স্বপ্নাকে নিয়ে ছবি করবেন সৃজিত

স্বপ্না বর্মণ ও সৃজিত মুখোপাধ্যায়
স্বপ্না বর্মণ ও সৃজিত মুখোপাধ্যায়

স্বপ্নাকে এখন অনেক লোকে চেনে। পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার পাতাকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘোষপাড়া গ্রামে থাকতেন মেয়েটা। সারা ভারত, এশিয়া এবং বিশ্বে ছড়িয়ে গেছে তাঁর নাম। এ বছর এশিয়া গেমসের হেপ্টাথলনে পেয়েছেন সোনার পদক। স্বপ্না বর্মণের জীবনের গল্প ভিন্ন আঙ্গিকে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা সৃজিত মুখোপাধ্যায়। স্বপ্নাকে নিয়ে বায়োপিক তৈরি করবেন তিনি।

এশিয়ান গেমসের নারীদের হেপ্টাথলনের ৭টি খেলায় হাইজাম্প ও জ্যাভলিনে শীর্ষে ছিলেন স্বপ্না। দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন শটপুটে এবং লংজাম্পে, চতুর্থ ছিলেন ৮০০ মিটার দৌড়ে, পঞ্চম ছিলেন ১০০ মিটার হার্ডলস এবং সপ্তম ছিলেন ২০০ মিটার দৌড়ে। সব মিলিয়ে স্বপ্নার সংগ্রহ ছিল ৬ হাজার ২৬ পয়েন্ট। আর তাতেই শীর্ষস্থান দখল করে হেপ্টাথলনে স্বর্ণপদক পান তিনি। স্বপ্নার সোনা বিজয়ে আনন্দের বন্যা বইছে পশ্চিমবঙ্গ ও ভারতজুড়ে। স্বপ্নার এবারের লক্ষ্য অলিম্পিকে স্বর্ণপদক পাওয়া।

স্বপ্নাকে নিয়ে একটি বায়োপিক করার উদ্যোগ নিয়েছেন কলকাতার চলচ্চিত্র পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। ইতিমধ্যে প্রাথমিক আলোচনাও করেছেন স্বপ্নার সঙ্গে। তাঁকে নিয়ে চলচ্চিত্র প্রসঙ্গে স্বপ্না বলেন, আজ থেকে ৫ বছর আগে মুক্তি পেয়েছিল মিলকা সিংয়ের বায়োপিক ‘ভাগ মিলকা ভাগ’। সেখানে অভিনয় করেছিলেন ফারহান আখতার। সে বছরই জলপাইগুড়ি থেকে প্রশিক্ষণের জন্য কলকাতায় গিয়েছিলেন স্বপ্না। সেদিন ওই ছবি দেখার পর নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন স্বপ্না। তাঁর মনে হয়, ভালো করতে পারলে তাঁকে নিয়েও তো তৈরি হতে পারে এ রকম সিনেমা। এত দিন সেই স্বপ্ন পুষে রেখেছিলেন তিনি।

সৃজিত মুখোপাধ্যায় বলেছেন, তাঁরও ইচ্ছে স্বপ্নাকে নিয়ে একটা বায়োপিক করার। যদিও স্বপ্নার কোচ সুভাষ সরকার বলেছেন, এখন স্বপ্নার স্বপ্ন অলিম্পিক। ছোট ছোট আঘাত সেরে উঠলেই দ্রুত ট্র্যাকে ফিরতে হবে তাঁকে। সৃজিত মুখোপাধ্যায় এই মুহূর্তে ব্যস্ত তাঁর ‘এক যে ছিল রাজার’ ছবির প্রমোশন নিয়ে।

স্বপ্না দরিদ্র পরিবারের সন্তান। ভ্যানচালক বাবা এখন অসুস্থ। বড় ভাই রাজমিস্ত্রি। তাঁর আয়ে চলছে স্বপ্নাদের সংসার। শৈশব থেকে তবু স্বপ্নার স্বপ্ন বড় হয়ে খেলোয়াড় হবেন। চালিয়ে গেছেন অনুশীলন। স্বপ্ন পূরণ হয়েছে এশিয়ান গেমসের হেপ্টাথলনে স্বর্ণপদক জিতে। এক বাঙালি মেয়ের স্বর্ণপদক জয়ে আনন্দে মেতে উঠেছে পুরো পশ্চিমবঙ্গ। মিষ্টি পাঠিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিনন্দন জানিয়েছেন স্বপ্নাকে। পুরস্কার হিসেবে রাজ্য সরকার তাঁকে দেবে ১০ লাখ রুপি, একটি সরকারি চাকরি ও আবাসন-সুবিধা।

স্বপ্নার সাফল্যে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের ক্রীড়ামন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন ভারত সরকার তাঁকে একটি পছন্দের চাকরি, নগদ ৩০ লাখ রুপি ও একটি আবাসন দেবে। প্রশিক্ষণের জন্য তাঁকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এমনকি অলিম্পিকের জন্য প্রস্তুত করতে যাবতীয় সহযোগিতা করবে তারা। এ খবরে ভীষণ খুশি স্বপ্নার বাবা পঞ্চানন বর্মণ ও মা বাসনা বর্মণ।