কী চমক দেখাবেন ফেরদৌস ও পূর্ণিমা

মাসখানেক আগে ঘোষিত ২০২০ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্তদের তালিকা। জমকালো একটি আয়োজনের মধ্য দিয়ে নায়ক–নায়িকা এবং শিল্পী ও কলাকুশলীদের হাতে সেই পুরস্কার তুলে দেওয়া হচ্ছে। থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। কে বা কারা হবেন এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের উপস্থাপক, তা নিয়ে থাকে থাকে জল্পনাকল্পনা। অবশেষে আয়োজক সূত্রে আজ সোমবার জানা গেছে, এবারের আয়োজনও উপস্থাপনা করতে যাচ্ছেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস ও চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা।

মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে উপস্থাপক হিসেবে প্রথম দেখা যায় ফেরদৌস ও পূর্ণিমাকে
ছবি: প্রথম আলো

এ বিষয়ে ফেরদৌসের সঙ্গে কথা হলে তিনিও নিশ্চিত করে জানালেন, ‘আমরা এরই মধ্যে রিহার্সালও শুরু করেছি। পরিকল্পনা যেভাবে দেখছি, এবার তো চমক থাকবে। কী সেই চমক, জানতে চাইলে ফেরদৌস বললেন, ‘চমক দেখার জন্য তো অপেক্ষা করতে হবে। অনুষ্ঠানের দিন সবাই তা দেখতে পাবেন। এবারের অনুষ্ঠান একেবারে ভিন্নভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছে। আমার বিশ্বাস, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আমন্ত্রিত অতিথিরা অসাধারণ একটি অনুষ্ঠান উপভোগ করবেন।’

ফেরদৌস ও পূর্ণিমা

চলচ্চিত্রে ফেরদৌস ও পূর্ণিমা কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করলেও খুব বেশি সফলতা পাননি। কিন্তু উপস্থাপনায় এসে তাঁরা বাজিমাত করেন। মেরিল–প্রথম আলো পুরস্কার ২০১৬ উপস্থাপনা করে তাঁরা সাড়া ফেলেন। এরপর থেকে দেশে ও দেশের বাইরে উপস্থাপক হিসেবে তাঁরা দুজন বেশ আলোচিত হন। সেই থেকে এখন পর্যন্ত দেশের যেকোনো অনুষ্ঠান উপস্থাপনার ক্ষেত্রে আয়োজকেরা এই দুজনকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। ফেরদৌস বলেন, ‘উপস্থাপনা বেশ আনন্দ নিয়ে করছি। পূর্ণিমার সঙ্গে আমার বোঝাপড়ার ব্যাপারটাও দারুণ। মেরিল–প্রথম আলো অনুষ্ঠান উপস্থাপনার পরই আমাদের দুজনকে নিয়ে সবার আগ্রহ বাড়ে। তাই ভালো কোনো অনুষ্ঠানের উপস্থাপনার প্রস্তাব পেলেও আমরা সানন্দে গ্রহণ করি। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান দেশের মর্যাদাপূর্ণ একটি আয়োজন। চলচ্চিত্র ও গানের মানুষদের একটা মহামিলন। তাই এ ধরনের আয়োজনে উপস্থাপনার ব্যাপারটি অনেক বেশি উপভোগ করি। সবার সঙ্গে দেখাও হয়।’

পূর্ণিমা ও ফেরদৌস
সংগৃহীত

২৩ মার্চ বুধবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বসছে চলচ্চিত্রের সবচেয়ে সম্মানজনক আসর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অনুষ্ঠান-২০২০। জমকালো এ আয়োজনে অংশ নেবেন চলচ্চিত্রের বিভিন্ন সময়ের জনপ্রিয় সব তারকারা। জানা গেছে, এবারের আয়োজনে অংশ নেবেন রোজিনা, অঞ্জনা, অরুণা বিশ্বাস, ইমন, দীঘি, সাইমন, তমা মির্জা, পূজা চেরিসহ বেশ কয়েকজন চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী।

