বলিউডের পথে ‘তরুণ’ অমিতাভের ৫২ বছরের পথচলা

অমিতাভ বচ্চন। ছবি: ফেসবুক থেকে

‘সাত হিন্দুস্তানি’–এর ছোট্ট একটি চরিত্র দিয়ে বলিউডে যাত্রা শুরু তাঁর। তারপর একে একে কেটে গেল ৫২টি বছর। প্রতিভা আর পরিশ্রমের জোরে বলিউডের শাহেনশাহর রাজমুকুট অর্জন করেছেন। কার কথা বলছি, তা নিশ্চয়ই এতক্ষণে বুঝে গেছেন। তিনি আর কেউ নন, অমিতাভ বচ্চন।
কত কী হয়েছে এই ৫২ বছরে! ক্যারিয়ার ও ব্যক্তিগত জীবনে অনেক চড়াই–উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে গেছেন তিনি। কিন্তু থেমে যায়নি তাঁর জয়রথ। তাঁর হার না মানা জেদকে পরাস্ত করা যায়নি কিছুতেই। রুপালি পর্দার এই সোনালি সফরের স্মৃতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করলেন অমিতাভ নিজেই।

অমিতাভ বচ্চন। ছবি: ফেসবুক থেকে

এত বছর পর আজও বলিউডে তাঁকে ভেবেই চিত্রনাট্য লেখা হয়। চরিত্রাভিনয় নয়, তিনি আজও পরিচালক-প্রযোজকদের কাছে প্রধান চরিত্রের জন্য বিবেচিত হন। শুধু অভিনয়ই নয়, অমিতাভ বচ্চন একজন দক্ষ গায়ক আর লেখকও। সময়, পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে বলিউডে অমিতাভের ৫২ বছরের পথচলায় থাকত আরও নানান আয়োজন, উদযাপন করত ভক্তরা! কিন্তু মহামারি সময়কে প্রতিকূলে নিয়ে গেছে। তবে ‘চিরতরুণ’ অমিতাভ সময়ের বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে সামাজিক

যোগাযোগমাধ্যমে নিজের ৫২ বছরের পথচলার উজ্জ্বল স্মৃতি রোমন্থন করছেন।
রোববার গভীর রাতে অমিতাভ বচ্চন তাঁর বিভিন্ন ছবির দৃশ্য নিয়ে একটি কোলাজ তৈরি করে পোস্ট করেন ইনস্টাগ্রামে।

অমিতাভ যে ছবিটি শেয়ার করেছেন, সেখানে রয়েছে তাঁর অভিনীত অসংখ্য চলচ্চিত্রের ছবির কোলাজ। ‘আনন্দ’, ‘জিঞ্জির’, ‘শোলে’, ‘সিলসিলা’, ‘ত্রিশূল’, ‘শক্তি’, ‘শাহেনশাহ’, ‘সূর্যবংশী’, ‘বাগবান’ হয়ে সাম্প্রতিক ‘গুলাবো সিতাবো’— এসব সিনেমার ছবি জায়গা করে নিয়েছে সেই কোলাজে

লেখেন একটি মন ছুঁয়ে যাওয়া ক্যাপশনও। অমিতাভ লেখেন, ‘৫২ বছর! দারুণ...এখনো ভাবলে অবাক লাগে, কীভাবে এতটা সময় পেরিয়ে এলাম।’ সাফল্যের জন্য কার কাছে ঋণী ৭৮ বছরের এই ‘তরুণ’? অমিতাভের ইনস্টাগ্রাম বলছে, তিনি পুরো কৃতিত্ব দিচ্ছেন কেবল সৃষ্টিকর্তাকে।

অমিতাভ বচ্চন। ছবি: ফেসবুক থেকে

ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি লেখেন, ‘১৯৬৯ থেকে ২০২১—৫২ বছর একই জায়গায় কাটিয়ে দেওয়া মুখের কথা নয়! সবটাই সম্ভব হয়েছে সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার জন্য।’

