এটা যদি শেষ ছবিও হয়, অনুশোচনা থাকবে না
৩ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় মুক্তি পেয়েছে অতনু ঘোষের নতুন সিনেমা ‘আরও এক পৃথিবী’। সিনেমাটি দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক হয়েছে বাংলাদেশের অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণের। সেখানে তাঁর অভিনয়ও প্রশংসিত হয়েছে। সিনেমাসহ নানা প্রসঙ্গে অভিনেত্রীর সঙ্গে কথা বলেছে ‘বিনোদন’।
প্রশ্ন :
কলকাতা থেকে ফিরেছেন কবে?
৮ ফেব্রুয়ারি। কলকাতায় থাকা অবস্থায়ই শরীর খারাপ লাগছিল। এক সপ্তাহ হয়ে গেল, এখনো ঠিক হয়নি শরীর। এ কারণে বাসা থেকেও বের হইনি। আজই (বুধবার সন্ধ্যা) প্রথম ডাক্তারের কাছে যাচ্ছি।
প্রশ্ন :
ছবিটি মুক্তির আগে-পরে ২১ দিন প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। টানা পরিশ্রমেই কি এমন হলো?
সেটাই মনে হচ্ছে। গত ১৯ জানুয়ারি গিয়েছিলাম, ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টানা প্রচারে ছিলাম। সকালে বের হতাম, ফিরতাম অনেক রাতে। মাঝখানে দুই–এক দিন প্রচারের বিরতি থাকলেও কেনাকাটা বা ঘোরাঘুরি করতাম। একদমই বিশ্রাম হয়নি।
প্রশ্ন :
ছবি মুক্তির পরপরই ফেসবুক পেজে নিজের নামের আগে ‘চিত্রনায়িকা’ লিখেছেন। চিত্রনায়িকা শুনতে কেমন লাগছে?
মজা করেই নামের আগে ‘চিত্রনায়িকা’ লিখেছিলাম। প্রেক্ষাগৃহে বসে নিজেকে যখন বড় পর্দায় দেখছিলাম, মনে হচ্ছিল দিস ইজ দ্য বিগ মোমেন্ট ফর মি। ওই জন্যই তখন পোস্টটি করেছিলাম। দেশে ফিরে এসে এখন আর চিত্রনায়িকা–চিত্রনায়িকা ভাব মনে হচ্ছে না। মনে হচ্ছে সেই আগের ফারিণই—যেই লাউ, সেই কদু। অনেক দিন কলকাতায় ছিলাম, একটা সিনেমা–সিনেমা পরিবেশে সময় কেটেছে। এসব কারণে নিজের মধ্যে চিত্রনায়িকা–চিত্রনায়িকা একটা ভাব তৈরি হয়েছিল। হা হা হা....!
প্রশ্ন :
নতুন হওয়া সত্ত্বেও এই যে কলকাতায় সবাই আপনাকে বিশেষভাবে সম্মান করেছে...
ওখানকার চলচ্চিত্রের মানুষদের কাছে আলাদা গুরুত্ব পেয়েছি। বিশেষ করে গণমাধ্যমগুলো আমাকে ভালোভাবেই তুলে ধরেছে। কেউ আমাকে নবাগত হিসেবে দেখেননি। আমার ওটিটির কিছু কাজ তাঁরা আগেই দেখেছেন। ‘লেডিস অ্যান্ড জেন্টেলমেন’, ‘কারাগার’–এর কথা বলেছেন, আমার অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন। সামনাসামনি নতুন হলেও আমার কাজের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক পুরোনো।
প্রশ্ন :
ছবিটিতে সংলাপের চেয়ে অভিব্যক্তি, অঙ্গভঙ্গি দিয়েই অভিনয় বেশি। ব্যাপারটি কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল?
ছবিতে আমার সংলাপ খুব কম। ভয়ে ছিলাম, সংলাপ ছাড়া অভিব্যক্তির কারণে আমার চরিত্রটি দর্শকের কাছে বিরক্তিকর লাগবে কি না। মনে হবে কি না, আন্ডার অ্যাকটিং করছি। আন্ডার অ্যাকটিং খারাপ, ওভার অ্যাকটিংও খারাপ। যাঁরাই ছবিটি দেখেছেন, তাঁদের কাছে আমি শতভাগ উতরে গেছি। আমি নন্দন, সিনোপলিস, আইনক্সে সিনেমাটি দেখেছি। একটা মানুষও আমার উচ্চারণ, অভিনয় নিয়ে নেতিবাচক বলেননি। সবাই বলেছেন, ‘তুমি এত সুন্দর অভিনয় করেছ।’ বড় বড় গণমাধ্যমও প্রশংসা করেছে আমার অভিনয়ের।
প্রশ্ন :
সিনেমা মুক্তির আগে যতটা প্রত্যাশা করেছিলেন, প্রাপ্তি কতটুকু?
একটা ছবির ব্যবসা অনেক কিছুর ওপরই নির্ভর করে। সেটি নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। আমার কাজ নিয়ে বলতে পারি, যাঁরা ছবিটি দেখেছেন, তাঁরা আমার কাজে খুশি। সেই দিক থেকে বলতে পারি, প্রত্যাশার চেয়ে বেশিই পেয়েছি। আমি মনে করি, সিনেমায় আমার জন্য এটি ভালো অভিষেক। ছবিটি যদি আমার শেষ ছবিও হয়, তাহলেও কোনো অনুশোচনা থাকবে না।
প্রশ্ন :
শোনা যাচ্ছে কলকাতায় আরও ছবিতে কাজ করবেন...
ভালো কাজ হলে অবশ্যই করব। তবে ধীরে ধীরে। একটি করলাম। হয়তো আরও কাজ হবে। সেটা এখনই বলা মুশকিল। তবে চলতি বছরই আরেকটি কাজের ঘোষণা আসতে পারে। মিটিংও হয়েছে।
প্রশ্ন :
প্রায় তিন বছর পর ভালোবাসা দিবসে আপনার নাটক প্রচারিত হয়নি। খারাপ লাগেনি?
একটু তো খারাপ লাগেই। ভক্ত-দর্শকেরাও জানাচ্ছেন, তাঁদের মন খারাপ। কিছু পেতে হলে তো কিছু ছাড় দিতেই হয়। নতুন জায়গায় গিয়েছি, সেটিও দর্শকের জন্যই। এই ভালোবাসা দিবসে দুটি কাজ যাওয়ার কথা ছিল। অল্প কিছু শুটিং বাকি ছিল। কলকাতা থেকে ফিরে শেষ করার কথা ছিল। অসুস্থতার কারণে সম্ভব হয়নি।