প্রযোজক ও পরিচালককে প্রতারক উল্লেখ করে নায়িকার স্ট্যাটাস

রাজ রীপা
ছবি : সংগৃহীত

‘ব্যাচেলর ইন ট্রিপ’ নামে নতুন ছবিতে চুক্তি করে সাইনিং মানি না পেয়ে ওই ছবির প্রযোজক ও পরিচালককে প্রতারক বলে মন্তব্য করলেন নবাগত নায়িকা রাজ রীপা। অন্যদিকে নায়িকা রাজ রীপার ‘প্রতারক’ শব্দটি ব্যবহার করা ঠিক হয়নি মন্তব্য করে ছবির প্রযোজক।

মঙ্গলবার ছবির প্রযোজক, পরিচালকের ফেসবুক আইডির স্ক্রিনশট তাঁর ফেসবুকে পোস্ট করে একটি লম্বা স্ট্যাটাস দিয়েছেন রীপা। সেখানে দুজনের নাম উল্লেখ করে তাঁদের প্রতারণা থেকে সবাইকে সাবধান হতে বলেছেন। সেই সঙ্গে তাঁকে ধরে এই সিনেমার আর কোনো খবর না ছাপানোর জন্য অনুরোধ করেছেন সংবাদকর্মীদের কাছে। তাঁর কথা, প্রযোজক-পরিচালকের কমিটমেন্ট ঠিক না থাকার কারণে এই ছবিতে কাজ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

‘ব্যাচেলর ইন ট্রিপ’ ছবির চুক্তি স্বাক্ষরের সময় প্রযোজক মামুনুর ইসলামের সেলফিতে নাসিম সাহনিক ও রাজ রীপা
ছবি : সংগৃহীত

স্ট্যাটাসে এক অংশে রাজ রীপা  লিখেছেন ‘আমি যে রিসেন্ট নতুন ফিল্মটি সাইন করেছি, ওই সিনেমা আর করব না। এটা আমার সিদ্ধান্ত।’ তিনি জানিয়েছেন, দুদিন আগেই এই পরিচালককে জানিয়েছেন, সিনেমাটি তিনি করছেন না। লিখেছেন, ‘গত ২৫ নভেম্বর আমি ছবিতে সাইন করি। সাইনিংয়ের ত্রিশ ভাগ টাকা ওই দিনই  পরিশোধ করার কথা বলে ফেসবুকে তাড়াতাড়ি আমাকে দিয়ে সাইনিংয়ের ছবি পোস্ট করান তাঁরা। সিনেমার সাইনিং হলো, কিন্তু সাইনিং মানি আর আমার পকেটে আসল না।’

রাজ রীপা
ছবি : সংগৃহীত

রাজ রীপা প্রথম আলোকে বলেন,  ‘ওই দিন আমি সাইনিং মানি চাইলে তাঁরা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর দিতে বলেন। সমস্যা থাকায় তাঁদের নগদ টাকা দিতে বলি। পরে তাঁরা আমার বিকাশ নম্বর নিয়ে ওই রাতেই টাকা পাঠানোর কথা বলেন। না পাঠালে আমি যোগাযোগ করি। পরদিন শুক্রবার দুপুরের পর পাঠাবেন বলে তাঁরা আবার জানান। এরপর চার দিন হয়ে গেল, আর পাঠাননি। তাই এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এই ছবি আর করব না। ’
রীপা আরও বলেন, ‘আমি কাজটি করতে চাইনি। কিন্তু পরিচালক বুঝিয়ে-শুনিয়ে চুপ রাখলেন আমাকে। ছবিতে সাইনিং করলাম। করার পর কমিটমেন্ট রাখলেন না। সাইনিং মানি নিয়ে প্রযোজক ও পরিচালক দুজনই আমার সঙ্গে স্রেফ প্রতারণা করেছেন।’
রীপা আরও লিখেছেন, ‘আপনারা একটু সাবধান থাকবেন, নয়তো আমার মতো বোকা হয়ে যাবেন।’

রাজ রীপা
ছবি : সংগৃহীত

সাইনিং মানি না দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে পরিচালক নাসিম সাহনিক বলেন, ‘সাইনিংয়ের দিন ১০ হাজার টাকা তাঁকে দিতে চেয়েছিলাম আমরা, তিনি নেননি। সাইনিংয়ের পুরো টাকাই তিনি চেয়েছেন। ওই সময় পুরো টাকা কাছে না থাকার কারণে বিকাশে পরে পাঠানোর কথা বলেছিলাম। একটু দেরি হওয়াতে ঝামেলা পাকিয়ে ফেলেন নায়িকা। পরে তো তিনি ফেসবুকে এই ঘটনা ঘটিয়ে দিলেন। স্ট্যাটাস দেওয়ার আগে আমি তাঁকে ভালোভাবে বুঝিয়েছিলাম। কাজটি আমরা একসঙ্গে করব, এ কারণে শান্ত থাকতে বলেছিলাম তাঁকে। কিন্তু তিনি তো শান্ত থাকলেন না।’

স্ট্যাটাসে রাজ রীপার ‘প্রতারক’ শব্দটি ব্যবহার করা ঠিক হয়নি মন্তব্য করে ছবির প্রযোজক মামুনুর ইসলাম বলেন, ‘সাইনিংয়ের সময় কথা হয়েছিল, শুটিং, ডাবিং শেষ করা পর্যন্ত তাঁকে চার ভাগে পারিশ্রমিক দেওয়া হবে। আমি ওই দিন ১০ হাজার টাকা সাইনিং মানি দিতে চেয়েছিলাম। তিনি ৩০ হাজার টাকা দাবি করেছিলেন। আমি রাজি ছিলাম না। পরে পরিচালকের মধ্যস্থতায় বিকাশে টাকা পাঠানোর কথা ছিল। ওই দিন রাতে দেরি করে বাসায় ফেরার কারণে আর সম্ভব হয়নি। পরদিন শুক্রবার ছিল, দেরি করে ঘুম থেকে উঠে দেখি, রাজ রীপার অনেকগুলো এসএমএস। যেগুলো হুমকির পর্যায়ে পড়ে। আমি চিন্তা করে দেখলাম, ছবি শুরু না হতেই এ ধরনের আচরণ। ছবির শুটিং শুরু হলে তো তাঁকে নিয়ে কাজই তুলে আনতে পারব না। ঘুম থেকে উঠে তাঁর এসএমএসের ভাষা দেখে ওই দিন আর টাকা পাঠাইনি তাঁকে। কারণ, বিষয়টি নিয়ে তিনি খুব বাড়াবাড়ি করেছেন।’