ফারাজের বীরত্ব এবার রুপালি পর্দায়

হোলি আর্টিজান বেকারিতে নৃশংস সন্ত্রাসী হামলার মুখে ফারাজের বীরত্ব ও ত্যাগ নিয়ে এবার বলিউডে তৈরি হচ্ছে সিনেমা

বন্ধুদের বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন দিয়েছিলেন ফারাজ আইয়াজ হোসেন। ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাজধানীর গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে নৃশংস সন্ত্রাসী হামলার মুখে ফারাজের বীরত্ব ও ত্যাগ নিয়ে এবার বলিউডে তৈরি হচ্ছে সিনেমা। নাম ‘ফারাজ’। ছবিটি নির্মাণ করছেন ‘আলীগড়’, ‘ওমের্তা’, ‘শহীদ’খ্যাত পরিচালক হংসল মেহতা। প্রযোজনা করছেন অনুভব সিনহা ও ভূষণ কুমার। ছবিটি দিয়ে কারিনা কাপুরের চাচাতো ভাই জাহান কাপুর ও পরেশ রাওয়ালের ছেলে আদিত্য রাওয়ালের অভিষেক হচ্ছে।

পরিচালক হংসল মেহতা

গতকাল মধ্যরাতে টুইটার ও ইনস্টাগ্রামে ২৩ সেকেন্ডের একটি মোশন পোস্টার প্রকাশ করে খবরটি জানিয়েছে ছবিটির অন্যতম প্রযোজক অনুভব সিনহা। ফার্স্টলুকের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ক্যাফেতে বোমা হামলার দৃশ্য। নেপথ্যে শোনা যায়, ‘মানুষ যখন ধর্মের নামে হত্যা করে, আসলে সে ধর্মকেই হত্যা করে, মনুষ্যত্বকে হত্যা করে।’

ইনস্টাগ্রামে ভিডিওটি পোস্ট করে হংসল মেহতা লিখেছেন, ‘সহিংস প্রতিকূলতার মধ্যেও মানবতার জয়! “ফারাজ”-এর ফার্স্টলুক। বাংলাদেশে ২০১৬ সালের সন্ত্রাসী হামলার সত্য ঘটনা অবলম্বনে। তিন বছর ধরে গল্পটি আমি হৃদয়ে ধারণ করেছি। অনুভব সিনহা ও ভূষণ কুমার এর সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় আমি উচ্ছ্বসিত। আর পর্দায় তুলে ধরছি কয়েকজন তরুণ অভিনেতাকে, যাদের নেতৃত্বে আছে জাহান কাপুর ও আদিত্য রাওয়াল।’

আদিত্য রাওয়াল

বলিউডে হংসল মেহতার খুব কাছের বন্ধু চলচ্চিত্রকার অনুভব সিনহা। তিনি জানান, ছবিটি আসলে সন্ত্রাসী হামলা ও এর ক্ষতিকে ছাপিয়ে আশা ও বিশ্বাসকে জাগ্রত করবে।
বলিউড অভিনেত্রী কারিনা কাপুর খান মোশন পোস্টারটি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার দিয়ে লিখেছেন, ‘রাত যত গভীর হয়, বিশ্বাস তত উজ্জ্বল হয়ে জ্বলে। “ফারাজ”-এর ফার্স্টলুক। বাংলাদেশের ঘটনা অবলম্বনে তৈরি হচ্ছে। এই ছবির গল্প এমন একজন বীরকে নিয়ে, যা মানবতার প্রতি আপনার বিশ্বাসকে পুনরায় জাগ্রত করবে।’ এরপর তিনি চাচাতো ভাইকে নিয়ে লেখেন, ‘শুভকামনা জাহান কাপুর। বড় পর্দায় তোমাকে দেখার তর সইছে না। তোমাকে নিয়ে আমাদের গর্ব হয়।’ ছবির পোস্টার উন্মোচনের কাউন্টডাউনে অংশ নেন আয়ুষ্মান খুরানা, কার্তিক আরিয়ান, রাজকুমার রাও, এমরান হাশমি, প্রতীক গান্ধী, তাপসী পান্নু ও মোহিত সুরি।

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাজধানীর গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে ঘটে নৃশংস সন্ত্রাসী হামলা। সেখানে মৃত্যুর মুখেও দুই বন্ধু অবিন্তা কবির ও তারিশি জৈনের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন ২০ বছরের তরুণ ফারাজ আইয়াজ হোসেন। শেষ পর্যন্ত তাঁদের বাঁচাতে পারেননি, নিজেও বাঁচেননি। কিন্তু বাঁচিয়েছিলেন সাহস, বন্ধুত্ব আর মানবিকতাকে। তাঁর এই বীরত্ব ও সাহসিকতার কথা দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে। এই সাহসিকতার জন্য তিনি মাদার তেরেসা মেমোরিয়াল ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কারে ভূষিত হন।