অভিনেতা নিজেও বিস্মিত, মাঝখান থেকে ৫২টা বসন্ত কীভাবে পেরিয়ে গেল, তা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি! মনে হয় যেন, এই তো সেদিন ইন্ডাস্ট্রিতে পা রেখেছিলেন। অমিতাভ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দারুণ সক্রিয়। ১৪ ঘণ্টায় এই পোস্ট পছন্দ করেছেন প্রায় পাঁচ লাখ ভক্ত। আর মন্তব্য জমা হয়েছে পাঁচ হাজার। শিল্পা শেঠি লিখেছেন, ‘আপনার মতো অভিনেতা বলিউডে দ্বিতীয় আর কেউ নেই। আপনিই প্রথম, আর আপনিই শেষ।’

অমিতাভ বচ্চন। ছবি: ফেসবুক থেকে

অমিতাভ যে ছবিটি শেয়ার করেছেন, সেখানে রয়েছে তাঁর অভিনীত অসংখ্য চলচ্চিত্রের ছবির কোলাজ। ‘আনন্দ’, ‘জিঞ্জির’, ‘শোলে’, ‘সিলসিলা’, ‘ত্রিশূল’, ‘শক্তি’, ‘শাহেনশাহ’, ‘সূর্যবংশী’, ‘বাগবান’ হয়ে সাম্প্রতিক ‘গুলাবো সিতাবো’— এসব সিনেমার ছবি জায়গা করে নিয়েছে সেই কোলাজে। দেখা গেছে, ‘বুঢ্ঢা হোগা তেরা বাপ’ ছবিতে অভিনীত চরিত্রও।
এত বছরের চলচ্চিত্রযাত্রা অমিতাভকে যশ, খ্যাতির পাশাপাশি করেছে সম্পদশালী। কয়েক শ কোটির মালিক তিনি। মুম্বাইয়ে রয়েছে তাঁর পাঁচটি বাংলো। ভারতের বাইরে ফ্রান্সেও বাংলো আছে তাঁর।

সম্প্রতি নতুন একটি ফ্ল্যাট কিনে আলোচনায় এসেছেন এই অভিনেতা। জানা গেছে, তাঁর এই ফ্ল্যাটের দাম ৩১ কোটি রুপি বা ৩৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা।

অমিতাভ বচ্চন ও তাঁর একটি বাংলো

পরিবারের সঙ্গে জুহুর ‘জলসা’ বাংলোতে থাকেন অমিতাভ বচ্চন। প্রযোজক এন সি সিপ্পির কাছ থেকে এই বাংলো কিনেছিলেন তিনি। বর্তমানে বচ্চন পরিবার এখানেই থাকে। ১০ হাজার বর্গফুটের ওপর নির্মিত ‘জলসা’ নামের দ্বিতল এই ভবন জুহুতে জেডব্লিউ ম্যারিয়টের কাছে অবস্থিত। ২০১৩ সালে জলসার পেছন দিকে আরও একটি সম্পত্তি কিনেছেন অমিতাভ বচ্চন। প্রায় আট হাজার বর্গফুটের সেই সম্পত্তির মূল্য ৫০ কোটি টাকা।

করোনা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর নিজ বাড়ির সামনে অমিতাভ বচ্চন
ইনস্টাগ্রাম

কাজের জন্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ‘জনক’ নামের এই বাসা ব্যবহার করেন অমিতাভ। জলসা কাছাকাছি থাকায় অভিনেতা জনককে নিজের অফিস বা মিটিংয়ের জন্য ব্যবহার করেন। ভোগ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, মুম্বাইয়ে তাঁর সম্পত্তি ছাড়াও ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে তাঁর আরও একটি বাংলো রয়েছে। স্ত্রী, অভিনেত্রী জয়া বচ্চন তাঁকে উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন সেই বাংলো।