সমস্যায় পড়লেও দেখার কেউ ছিল না
‘৭ মার্চের ভাষণ এখন বিশ্ব ঐতিহ্যের একটি অংশ। যে ভাষণকে ধরে এই সিনেমা নির্মিত হয়েছে, সেই সিনেমায় আমি সৌভাগ্যক্রমে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। কাজটির সঙ্গে থাকতে পেরে গৌরবান্বিত মনে করছি নিজেকে। কারণ, ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থেকে গেলাম।’ বলেন নাদের চৌধুরী।
ছবিতে ফলু চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাদের চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এই ছবি যেমন নিজের কাছে স্মরণীয়, তেমন ছবির শুটিংয়ের দিনগুলোও ছিল আমাদের কাছে স্মরণীয়। মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের বাহাদুরপুর ঘাটের একটি বিচ্ছিন্ন চরে কাজ করেছি। পুরো চরে দূরে দূরে দু-একটি বাড়িঘর।’
এই অভিনেতা বলেন, ‘একটি লোকেশন যে একটি সিনেমার বিষয়বস্তুকে কতটা গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে, তা এই কাজ করতে গিয়ে বুঝেছি। গল্পের সঙ্গে লোকেশনটি বেশ সমৃদ্ধ ছিল। যেখানে রেডিও ছাড়া যোগাযোগের কোনো মাধ্যম নেই। সেই রেডিওতে ৭ মার্চের ভাষণ শুনতে চান সেখানকার সংগ্রামী মানুষেরা। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধীরা শুনতে দেবেন না।’
ছবিতে নহবত মাস্টারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন রিয়াজ। তিনি বলেন, ‘এমন একটি ছবিতে কাজের সুযোগ পেয়ে আমি খুবই খুশি হয়েছি। স্বল্প সময়ে ছবির শুটিং শেষ হয়েছে। কিন্তু শুটিং করতে গিয়ে যে কষ্টা করেছি, শুধুই ছবির সাবজেক্টের কারণে কষ্ট ভুলে গেছি। চিরকাল মনে থাকবে এই শুটিংয়ের কথা।’ রিয়াজ বলেন, ‘আমি মনে করি, তরুণেরা এই ছবি দেখে দেশের প্রতি ভালোবাসায় আরও উজ্জীবিত হবে, তাদের ভাবাবে ছবিটি।’
ছবির রুপালি চরিত্রের মম বলেন, ‘আমরা মানিকগঞ্জ শহরে থাকতাম। প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে এক ঘণ্টায় নদী পার হয়ে লোকেশনে যেতাম। নদীতে কোনো সমস্যায় পড়লেও দেখার কেউ ছিল না। শুটিং দু-তিনবার করে পোশাক পরিবর্তন করতে হতো। কিন্তু পোশাক পরিবর্তনের জায়গা ছিল না, এক ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে পোশাক পরিবর্তন করতে যেতাম। কত যে কষ্ট করতে হয়েছে বলে শেষ করা যাবে না। কিন্তু সান্ত্বনা একটাই, একটি ঐতিহাসিক স্মরণীয় বিষয়ের গল্পের ছবি এটি।’
ছবিটির সংলাপ রচয়িতা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক আনন জামান বলেন, ‘খুবই স্বল্প সময় হাতে দিয়ে আমাকে কাজটি করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু এমন একটি ঐতিহাসিক বিষয়ের এই কাজটি দ্রুত করা কঠিন ছিল আমার জন্য। আমি পাঁচ রাত, পাঁচ দিন ঠিকমতো ঘুমাইনি। কখনো কখনো মোমবাতি জ্বালিয়ে সংলাপ লিখেছি।’
পরিচালক অনন্য মামুন জানান, পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ চলছে। প্রথমে যেকোনো আন্তর্জাতিক উৎসবে পাঠানো হবে ছবিটি। এরপর বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেওয়া হবে।