যাঁরা নানা চাপে কথা বলেন না ‘আলী’ তাঁদের উৎসর্গ করছি : আদনান আল রাজীব
গতকাল শনিবার রাতে কানের স্বল্পদৈর্ঘ্য শাখার পুরস্কার ঘোষণার পর আলাদা করে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে অংশ নেন বাংলাদেশের নির্মাতা আদনান আল রাজীব। বাংলাদেশের এই নির্মাতা ‘আলী’ স্বল্পদৈর্ঘ্যের জন্য স্পেশাল মেনশন স্বীকৃতি পেয়েছেন। তাঁকে দিয়েই শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব, ‘আপনাকে দিয়েই শুরু করি। যদি কিছু মনে না করেন, এই যে স্পেশাল মেনশন জিতলেন, এর অর্থ আপনার কাছে কী?’
উপস্থাপকের এমন প্রশ্নে আদনান বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য অবশ্যই বিশেষ। নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জন্যও। আপনারা জানেন, প্রথমবারের মতো আমাদের জন্য এটাই অনেক বড় একটা অর্জন। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ একটা অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় মানুষ ভালোভাবে একটু নিশ্বাস নেওয়া সুযোগ খুঁজছে। এই পুরস্কারটি জিতে আমরা কিছুটা হলেও সেটাই দিতে পেরেছি। এটা দেশের মানুষের মাঝে একটা আশার সঞ্চার যেমন ঘটাবে, তেমনি বাংলাদেশ নিয়ে একটা ইতিবাচক ধারণাও তৈরি করবে।’
‘প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ এমন একটি স্বীকৃতি পেল, এতে আপনার প্রতিক্রিয়া কী’—এমন প্রশ্ন শুনে লাজুক ভঙ্গিতে হাসতে থাকেন আদনান। তিনি বলেন, ‘এটা দারুণ ব্যাপার। এমন কিছু অর্জন করব, এটা কখনোই ভাবিনি। আমি শুধু শৈল্পিক মাধ্যমে গল্পটি বলতে চেয়েছিলাম, যেটা আমি সব সময়ই চেষ্টা করি। কী বলব আসলে বুঝতে পারছি না। আমি এটা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। শুধু এটাই বলব, এটা আমার জীবনের জন্য অনেক বড় একটা অর্জন। এমনকি দেশের জন্যও।’
সাংবাদিকদের নানা রকম প্রশ্নের উত্তর দিতে হয় এই নির্মাতাকে। সেসব প্রশ্নে উঠে আসে সিনেমাটি কাদের উৎসর্গ করতে চান, ফিলিপাইনের সহ-প্রযোজনা ছাড়া সিনেমাটি নির্মাণ সম্ভব ছিল কি না—এমন নানান প্রসঙ্গ। বাংলাদেশের এই পরিচালক বলেন, ‘যাঁরা চুপ থাকেন, যাঁরা নানা চাপে কথা বলেন না “আলী” তাঁদের উৎসর্গ করছি। আমাদের সিনেমাটি মূলত কণ্ঠস্বর জাগ্রত করা নিয়েই। যার মধ্য দিয়ে ভাঙা হয় নানা বাধা–বিপত্তি, মানুষের আত্মাকে কথা বলতে উৎসাহ জোগায়। প্রশ্ন করতে শেখায়, “তুমি কে?” তাদের কথাই উঠে এসেছে আমার গল্পে।’
আরেকটি প্রশ্নে আদনান জানান, ফিলিপাইনকে সিনেমাটির জন্য শুরু থেকেই তাঁদের দরকার ছিল। তিনি সহ-প্রযোজনা ছাড়াও সিনেমার চিত্রনাট্য ও পোস্টের কাজ সেখানেই করিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে রাজীব বলেন, ‘ফিলিপাইনের যাঁরা আমার সিনেমাটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাঁরা সবাই আমার বন্ধু। আপনারা জানেন, বাংলাদেশে পোস্টের কাজের ভালো সুযোগ নেই, যে কারণে একসঙ্গে আমরা কাজটি করেছি। তাঁদের ছাড়া এটা অসম্ভব ছিল।’ স্বল্পদৈর্ঘ্যটিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন আল আমিন।