকে দীর্ঘদিনের বিরতি নেন মাধুরী। মুম্বাই থেকে উড়াল দেন লস অ্যাঞ্জেলসে। মাধুরী জানান, তিনি তাঁর সবটুকু দিয়ে জীবনের এই বিশেষ অধ্যায়কে উপভোগ করতে চেয়েছিলেন, ‘আমার জীবনসঙ্গী একজন কার্ডিওভাসকুলার সার্জন। সে ভোর সাড়ে পাঁচটায় বেরিয়ে পড়ত। আর তার আগেই আমি নাশতা রেডি করতাম। একসঙ্গে সকালের নাশতা সারতাম। তারপর ও বেরিয়ে পড়লে আরেকটু ঘুমিয়ে নিতাম। আমি আমার জীবনের প্রতিটি মিনিট উজাড় করে বিবাহিত জীবনকে অনুভব করতে চেয়েছি।’

মাধুরীর সিনেমা দেখতে নার্ভাস লাগত নেনের

বিয়ের আগে শ্রীরাম মাধুরীকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘তুমি অভিনয় কর। তাহলে তো তোমাকে সঙ্গে ব্যাগ নিয়ে ঘুরতে হয়, তাই না?’ এই প্রশ্ন শুনে মাধুরী তো হেসেই খুন। নিজের বোকামি সে সময় বুঝতে পারেননি এই ডাক্তার। মাধুরী বলেন, ‘আমার তারকাখ্যাতি নিয়ে ওর কোনো ধারণাই ছিল না। বিয়ের পরেও মাধুরী অসংখ্যবার নিজের সিনেমা দেখতে বসিয়েছেন নেনেকে। কিন্তু বিয়ের দিনের ঘটনায়-ই কিনা, নেনের নাকি নার্ভাস লাগত।’ নেনে তাঁর সিনেমা দেখতে চাইত না জানিয়ে মাধুরী বলেন, ‘সিনেমা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর থেকেই নেনে বলত, ‘আমরা অন্য কিছু করি? চলো, আমরা অমুক জায়গা থেকে ঘুরে আসি; তমুক রেস্টুরেন্টে খেতে যাই। এটা করি, সেটা করি।’

যে কারণে মাধুরী আর নেনের প্রেম হলো

মাধুরী দীক্ষিত ও শ্রীনাম নেনে। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
মাধুরী দীক্ষিত ও শ্রীনাম নেনে। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

সিমি গারওয়ালকে মাধুরী বলেন, ‘আমরা দুজন একেবারে দুই মেরুর মানুষ। ওর বেড়ে ওঠা লস অ্যাঞ্জেলসে। আমার সম্পর্কে কোনো ধারণাই ছিল না। তাই ব্যক্তি আমাকে মনে ধরেছিল ওর। আর সেই বিষয়টা আমারও ভালো লেগেছিল। আমরা সম সময় সঙ্গীর ভেতর মিল খুঁজি। কিন্তু আমাদের অমিলেও কোথায় যেন একটা সুর ছিল। তাই তো পাহাড়ে বাইক রাইডিংয়ের প্রস্তাবে আমি হ্যাঁ করেছিলাম। আমরা সবাই জীবনকে একটা সুযোগ দিতে চাই। তাই নয় কি?’

২২ বছরের দাম্পত্য জীবনের রহস্য

‘আমরা সুখেই এক জীবন কাটিয়ে দিতে পারছি। আমার মনে হয়, এটা সম্ভব হয়েছে একটাই কারণে। আমরা কেউ কাউকে বদলাতে যাইনি। অথচ, বিয়ের সঙ্গে সঙ্গে এটিই একজন আরেকজনের কাছ থেকে আশা করে যে তার সঙ্গী তার জন্য বদলে যাবে। এটা ঠিক নয়। আমরা দুজনে যেমন ঠিক তেমনভাবেই গ্রহণ করেছি। সে যেমন, আমি সেই সবকিছু মিলিয়েই ওকে ভালোবেসেছি। আর এই কথা ওর জন্যও সমান সত্য।’