‘আপু, আমি কিন্তু আপনার ভক্ত’, মালদ্বীপে হঠাৎ বাংলা শুনে চমকে গেলেন মিম

মিম ও সনি মালদ্বীপে প্রবাসী বাঙালি ভক্তের সঙ্গে

মালদ্বীপের হুরুয়েলি দ্বীপে মধুচন্দ্রিমায় গিয়েছিলেন মিম-সনি দম্পতি। পাঁচ দিন সেখানে কাটিয়ে ১৯ ফেব্রুয়ারি দেশে ফিরেছেন তাঁরা। মালদ্বীপে একদল ভক্তের দেখা পেয়েছিলেন মিম ও সনি। সেখানে তাঁদের সঙ্গে খানিকটা সময় কাটিয়ে রোমাঞ্চিত মিম।

ওই দ্বীপের বেশ কয়েকটি অবকাশযাপন কেন্দ্রে কাজ করেন বেশ কয়েকজন বাঙালি, মালদ্বীপে যাওয়ার আগেই সেটা শুনেছিলেন মিম। ভেবেছিলেন মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে নিজের দেশের মানুষের সঙ্গে দেখা হবে, গল্প হবে, সময়টা মন্দ কাটবে না। সেখানে যাওয়ার এক দিন পার হয়ে গেলেও কাউকে বাংলায় কথা বলতে শোনেননি মিম। এমনকি পাননি কোনো বাঙালি পর্যটকও। মিম বলেন, ‘প্রথম দিন থেকেই মনে মনে বাঙালি খুঁজছিলাম। এমন বেশ কয়েকবার হয়েছে, দেখতে অনেকটা বাঙালিদের মতো কিন্তু কথা বলতে গিয়ে দেখি ভারতীয়। আমরা যে কদিন ছিলাম, ওই দ্বীপে কোনো বাঙালি ট্যুরিস্ট পাইনি।’

মালদ্বীপের রিসোর্টে বাঙালি ভক্তদের সঙ্গে মিম

দ্বিতীয় দিন ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ এক বাঙালি তরুণকে পেয়ে যান মিমরা। তিনি সেখানে চাকরি করেন। শুরুতে বুঝতেই পারেননি যে তিনি বাঙালি। ঘুরতে ঘুরতে তাঁকে ডেকে মিম ইংরেজিতে ছবি তুলে দেওয়ার অনুরোধ করেন। হঠাৎ করেই ছেলেটি বাংলায় বলে ওঠেন, ‘আপু, আমি কিন্তু আপনার ভক্ত। আপনার অনেক কাজ দেখেছি।’ শুনে আনন্দিত মিম বলেন, ‘আপনি বাঙালি!’

প্রিয় তারকাকে কাছে পেয়ে নার্ভাস হয়ে পড়েন ওই ভক্ত। মিম বলেন, ‘আমাদের ছবি তুলে দেওয়ার পর আমিই তাঁকে বললাম, “চলেন, আমাদের সঙ্গে আপনার একটা ছবি তুলে দিই। ছবিটা আপনার জন্য স্মৃতি হয়ে থাকবে।’’ এ কথা শুনে তিনি তো আরও নার্ভাস, মনে হচ্ছিল কাঁপছেন। তাঁর ফোনটায় কী যেন ঝামেলা হচ্ছিল। আমি নিজেরটা দিয়ে তিনজনের সেলফি তুললাম। তিনি খুব খুশি হয়েছেন।’

তাঁর কাছ থেকে মিম জানতে পারেন, বিভিন্ন নিউজ পোর্টাল থেকে তাঁদের মালদ্বীপ যাওয়ার খবর আগেই জেনে গেছেন সেখানে কর্মরত বাঙালিরা। তবে তাঁরা কেউ কাছে আসেননি। মিম বলেন, ‘আমার সঙ্গে কথা বলতে পারবেন কি না, সেটা ভেবে কেউ সামনে আসতে চাচ্ছিলেন না। একজনের সঙ্গে ছবি তোলার খবর অন্যদের কাছে পৌঁছে যায়। কয়েক ঘণ্টা পর দেখি আরও চার-পাঁচজন আমাদের ঘরের সামনে হাজির। তাঁদের সঙ্গে কথা বললাম, অনেকগুলো ছবি তুললাম। ছবিগুলো আমি রেখে দিয়েছি।’

প্রবাসী এক ভক্ত তুলে দিলেন সনি ও মিমের ছবি

মধুচন্দ্রিমার আনন্দের দিনগুলো রাঙিয়ে তুলেছেন মিমের ভক্তরা। তাঁদের কারও বাড়ি যশোর, ঝিনাইদহ বা কুষ্টিয়ায়। যে কদিন মিমরা সেখানে ছিলেন, ঘোরাঘুরির ফাঁকে ওই ভক্তদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। মিম বলেন, ‘মাঝে মাঝে আমরা একসঙ্গে বসে গল্প করতাম। জানতে চাইতাম, কত দিন ধরে তাঁরা সেখানে আছেন, থাকতে কেমন লাগে, পরিবারকে মিস করেন কি না, বাংলা সিনেমা দেখেন কি না—অনেক গল্প হতো।’ এই ঢালিউড অভিনেত্রী বলেন, ‘সত্যি বলতে, দেশের বাইরে থাকা এই মানুষগুলোর আমার প্রতি ভালোবাসা দেখে আমি মুগ্ধ। ভক্তরাই তো একজন তারকার প্রাণ। তাঁদের সঙ্গে পরিচিতজনের মতোই মিশেছি। তাঁদের চোখে আমি যে খুশির ঝিলিক দেখেছি, এটা আমাকে দারুণ আনন্দ দিয়েছে।’

হুরুয়েলি দ্বীপে মিমদের রিসোর্টটি ছিল সৈকত থেকে বেশ দূরে, সমুদ্রের মধ্যে। পানির ওপর দিয়ে সেখানে পৌঁছানোর জন্য ছিল কাঠের সাঁকো। মিম বলেন, ‘যেদিন আমরা চলে আসি, সেখানে কর্মরত বাঙালিরা আমাদের রিসোর্ট থেকে বিচ পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে গেছেন। তাঁদের ভালোবাসা, আন্তরিকতায় আমি ধন্য।’