পূর্ণিমা

চলচ্চিত্রে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রতিবছর চলচ্চিত্রের শিল্পী ও কলাকুশলীদের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দেয় বাংলাদেশ সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের তালিকা প্রকাশ করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে এবার আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন আনোয়ারা বেগম ও রাইসুল ইসলাম আসাদ। নির্মাতা ও অভিনেতা গাজী রাকায়েত পরিচালিত ‘গোর’ সর্বোচ্চ ১১টি পুরস্কার জিতে নিয়েছে। আটটি পুরস্কার নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে চয়নিকা চৌধুরী পরিচালিত ‘বিশ্বসুন্দরী’। এবার যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে ‘গোর’ ও ‘বিশ্বসুন্দরী’। ২০২০ সালে ২৭টি শাখায় ২৮ জন শিল্পী ও কলাকুশলী এ পুরস্কার পেয়েছেন।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২০ এর তালিকায় রয়েছেন একদল তরুণ শিল্পী
কোলাজ : আমিনুল ইসলাম

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২০ প্রাপ্ত অন্যরা হলেন শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র সরকারি অনুদানের ছবি জান্নাতুল ফেরদৌসের ‘আড়ং’, শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র সৈয়দ আশিক রহমানের ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন ও বাংলাদেশের অভ্যুদয়’, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক গাজী রাকায়েত (গোর), শ্রেষ্ঠ অভিনেতা প্রধান চরিত্রে সিয়াম (বিশ্বসুন্দরী), শ্রেষ্ঠ প্রধান অভিনেত্রী রোজালিন দীপান্বিতা মার্টিন (গোর), শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পার্শ্বচরিত্রে ফজলুর রহমান বাবু (বিশ্বসুন্দরী), শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী পার্শ্বচরিত্রে অপর্ণা ঘোষ (গণ্ডি), শ্রেষ্ঠ অভিনেতা খল চরিত্রে মিশা সওদাগর (বীর), শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী মুগ্ধতা মোরশেদ ঋদ্ধি (গণ্ডি), শিশুশিল্পী শাখায় বিশেষ পুরস্কার মো. শাহাদৎ হোসেন বাঁধন (আড়ং)। শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক বেলাল খান (হৃদয় জুড়ে), শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালক প্রয়াত সহিদুর রহমান (বিশ্বসুন্দরী), শ্রেষ্ঠ গায়ক ইমরান মাহমুদুল (বিশ্বসুন্দরী), শ্রেষ্ঠ গায়িকা যুগ্মভাবে দিলশাদ নাহার কণা (বিশ্বসুন্দরী), সোমনূর মনির কোনাল (বীর), শ্রেষ্ঠ গীতিকার কবির বকুল (বিশ্বসুন্দরী), শ্রেষ্ঠ সুরকার ইমরান মাহমুদুল (বিশ্বসুন্দরী), শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার গাজী রাকায়েত (গোর), শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার গাজী রাকায়েত (গোর), শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা ফাখরুল আরেফীন খান (গণ্ডি), শ্রেষ্ঠ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, শ্রেষ্ঠ শিল্পনির্দেশক উত্তম কুমার গুহ (গোর), শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক যুগ্মভাবে পঙ্কজ পালিত ও মাহবুব উল্লাহ নিয়াজ (গোর), শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক কাজী সেলিম আহম্মেদ (গোর), শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা এনামতারা বেগম (গোর), শ্রেষ্ঠ মেকআপম্যান মোহাম্মদ আলী বাবুল (গোর)। শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতা হিসেবে কাউকে পুরস্কৃত করা হয়নি।
২০২০ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য জমা পড়েছিল মোট ১৪টি পূর্ণদৈর্ঘ্য, ৭টি স্বল্পদৈর্ঘ্য ও ৬টি প্রামাণ্যচিত্র।