‘এখানে না এলে বোঝা যাবে না, এখানকার মানুষের কী অবস্থা’

পাহাড়ি ঢল ও টানা ভারী বৃষ্টিতে সিলেট এবং সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি এখনো ভয়াবহ। এ অঞ্চলের অধিকাংশ এলাকার মানুষ পানিবন্দী। ঘরবাড়ি, ফসল, গবাদিপশু পানিতে ভেসে গেছে। এসব হারিয়ে বহু মানুষ মানবেতর জীবন যাপন  করছেন। আশ্রয় ও খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে সেখানে। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে অনেকেই এ বানভাসি এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। বিনোদন অঙ্গনের মানুষও বসে নেই। অনেকেই এ উদ্যোগে শামিল হয়েছেন। কেউ কেউ  আক্রান্ত অঞ্চলে ত্রাণ নিয়ে পৌঁছে গেছেন। সেখানে না গেলেও ব্যক্তিগতভাবে অনেকে বিভিন্নভাবে অর্থ পাঠিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। পাশাপাশি এ বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়াতে সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের আহ্বান করছেন।  

শুকনা খাবার সামগ্রী ও নগদ অর্থ নিয়ে আজ বুধবার সকালে সিলেট অঞ্চলে পৌঁছেছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির একটি দল। চিত্রনায়ক রিয়াজ, নায়িকা নিপুণ, সাইমন সাদিকসহ ৩০ সদস্যের একটি দল সিলেটের গোয়াইন ঘাট উপজেলার লক্ষণ নগর, জলুর মুখ, লেঙ্গুড়া হাওড় অঞ্চলে সকাল থেকে অসহায়দের মাঝে খাদ্যসামগ্রীসহ অর্থ বিতরণ করছেন।

বুধবার দুপুরে জলুর মুখ অঞ্চলে ত্রাণ বিতরণকালে শিল্পী সমিতির কার্যকরী কমিটির সদস্য রিয়াজ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা মঙ্গলবার রাতে ঢাকা থেকে ট্রাকে করে প্রায় ২ হাজার ৫০০ পরিবারের জন্য খাবার এনেছি। খাবার স্যালাইন, মিনারেল ওয়াটার, মোমবাতি, বিস্কুট, চিড়া, মুড়ি, গুড়, পাউডার দুধ, গ্যাসলাইটসহ বিভিন্ন ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস প্যাকেট করে বিতরণ করছি। অল্প অল্প করে অর্থও দিচ্ছি। আজ ভোর থেকে বিতরণ শুরু করেছি। প্রচুর হাহাকার এখানে। খাদ্য, পানি, ওষুধের তীব্র সংকট। এখানে বিদ্যুৎও নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটি আমাদের ক্ষুদ্র আয়োজন। এখানে সরকার, প্রশাসন, সেনাবাহিনী কাজ করছে। অনেকেই ব্যক্তি উদ্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। মানুষ এখানে সত্যিই অনেক কষ্ট করছেন।’

সমিতির সহসাধারণ সম্পাদক সাইমন সাদিক বলেন, ‘টেলিভিশন, সিনেমাসহ বিনোদন অঙ্গনের অনেকে বিভিন্নভাবে এই বানভাসিদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। চলচ্চিত্রের শিল্পী হিসেবে আমাদের একটা দায়বদ্ধতা আছে। মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের কর্তব্য। তাই শিল্পী সমিতি থেকে আমরা ছুটে এসেছি এখানে।’

আরও পড়ুন

সহায় সম্বল হারানো মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে এই চিত্রনায়ক আরও বলেন, ‘এখানে না এলে বোঝা যাবে না, এখানকার মানুষের কী অবস্থা! আমরা দুটি বড় নৌকায় ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করছি। কিন্তু এগুলো দিয়ে আর কদিন চলবে। আমাদের অনুরোধ, যে যেভাবে পারেন, অসহায়দের পাশে দাঁড়ান।’ এর আগে চিত্রনায়ক ও প্রযোজক অনন্ত জলিল সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যার্তদের জন্য ৩০ লাখ টাকা অনুদান ঘোষণা দিয়েছেন। ‘অমানুষ’ ছবির পরিচালক অনন্য মামুন ঘোষণা দিয়েছিলেন দেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহ থেকে ‘অমানুষ’ ছবির টিকিট বিক্রির অংশ থেকে সিলেট ও সুনামগঞ্জ অঞ্চলের মানুষের জন্য হাত বাড়াবে ‘অমানুষ’ সিনেমার টিম। ইতিমধ্যে দুর্গত অঞ্চলের মানুষের জন্য মোমবাতি, ম্যাচ, খাবার স্যালাইন, বিস্কুট, জুস, গুড়, চিড়া, মুড়িসহ প্রায় ৫০০ প্যাকেট শুকনা খাবার নিয়ে সুনামগঞ্জে গেছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন