সমিতিতে থাকাটা জরুরি না: রোজিনা

চিত্রনায়িকা রোজিনা

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে জটিলতা চলছে। পদটি কার ভাগ্যে জুটবে—জায়েদ খান নাকি নিপুণের? ১৩ ফেব্রুয়ারি সেই মীমাংসা দেবেন আদালত। বিষয়টি নিয়ে বেশ উত্তালও চলচ্চিত্রপাড়া। এমন পরিস্থিতিতে নতুন খবর এল। মিশা-জায়েদ প্যানেলের কার্যকরী পরিষদ সদস্য পদে বিজয়ী চিত্রনায়িকা রোজিনা শিল্পী সমিতি থেকে পদত্যাগ করতে চাইছেন। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে গতকাল ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন তিনি। তবে সমিতির সদ্য নির্বাচিত সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন জানান, পদত্যাগের ব্যাপারটি তিনি জানেন না। সমিতির কাছে পাঠানো ই–মেইলের বিষয়টি কেউ তাঁকে বলেননি।
পদত্যাগপত্রে রোজিনা লিখেছেন, ‘আমার ব্যক্তিগত কাজের ব্যস্ততার জন্য সমিতির কার্যকরী পরিষদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করা আমার পক্ষে সম্ভব না বিধায় উক্ত পদ হইতে আমি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করিলাম।’

সহশিল্পীদের সঙ্গে রোজিনা

রোজিনা জানান, গতকাল শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে পদত্যাগপত্রটি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সমিতি তালাবদ্ধ থাকার কারণে সমিতির মেইলেও এটি পাঠানো হয়েছে। নির্বাচিত হওয়ার দুই সপ্তাহের মাথায় কেন তিনি পদত্যাগ করছেন? এই প্রশ্নের জবাবে রোজিনা বলেন, ‘আমি সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ঠিকঠাক সময় দিতে পারব না। গত পরশু কাঞ্চন ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা হচ্ছিল, তখন কাঞ্চন ভাই আমাকে বলছিলেন সমিতির তিনটি মিটিংয়ে কমিটির কেউ টানা অনুপস্থিত থাকলে তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। এটি গঠনতন্ত্রে আছে। ভেবে দেখলাম, আমি ঠিকঠাক সময় দিতে পারব না। কারণ, ঢাকা–লন্ডন মিলে আমার বাড়ি দুটি। দেখা গেল, আমি লন্ডনে থাকলাম, পরপর তিনটি মিটিং পড়ে গেল, আমি থাকতে পারলাম না। আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলো। তার চেয়ে সরে আসা ভালো। আর সমিতিতে থাকাটা জরুরি না।’

এর আগের কমিটিতেও আপনি কার্যকরী পরিষদের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। তখন কোনো সমস্যা হয়নি? রোজিনা বলেন, ‘তখনো আমি ওই কমিটিকে বলেছিলাম, ঠিকমতো সময় দিতে পারব না। তারা সেটা মেনে নিয়েছে। তাই আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে রাজি হয়েছিলাম। তাদের কথা ছিল, কমিটিতে জ্যেষ্ঠ তারকা শিল্পীরা থাকলে ভালো হয়।’

চিত্রনায়িকা রোজিনা
ছবি : সংগৃহীত

সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে জায়েদ খান ও নিপুণের মধ্যে জটিলতা তৈরির কারণে কি আপনি পদত্যাগ করছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে রোজিনা বলেন, ‘একদমই না। এটা আদালতের ব্যাপার। এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। আমি শিল্পী, শিল্পীর সম্মানটুকুই আমার চাওয়া। আর পদত্যাগ করে সিনেমা থেকে চলে যাচ্ছি না। সিনেমার উন্নয়নে সমিতি ডাকলেই আমি ছুটে আসব।’

পদত্যাগের চিঠি যদি সভাপতি গ্রহণ না করেন? এই প্রশ্নের উত্তরে রোজিনা বলেন, ‘গ্রহণ না করলে আমার কিছু যায় আসে না। কারণ, আমি সময় দিতে পারব না। এ জন্য থাকতে চাচ্ছি না। চিঠি পাঠিয়েছি, গ্রহণ করবে কি না, সেটি তাঁদের ব্যাপার।’
এ দিকে ই–মেইলে পদত্যাগপত্র পাঠানো প্রসঙ্গে কিছুই জানেন না বলে জানান সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, ‘ই–মেইলের পাসওয়ার্ড কার কাছে আছে, তা আমি জানি না। কারণ, নতুন কমিটি অনেক কিছুই এখনো বুঝে নেয়নি।’
তিনি আরও বলেন, সবারই ব্যক্তি স্বাধীনতা আছে। সমিতি থেকে তিনি পদত্যাগ করবেন, নাকি থাকবেন, সেটা তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার।
গত ২৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচনে ১৮৫ ভোট পেয়ে কার্যকরী পরিষদের সদস্য পদে নির্বাচিত হন চিত্রনায়িকা রোজিনা।