যে কারণে স্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞ পঙ্কজ ত্রিপাঠি

ভারতীয় অভিনেতা পঙ্কজ ত্রিপাঠি

বলিউড অভিনেতা পঙ্কজ ত্রিপাঠির শৈশব, কৈশোর কেটেছিল খুব সাদামাটা। টাকাপয়সার দেখা খুব একটা পাননি। কৃষক বাবার সংসারে আর্থিক অনটন লেগেই ছিল। তবে এসব নিয়ে মোটেও হতাশ কখনো ছিলেন না তিনি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেই দিনগুলো স্মরণ করে তিনি বললেন, সুখী ও স্বচ্ছন্দ জীবনের জন্য খুব বেশি অর্থের প্রয়োজন হয় না। এমনকি জীবনে তিনি দামি গাড়ি বা বিশাল বাড়ি কেনার জন্য ঋণ নেননি।

২০০৪ সালে ‘রান’ সিনেমার মধ্য দিয়ে বলিউডে অভিষেক হয় পঙ্কজ ত্রিপাঠির। পরে ২০০৬ সালে অভিনয় করেন ‘ওমকারা’ ছবিতে। ‘রাবণ’, ‘গ্যাংস অব ওয়াসিপুর’, ‘দাবাং টু’, ‘ফুকরে’, ‘সিংহাম রিটার্নস’, ‘বেরিলি কি বারফি’, ‘নিউটন’, ‘স্ত্রী’, ‘লুডু’, ‘মিমি’, ‘গুঞ্জন সাক্সেনা’ ও ‘বচ্চন পান্ডে’ ছবিগুলোতে অভিনয় করেছেন তিনি। ‘ক্রিমিনাল জাস্টিস’ ও ‘মির্জাপুর’ ওয়েব সিরিজে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেন।

পঙ্কজ ত্রিপাঠি
সংগৃহীত

সম্প্রতি টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক সাক্ষাৎকারে পঙ্কজ ত্রিপাঠি বলেন, ‘আমি ও আমার স্ত্রী অনেক দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসেছি। অনেক বছর আমরা মুম্বাইতে থাকি, কিন্তু কখনো মনে হয়নি জীবনে প্রাচুর্য বা অনেক কিছুর দরকার আছে। এমনকি আমি হয়তো কখনো দামি গাড়ি বা বড় বাড়ি কেনার জন্য ঋণ নিইনি।’

বাবা মায়ের সঙ্গে পঙ্কজ ত্রিপাঠি
ত্রিপাঠির ফেসবুক পেজ থেকে

পঙ্কজ ত্রিপাঠির বাবা একজন কৃষক। বিহারের প্রত্যন্ত এক গ্রামে বড় হয়েছেন তিনি। টাকাপয়সা চোখে দেখেছেন খুবই কম। এমনকি তাদের বাড়িতে কোনো টেলিভিশনও ছিল না। সেসব স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘অর্থের মূল্য ও অনর্থের দিকগুলো জেনেবুঝেই আমি বেড়ে উঠেছি এবং বস্তুগত সম্পদ নিয়ে আমার চিন্তা কখনো হয়তো বদলাবে না। আমার বিশ্বাস, সুখী ও আরামদায়ক জীবনের জন্য মানুষের খুব বেশি অর্থের প্রয়োজন হয় না। আমার যা আছে, তা নিয়েই আমি সুখী।’

পঙ্কজ ত্রিপাঠি

গত বছর ভারতের টিভি রিয়েলিটি শো কৌন বনেগা ক্রোড়পতি-১৩ এর এক পর্বে নিজের সংগ্রামের দিনগুলোর গল্প তিনি ভাগাভাগি করেছিলেন অনুষ্ঠানের সঞ্চালক অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি মুম্বাইতে আসি ২০০৪ সালে, আর “গ্যাংস অব ওয়াসিপুর” বের হলো ২০১২ সালে। এই আট বছর আমি কী করেছি, কেউ কল্পনাও করতে পারবে না। এখন যখন লোকে আমার সংগ্রামের কথা জিজ্ঞেস করে, তখন মনে হয় ওহ, ওই দিনগুলো সংগ্রামের ছিল!’ তিনি আরও বলেন, ‘ওই সময় আমার মনেই হয়নি যে আমি খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। কষ্ট বুঝিনি কারণ, আমার স্ত্রী নিজেই বাচ্চাদের পড়াত। আমাদের প্রয়োজন ছিল সীমিত, আমরা ছোট্ট একটা বাসায় থাকতাম আর আমার স্ত্রীর আয়ে আমাদের চলে যেত। আমার যে ওই সময়ে আন্ধারি রেলস্টেশনে ঘুমাতে হয়নি, এ জন্য আমি আমার স্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।’