যে যুক্তিতে শাহরুখ–পুত্রের জামিন হয়নি

আরিয়ান

বুধবার জামিন হয়নি আরিয়ান খানের। জ্যেষ্ঠ শিবসেনা নেতা কিশোর তিওয়ারির শাহরুখের পাশে অবস্থানসহ নানা দিক বিবেচনা করে অনেকে ভেবেছিলেন আজ জামিন হবে আরিয়ানের। আশাহত হয়েছেন শাহরুখ পরিবারের সদস্যরা। সামনেই মুম্বাইতে দিওয়ালির ছুটির জন্য বেশ কিছুদিন আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এ কারণে আরও বেশি চিন্তায় পড়ে গেছেন শাহরুখ। বর্তমানে আর্থার রোড জেলেই বন্দী আছেন আরিয়ান।

এর আগে মুম্বাইয়ের ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গ্রহণযোগ্যতার জেরেই খারিজ করেছিলেন আরিয়ানের জামিনের আবেদন। আজ অবশ্য সেশন আদালত ভারতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোর দাখিল করা দলিল প্রাথমিকভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করে আরিয়ান খানের জামিন আবেদন খারিজ করেছেন।

জামিনের আশায় থাকা শাহরুখ–গৌরী দম্পতি বড় ধাক্কা খেলেন আদালতের এ সিদ্ধান্তে। শাহরুখ–ভক্তরা এ রায়কে বলছেন ‘নিষ্ঠুর’ আচরণ। হংসল মেহতাসহ অনেক বলিউড ব্যক্তিত্বও ক্ষোভ প্রকাশ করে এ নিয়ে মন্তব৵ করেছেন। সবার মনে প্রশ্ন, কী কারণে আরিয়ান খানের জামিন খারিজ করলেন সেশন আদালতের বিচারক ভি ভি পাতিল? তাঁর যুক্তি কী ছিল?

আরিয়ান জেলে টেলিভিশন দেখতেন না, চুপচাপ এক পাশে শুয়ে থাকতেন

বেশ কিছু ভারতীয় গণমাধ্যমে এ নিয়ে খবর প্রকাশ করেছে তাঁদের অনলাইন সংস্করণে। এসব খবরে রায়ের বিস্তারিত প্রতিলিপিতে বিচারকের বক্তব্য পাওয়া গেছে। সেখানে বিচারক বলেছেন, প্রাথমিকভাবে যে তথ্যপ্রমাণ হাতে এসেছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে নিষিদ্ধ মাদকের লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল আরিয়ান খানের। মাদক পাচারকারীদের সঙ্গে আরিয়ান খানের হোয়াসটঅ্যাপ চ্যাটের প্রমাণ মিলেছে।

আইনজীবীরা বরাবরই বলে আসছেন, আরিয়ান খানের কাছে কোনো মাদক মেলেনি। কিন্তু তাঁদের এ বক্তব্য বা যুক্তি আমলে নেননি আদালত। আদালত জানান, আরবাজ মার্চেন্টের কাছে নিষিদ্ধ মাদক রয়েছে, তা জানতেন আরিয়ান। ছয় গ্রাম চরস আরবাজ ও আরিয়ান দুজনে মিলেই ব্যবহার করতেন, তাই সেটি সরাসরি আরিয়ানের কাছ থেকে উদ্ধার না হলেও পরোক্ষভাবে দুজনের জিম্মাতেই ছিল।

আইনজীবীরা বরাবরই বলে আসছেন, আরিয়ান খানের কাছে কোনো মাদক মেলেনি

আদালত আরও বলেছেন, বেআইনি মাদকসংক্রান্ত কার্যকলাপের সঙ্গে নিয়মিত জড়িত ছিলেন আরিয়ান খান, তা–ও সামনে এনেছে শাহরুখপুত্রের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট। তাই প্রমোদতরিতে আরিয়ানের উপস্থিতি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখছেন না আদালত। এবং জামিনে ছাড়া পেলে এ ধরনের অপরাধ আবার তিনি করবেন না, এমন কোনো নিশ্চয়তাও দেখছেন না আদালত, সেই কারণে আরিয়ানের জামিনের আবেদন খারিজ করেছেন আদালত।

২ অক্টোবর রাতে এনসিবি মুম্বাই উপকূলে একটি প্রমোদতরিতে অভিযান চালিয়ে শাহরুখ খানের ছেলে আরিয়ান খানকে আটক করে। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পরে শাহরুখপুত্রসহ এ পর্যন্ত মোট ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আরিয়ান (বাঁয়ে) ও শাহরুখ

এখন তাঁরা সবাই আর্থার রোডের জেলে আছেন। গত সপ্তাহে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে খারিজ হয়েছিল শাহরুখ–পুত্রের জামিনের অবেদন। পরে আবার ১৪ অক্টোবর সেশন কোর্ট দুই পক্ষের আইনজীবীর বাগ্‌বিতণ্ডা শোনার পর ২০ অক্টোবর অর্থাৎ আজ আরিয়ানের জামিনের ওপর শুনানির দিন ঘোষণা করেছিলেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো আরিয়ানের বিরুদ্ধে এনডিপিএস ৮ (সি), ২০ (বি), ২৭, ২৮, ২৯, ৩৫ ধারায় মামলা করেছে।