রোহিঙ্গা সংকটের আবহে এক প্রেমের গল্প

১৫ নভেম্বর অ্যাপল টিভিতে মুক্তি পাচ্ছে রোহিঙ্গা

হায়দার খান মুলত গ্ল্যামার ফটোগ্রাফার। বিজ্ঞাপন দুনিয়ায় তাঁর কাজের সুনাম রয়েছে। সালমান খানের বেশ কিছু ছবির প্রোমো বানিয়েছেন। সেই হায়দার খান বানালেন ভিন্নধারার ছবি, রোহিঙ্গা। হঠাৎ কেন এ সিদ্ধান্ত? দিল্লিতে বসবাসরত রোহিঙ্গা নেতা আলী জোহর এক চিত্র আলোচনায় লিখেছেন, ‘ক্যামেরার পেছনে হায়দারের যেমন সৃজনশীল চোখ রয়েছে, তেমনি তাঁর একটি সংবেদনশীল হৃদয়ও আছে। এ কারণেই গ্ল্যামারের বিশ্বকে দূরে সরিয়ে রেখে বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার সংকট তাঁকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে।’

হায়দার খান মুলত গ্ল্যামার ফটোগ্রাফার

ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রোহিঙ্গা নিয়ে হায়দার খান বলেন, ‘বহু বছর ধরে রোহিঙ্গাদের দুর্দশার কথা শুনছি এবং দেখছি, যা আমাকে খুব স্পর্শ করেছে।’ হায়দার আশা করেন, সিনেমাটি রোহিঙ্গাদের দুর্দশাকে মূলধারায় নিয়ে আসবে। তিনি কাল্পনিক গল্প ব্যবহার করে রোহিঙ্গার সংকটের বিষয়টিও পরোক্ষভাবে তুলে ধরেছেন। তাঁর মতে, ‘এটাকে প্রেমের গল্পও বলা যায়। সহজে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানো যাবে, জনসাধারণ বুঝতে পারবে—এমন পথ বেছে নিয়েছি। আসলে একটি তথ্যচিত্র বা লিখিত পোস্ট দেখতে মানুষ যে খুব বেশি আগ্রহী হয়, তা কিন্তু নয়।’

কাল্পনিক গল্প ব্যবহার করে রোহিঙ্গার সংকটের বিষয়টিও পরোক্ষভাবে তুলে ধরেছেন

এ ছবির সঙ্গে জড়িয়ে আছে তিনটি দেশ—বাংলাদেশ, ভারত ও ভুটান। ছবিটি প্রযোজনা করেছেন ভারতের আকাশ সিং এবং ভুটানের থান্ডার ড্রাগন প্রোডাকশনের দরজি ওয়াংচুক। প্রধান চরিত্রে বাংলাদেশি অভিনেত্রী নেওয়ার কারণ হিসেবে হায়দার খান বলেন, ‘আমি এমন একটি মেয়ে খুঁজছিলাম, যে রোহিঙ্গা ভাষা বলতে পারে। অনেক ভারতীয় বাঙালি মেয়ের অডিশনই আমি নিয়েছি কিন্তু তাদের কেউই রোহিঙ্গা উচ্চারণের কাছাকাছি যেতে পারেনি। মিথিলার রোহিঙ্গা উচ্চারণটা ভালো। আবার তার হিন্দি খুব ভালো নয়। এটাই আমি চেয়েছি, হুসনে আরা ভাঙা হিন্দিতে কথা বলে।’

তানজিয়া মিথিলা
ইনস্টাগ্রাম

পরিচালক জানান, পুরো ছবিটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক আলোতে ধারণ করা হয়েছে। ছবিতে কোনো হেয়ার আর্টিস্ট বা মেকআপ আর্টিস্ট ব্যবহার করা হয়নি।
চলচ্চিত্র পরিচালক মণিরত্নম, কুয়েন্টিন টারান্টিনো ও মার্টিন স্কোরসেজির ভক্ত হায়দার খান বলেন, ‘আমি বাস্তবতা এবং কল্পকাহিনিকে মিশিয়ে দিতে পছন্দ করি। এখানেও তাই করেছি। এখানে যেমন ভারতীয় সেনাবাহিনীর বীরত্ব দেখানো হয়েছে, তেমনি কয়েক দশক ধরে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর চলা নির্যাতন, সহিংসতা ও দুর্দশার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।’