সিনেমাটি মুক্তির পর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের লাল গোলাপ দেওয়া শুরু হয়েছিল

‘লাগে রাহো মুন্না ভাই’ সিনেমার একটি দৃশ্যে সঞ্জয় দত্ত
ছবি: সংগৃহীত

রাজকুমার হিরানির ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ছবি ‘লাগে রাহো মুন্না ভাই’। মুক্তির পরই সিনেমাটির গায়ে ‘ব্লকবাস্টার’ তকমা লেগে যায়। ভারতের মাটি ছাড়িয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রশংসা অর্জন করে। সফল এই সিনেমায় ‘মুন্না ভাই’ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সঞ্জয় দত্ত। মজার ব্যাপার, এই সিনেমার কোনো দৃশ্যেই দুইবারের বেশি টেক দেননি তিনি। আজ ছবিটি মুক্তির ১৫ বছর পুরো করল। সিনেমাটি নির্মাণের মজার কিছু ঘটনা তুলে ধরা হলো।

‘মুন্না ভাই এমবিবিএস’ সিনেমার একটি পোস্টারে তারকারা
ছবি: সংগৃহীত

‘মুন্না ভাই এমবিবিএস’ সিনেমার এই সিকুয়েলের নাম একাধিকবার পরিবর্তন করা হয়। প্রাথমিকভাবে সিনেমাটির নাম ছিল ‘মুন্না ভাই মিট মহাত্মা গান্ধী’। পরে নাম ঠিক করা হয় ‘মুন্না ভাই সেকেন্ড ইনিংস’। শেষে ‘লাগে রাহো মুন্না ভাই’ চূড়ান্ত হয়।

রাজকুমার হিরানি
ছবি: সংগৃহীত

চলচ্চিত্রটি তৈরির পেছনে রাজকুমার হিরানির অন্যতম লক্ষ্য ছিল, মহাত্মা গান্ধীর প্রতি আগ্রহ পুনরুজ্জীবিত করা। নির্মাতার মনে হয়েছিল, মহাত্মা গান্ধীকে সমকালীন ভারতের মানুষ ভুলে গেছে। তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, শুটিংয়ের পেছনে কাজ করা কেউ কেউও গান্ধীকে জানেন না। অনেক রাজনীতিবিদ গান্ধীর জন্মদিনটা পর্যন্ত জানেন না।

রাজকুমার হিরানি ও অভিজিৎ যোশী
ছবি: সংগৃহীত

সিনেমাটির চিত্রনাট্য লেখার সময় চার মাসের বেশি সময় একসঙ্গে ছিলেন রাজকুমার হিরানি ও অভিজিৎ যোশী। তাঁরা বাইরে বেড়াতে গিয়ে আলোচনা করতে করতে সিনেমার দৃশ্যগুলো তৈরি করতেন। হাসাতে, কাঁদাতে বা চিন্তার জন্ম দিতে সক্ষম নতুন একটি দৃশ্য তৈরি না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা বাসায় ফিরতেন না।

সঞ্জয়ের হাতে লাগ গোলাপ
ছবি: সংগৃহীত

‘গান্ধীগিরি’ কথাটা এই সিনেমা মুক্তির পর লোকজনের মধ্যে জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে। দুর্নীতিবাজদের লাল গোলাপ দেওয়া শুরু করেন সাধারণ মানুষজন, যেন তাঁরা নিজেদের দুর্নীতি বা ভুল বুঝতে পারেন।

‘লাগে রাহো মুন্না ভাই’ সিনেমার বিভিন্ন দৃশ্যের কোলাজ
ছবি: সংগৃহীত

‘লাগে রাহো মুন্না ভাই’ প্রথম হিন্দি সিনেমা, জাতিসংঘে যার শো হয়েছিল। সিনেমাটি কান চলচ্চিত্র উৎসবের ‘তু লেজ সিনেমা দু মড’ সেকশনে দেখানো হয়।

সিনেমায় আরশাদ ওয়ার্সির কথার আলাদা একটা স্টাইল বা ম্যানারিজম ছিল
ছবি: সংগৃহীত

‘মুন্না ভাই এমবিবিএস’ সিনেমায় আরশাদ ওয়ার্সির কথার আলাদা একটা স্টাইল বা ম্যানারিজম ছিল। ‘লাগে রাহো মুন্না ভাই’ সিনেমার প্রথম টেকের সময় সেগুলো নতুন করে আবার করতে পারছিলেন না তিনি। আর উচ্চারণভঙ্গিও কেমন যেন নিজের মতো হয়ে যাচ্ছিল। উপায়ান্তর না দেখে চরিত্রটি পর্যবেক্ষণের জন্য ওয়ার্সিকে প্রথম সিনেমাটির একটি ডিভিডি দেন রাজকুমার হিরানি।

আমির খান
ছবি: সংগৃহীত

সিনেমায় আমির খানের একটি ক্যামিও চরিত্র করার কথা ছিল। কিন্তু চিত্রধারণের সময় তাঁর চরিত্রটি বাদ দেওয়া হয়।

সেটে এসেই সবাই বোমান ইরানিকে খুঁজতেন
ছবি: সংগৃহীত

শুটিং শুরুর আগে সেটে সিনেমাটির ভক্তদের ঢোকার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। সেটে এসেই সবাই বোমান ইরানিকে খুঁজতেন। ছবিতে যিনি ‘লাকি সিং’ করেছিলেন। সামনে বসে থাকা সত্ত্বেও আগত দর্শকেরা তাঁকে চিনতে পারতেন না। সবাই আসলে ‘মুন্না ভাই এমবিবিএস’ ছবির ডাক্তার আস্থানাকে খুঁজছিলেন।

হলওয়ের একটি দৃশ্যে আনুশকা শর্মার একটি আলোকচিত্র
ছবি: সংগৃহীত

হলওয়ের একটি দৃশ্যে আনুশকা শর্মার একটি আলোকচিত্র দেখানো হয়। তাঁর প্রথম ছবি ‘রাব নে বানা দি জোড়ি’ মুক্তি পাওয়ার দুই বছর আগের ঘটনা এটা। তারপর তো নিজেই ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন আনুশকা। পরে তিনি রাজকুমার হিরানি পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘পিকে’ এবং ‘সঞ্জু’তে অভিনয় করেন।

সঞ্জয় দত্ত ও দিলীপ প্রভাওয়ালকর
ছবি: সংগৃহীত

সিনেমায় মহাত্মা গান্ধী চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন দিলীপ প্রভাওয়ালকর। মহাত্মা গান্ধীর পোশাকেই তাঁকে চিনতেন সঞ্জয় দত্ত। পরে গান্ধীর মেকআপ ও পোশাকহীন দিলীপকে দেখে চিনতে পারেননি সঞ্জয় দত্ত।