দীপিকা, সারা, শ্রদ্ধার মুঠোফোন জব্দ

জেরার পর নায়িকাদের মুঠোফোন জব্দ করেছে এনসিবিকোলাজ: আমিনুল ইসলাম

বলিউডের মাদককাণ্ড প্রতিদিন জটিল সব রহস্য থেকে পর্দা তুলে দিচ্ছে। গতকাল শনিবার ভারতের মুম্বাইয়ে নারকোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরোর (এনসিবির) জেরার মুখে দীপিকা পাড়ুকোন, সারা আলী খান ও শ্রদ্ধা কাপুর মাদক ও সুশান্ত সিং রাজপুতের ব্যাপারে অনেক গোপন কথাই স্বীকার করেছেন। এ জেরার ফলস্বরূপ দীপিকা, সারা ও শ্রদ্ধার মুঠোফোন জব্দ করেছে এনসিবি। তাঁদের ফোনগুলো নিয়ে তদন্ত করবে এনসিবি কর্মকর্তারা।

বলিউড অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তী দাবি করেছিলেন যে তাঁর প্রেমিক ও প্রয়াত অভিনেতা সুশান্ত নিয়মিত মাদক নিতেন। এমনকি এই বলিউড নায়ক তাঁর কর্মচারীদের মাদকসংক্রান্ত নানান কাজে ব্যবহার করতেন বলেও রিয়ার অভিযোগ। এবার একই সুর শোনা গেল শ্রদ্ধা কাপুরের গলায়। এই বলিউড অভিনেত্রী এনসিবির কাছে বলেছেন যে সুশান্ত নিয়মিত মাদক সেবন করতেন। কিন্তু শ্রদ্ধা কখনো মাদক নেননি।

দীপিকা পাড়ুকোন সকাল ১০টার আগেই এনসিবির দপ্তরে পৌঁছে গিয়েছিলেন
এএফপি

গতকাল এনসিবির দপ্তরে সবার আগে হাজির হয়েছিলেন দীপিকা পাড়ুকোন। সকাল ১০টার আগেই তিনি এনসিবির দপ্তরে পৌঁছে গিয়েছিলেন। এই বলিউড অভিনেত্রীকে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা জেরা করা হয়। জানা যায়, এনসিবি কর্মকর্তাদের জেরার একাধিক প্রশ্নের জবাব দেননি বলিউডের দীপিকা। তাই এই জেরায় সন্তুষ্ট নয় এনসিবি। দীপিকার থেকে লিখিত উত্তর লিখে নেওয়া হয়েছে। আবার হয়তো এই বলিউড নায়িকাকে জেরার জন্য ডাকতে পারে এই তদন্তকারী সংস্থা। তবে হোয়াটসঅ্যাপে ব্যবস্থাপক কারিশমা প্রকাশের সঙ্গে চ্যাটের কথা স্বীকার করেছেন দীপিকা। কিন্তু মাদক নেওয়া আর মাদক কেনার কথা তিনি পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন। দীপিকা আর কারিশমা প্রকাশকে সামনাসামনি বসিয়ে এনসিবি জেরা করেছে বলে জানা গেছে। এনসিবি দীপিকাসহ আরও দুই নায়িকার মুঠোফোন বাজেয়াপ্ত করেছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

শ্রদ্ধা কাপুর বলেছেন সুশান্ত নিয়মিত মাদক সেবন করতেন
এএফপি
সুশান্তের সঙ্গে ‘লিভ ইন’ সম্পর্কে ছিলেন সারা এবং দুজনে একসঙ্গে বিদেশ ভ্রমণে গিয়েছিলেন, সে কথাও মেনে নিয়েছেন।
ধূমপানের কথা স্বীকার করেছেন সারা
এএফপি

এনসিবির দপ্তরে শ্রদ্ধা কাপুর পা রেখেছিলেন দুপুর ১২টা নাগাদ। তাঁকে এই তদন্তকারী সংস্থা প্রায় ছয় ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে। এনসিবির জেরার মুখে নাকি রীতিমতো ভেঙে পড়েছিলেন শ্রদ্ধা। এই বলিউড নায়িকা তাদের জানিয়েছেন যে স্বাস্থ্যগত কিছু জটিলতার কারণে তিনি ‘সিবিডি তেল’ নিতেন। এই তেলে গাঁজার মিশ্রণ রয়েছে। শ্রদ্ধার দাবি, এই তেলের সাহায্যে তিনি নিজের স্নায়ুর চাপ কমাতেন। শ্রদ্ধা সুশান্তের পার্টির কথাও স্বীকার করেছেন। শ্রদ্ধা জানিয়েছেন যে তিনি একবার সুশান্তের ফার্ম হাউসে গিয়েছিলেন ‘ছিছোরে’ ছবির সাফল্য উদযাপনের পার্টিতে। তবে তাঁর দাবি, সেখানে গিয়ে তিনি কোনো ধরনের মাদক নেননি। পার্টিতে শুধু মদ পরিবেশন করা হয়েছিল। শ্রদ্ধা এনসিবির জেরার মুখে স্বীকার করেছেন, সুশান্তকে ভ্যানিটি ভ্যানে মাদক সেবন করতে দেখেছেন তিনি।

‘কেদারনাথ’–এ সুশান্ত ও সারা
ছবির দৃশ্য

এদিকে এনসিবি সারা আলী খানকেও দীর্ঘ সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। সারা মাদক সেবনের কথা অস্বীকার করেছেন। তবে ধূমপানের কথা স্বীকার করেছেন তিনি। রিয়া, শ্রদ্ধার মতো সারারও দাবি, সুশান্ত মাদক সেবন করতেন। সুশান্তের প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তী এনসিবিকে জানিয়েছিলেন, ‘কেদারনাথ’ ছবির শুটিংয়ের সময় সারা আলী খান চড়া মাত্রায় মাদক নিয়েছিলেন। সারা সে অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে এনসিবিকে জানিয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদের সময় সারা বলেছেন, ‘কেদারনাথ’ ছবির শুটিংয়ের সময় তিনি সুশান্তের সঙ্গে ধূমপান করেছিলেন, মাদক নেননি। সারা আরও জানান, এ ছবির সেট থেকেই সুশান্তের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। তিনি সুশান্তের সঙ্গে ‘লিভ ইন’ সম্পর্কে ছিলেন এবং দুজনে একসঙ্গে বিদেশ ভ্রমণে গিয়েছিলেন, সে কথাও মেনে নিয়েছেন। এনসিবি সারার বয়ান লিখিতরূপে সংগ্রহ করেছে।